নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
ঢাক পিটিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি হল। সোমবার তাঁরা ঘুরে দেখলেন আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের পরিস্থিতি। বেশ কিছু গলদও চোখে পড়ল। অথচ, পর দিনই সব চুপচাপ। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার কাজ এক দিন পরেই বন্ধ আরামবাগে। অথচ, এখানকার বিভিন্ন লজ, মার্কেট কমপ্লেক্সগুলিতে অগ্নিকাণ্ডে বিপর্যয়ের আশঙ্কা আছে বলে দমকল সূত্রেই জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি পুরনো বেশ কিছু বিপজ্জনক বাড়িও আছে এই শহরে। মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “নার্সিংহোম-সহ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে দ্রুত সমীক্ষা চালানোর কথা বলা হয়েছে। প্রথম দফায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির কাজ শেষ শেষ হলে অন্যান্য ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হবে।” কিন্তু সোমবার কাজ শুরু করেও মঙ্গলবার কমিটির সদস্যেরা কেউ কোথাও তদন্তে গেলেন না কেন? সদুত্তর নেই মহকুমাশাসকের কাছে। সমীক্ষার কাজ দ্রুত শেষ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে আছে দমকল বিভাগও। দফতরের আরামবাগ স্টেশন অফিসার প্রবীরকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের লোকবল কম। দফতরের দৈনিক কর্তব্য সেরে তদন্তের কাজ করতে হচ্ছে। গাড়ি কম, তেল কম, গাড়ির চালকেরও অভাব।” পরিকাঠামোর এই হাল নিয়ে রাজ্যস্তরের কর্তারা এবং স্থানীয় প্রশাসন ওয়াকিবহাল বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরামবাগ শহরে নার্সিংহোম ১৬টি। লজ ১২টি। মার্কেট কমপ্লেক্স ৪টি। এ ছাড়াও, সব্জি বাজার দু’টি। সাধারণ মানুষের দাবি, আগুন নেভানোর ব্যবস্থা এখানে যথেষ্ট আশঙ্কাজনক। সংশ্লিষ্ট আইন মানেন না প্রায় কেউই। বেশ কিছু নার্সিংহোম, লজ, মার্কেট কমপ্লেক্স এমনকী আরামবাগের বাসস্ট্যান্ডটিও দমকল দফতরের মাথাব্যথার কারণ। আগুন-সংক্রান্ত অনুমতি কে কখন নিয়েছে বা আদৌ নিয়েছে কিনা, তার কোনও হদিস নেই। ক’দিন আগেই বাসস্ট্যান্ডে কয়েকটি কাগজে আগুন ধরে যায়। তা থেকেই এত দ্রুত ধোঁয়া ও আগুন ছড়িয়ে পড়ে, আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মানুষ। বড়সড় আগুন ধরলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা সত্যিই চিন্তার বিষয়। পুরপ্রধান গোপাল কচ বলেন, “সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের অনুমতিপত্র দেখতে চেয়ে নতুন করে সর্বত্র নোটিস পাঠানো হয়েছে।” পুরপ্রধান জানান, বেশ কিছু পুরনো বাড়ি খালি করে দিতে একাধিক বার নোটিস করা হয়েছে। কিন্তু ভাড়াটেরা উঠতে না চাওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। ওই বাড়িগুলিতে বিভিন্ন সরকারি অফিস চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেগুলি খালি করতে চাপ দিতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিষয়টি মহকুমা প্রশাসন ও পুলিশকে জানিয়ে দেওয়া হবে। |