নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
পাঁচ বছর আগে যখন প্রথম স্কুল চালু হল তখন পড়ুয়া মেলাই দায় হয়ে পড়েছিল। পিছিয়ে পড়া এলাকার বাসিন্দাদের ছেলেমেয়েরা যাতে স্কুলে আসে তাই নিখরচায় পড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাতে সমস্যা মেটাতে পারলেন না ডাবগ্রাম ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ফকদই বাড়ির বঙ্কিমনগর এলাকায় ওই স্কুল বিমল স্মৃতি বিদ্যামন্দির কর্তৃপক্ষ। ফল হল বিপরীত। ২১ জন পড়ুয়া ভর্তি হলেও তাদের অধিকাংশ ক্লাস করতে এল না। পরের বছর ১০ টাকা ফি দিয়ে ৬৫ জন ভর্তি হল। তাতেও ৮০ শতাংশ পড়ুয়া চলে যায়। এমন পরিস্থিতি থেকেও ক্রমে ঘুরে দাঁড়িয়েছে স্কুলটি। এখন নার্সারি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ২৬৮ জন পড়ুয়া। প্রাথমিক স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করানোর ক্ষেত্রে এলাকার বাসিন্দাদের এখন প্রথম পছন্দ এই স্কুল। পরবর্তীতে উঁচু ক্লাসে পড়াশোনার জন্য শহরে নামি স্কুলগুলিতেও সুযোগ করে নিচ্ছে এখানকার পড়ুয়ারা অনেকেই। বর্তমানে পুরসভার পূর্তবিভাগের মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল তাঁর বাবা বিমলবাবুর স্মৃতিতে স্কুলটি চালু করেছিলেন ২০০৬ সালের ৫ ডিসেম্বর। বেসরকারি উদ্যোগে এই স্কুল এ বার তা পাঁচ বছরে পড়ল। |
উদ্বোধনে গৌতম দেব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
সোমবার স্কুলের প্রতিষ্ঠা দিবসে স্কুলের পাকা ভবনের উদ্বোধন করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। গৌতমবাবু বলেন, “শুরু থেকেই আমি এই স্কুলের ব্যাপারে জানি। প্রতি বছরই এখানে আসি। আজ স্কুলের যে উন্নয়ন হয়েছে তার পিছনে প্রধান শিক্ষক থেকে সহশিক্ষিকা, কর্মী এবং কর্মকর্তাদের অবদান অনেক। তাদের আন্তরিকতার জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। পড়ুয়ার সংখ্যা যে হারে বাড়ছে তাতে আরও ২ টি ক্লাস ঘরের প্রয়োজন বলে জানতে পেরেছি। ধীরে ধীরে তা হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তাঁদের সাফল্য কামনা করি।” স্কুলে প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক কৃষ্ণবাবু জানান, স্কুল গড়তে প্রথমে ১৮ কাঠা জমি কেনেন। পরে লাগোয়া আরও কিছু জমি কেনা হয়। দু’টি ছোট টিনের চালা ঘর নিয়ে যাত্রা শুরু করে স্কুলের। সূর্যসেন প্রাথমিক স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার দাসকে এখানে প্রধান শিক্ষকের পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বস্তুত স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রদীপবাবুর আন্তরিকতার প্রশংসা করেন কৃষ্ণবাবু। স্কুলের নিয়মিত দেখভাল করেন কৃষ্ণবাবু নিজেও। কোথায় কী সমস্যা। কী ভাবে তা মিটবে সে ব্যাপারে তিনি সব সমতেই সচেষ্ট। এমনকী তাঁর স্ত্রী রূপা দেবী এবং ভাই বাবলুবাবুও তাঁকে সহায়তা করেন। পুরসভার কাজকর্মের ব্যস্ততার ফাঁকেও নিয়মিত স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করেন কৃষ্ণবাবু। স্কুলের পড়াশোনার মান ভাল দেখে সরকারি স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি না করিয়ে এই স্কুলেই ভর্তি করিয়েছেন সান্তনা বর্মন। এমনকী পরিবারের অন্যান্য শিশুদেরও তাঁরা এই স্কুলে ভর্তি করান। অপর অভিভাবক লিপি রায়, নমিতা রায়দের কথায় স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার উপর শিক্ষিকারা সব সময়ই নজর রাখেন। কৃষ্ণবাবু বলেন, “এলাকার কচিকাঁচাদের পড়াশোনার একটা জায়গা হয়েছে, এখানে পড়াশোনা করতে বাসিন্দারা তাঁদের ছেলেমেয়েদের পাঠাতে উৎসাহী এটাই তো বড় পাওনা। শিক্ষক, শিক্ষিকা, আর যাঁরা রয়েছেন সকলের চেষ্টাতেই এটা সম্ভব হয়েছে।” |