গভীর নিম্নচাপের বাউন্সারে ধাক্কা খেল শীত
দেরিতে হলেও সব বাধা ঠেলে বড়দিনের আগে শীত হাজির হয়েছিল স্বমেজাজে। এতটাই যে, শীতের সৌজন্যে বিলেত-বিলাস শুরু হয়ে গিয়েছিল কলকাতায়। কিন্তু ফের শীতের সামনে বাধার প্রাচীর তুলে দিল বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপ।
শীতের পথে এ বার প্রথম থেকে কাঁটা ছড়ানো ছিলই। কখনও বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত তো কখনও বঙ্গোপসাগরের উপরে নিম্নচাপ। আবার কখনও মধ্য ভারতের উচ্চচাপ বলয় তো কখনও বিহারের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। সেই সব বাউন্সার সামলে উইকেটে শীতকে যখন জমজমাট দেখাচ্ছে, ঠিক তখনই ফের গভীর নিম্নচাপের ভ্রুকুটি। তবে হাওয়া অফিসের আশ্বাস, আপাতত কিছুটা সামলে খেলতে হলেও শীত আবার চার-ছয়ের স্ট্রোকে ফিরবেই।
আসলে বায়ুপ্রবাহের আকস্মিক পরিবর্তন গত দু’দিন ধরেই দক্ষিণবঙ্গের কড়া শীতকে কিছুটা ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিল। সোমবার আবহাওয়া দফতর জানায়, আন্দামান থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ। শক্তি বাড়িয়ে সেই গভীর নিম্নচাপ অন্ধ্রপ্রদেশ-চেন্নাই উপকূলের দিকে সরে যেতে পারে মনে করা হচ্ছে। তার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের বায়ুপ্রবাহের পরিবর্তন ঘটবে। সমুদ্র থেকে আসা হাওয়া প্রতিরোধ গড়ে তুলবে উত্তর ভারতের ঠান্ডা বাতাসের সামনে। তার ফলে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে সাময়িক ভাবে শীত কমে যেতে পারে।
তা হলে শীতকে কবে আবার নিজ মহিমায় দেখা যাবে?
আবহবিদেরা জানিয়েছেন, ওই গভীর নিম্নচাপ যত তাড়াতাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর দিকে সরে যাবে, তত তাড়াতাড়ি দক্ষিণবঙ্গে ফিরে আসবে শীতের দাপট।
এ বার জমিয়ে ঠান্ডা পড়েছিল ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে। কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। কিন্তু বড়দিনের আগে থেকেই তাপমাত্রা ফের বাড়ছে। কিছুটা হলেও দুর্বল হয়ে পড়েছে উত্তর ভারত থেকে আসা ঠান্ডা হাওয়া। রবিবার, বড়দিনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি সময়ের স্বাভাবিকের তুলনায় দু’ডিগ্রি কম। কিন্তু এ বারের শীতের প্রকৃতি বিচার করলে সেটা কিছু বেশিই। এর কারণ কী?
আবহবিদেরা রবিবার বলেছিলেন, বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তার প্রভাবে উত্তুরে হাওয়া কমজোরি হয়ে পড়ছিল। সামান্য হলেও তাপমাত্রা বেড়েছে। আবহাওয়া দফতর জানায়, বঙ্গোপসাগরের সেই নিম্নচাপটি এ দিন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। যার ফলে সোমবার থেকে ঠান্ডা হাওয়ার জোর বেশ কিছুটা কমে গিয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। তবে তা থেকে দক্ষিণবঙ্গে দুর্যোগের কোনও আশঙ্কা নেই। উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে আকাশ মেঘলা হবে, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়বে।” ঘূর্ণিঝড়ের এই পরোক্ষ প্রকোপ ছাড়া গভীর নিম্নচাপের আর কোনও প্রভাব দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ায় পড়বে না বলেই জানাচ্ছেন আবহবিদেরা।
দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, ওই গভীর নিম্নচাপটি যে-ভাবে তার কেন্দ্রের দিকে বাতাস টেনে নিচ্ছে, তাতে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত ওই গভীর নিম্নচাপের চার দিকে বায়ুপ্রবাহের যা অবস্থা, তার বদল না-হলে ওড়িশা বা পশ্চিমবঙ্গের দিকে ঘূর্ণিঝড়ের আসার আশঙ্কা নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.