‘দরকারে আবার সেঞ্চুরি করব’
অবনমনের ভূত ঘাড়ে নিয়েই আজ ইডেনে নামছে বাংলা
ঘাসে হাঁটু মুড়ে বসে তিনি। হাতে ব্যাট। চারপাশে গোল হয়ে ক্যাচিং পজিশনে দাঁড়িয়ে অভিষেক ঝুনঝুনওয়ালা, অরিন্দম দাসরা। ‘ক্লোজ ইন’ ক্যাচিং চলছে...।
একটু পর উঠে পড়লেন। হাঁটা দিলেন ইডেনের সেন্টার উইকেট বরাবর। যার পাশেই সবুজ কার্পেটে মোড়া আরও একটা বাইশ গজ। বাংলা বনাম তামিলনাড়ুর বাইশ গজ। কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটু কথা হল। ঘাসে কিছুটা কাটছাঁট। দেখেশুনে আবার হাত তুলে ডাক অভিষেকদের।
...এ বার ডান পা-টা শূন্যে উঠছে কিছুটা। ব্যাট ছুঁয়ে বল উড়ছে কখনও ফার্স্ট স্লিপ, কখনও সেকেন্ড স্লিপের দিকে তাক করে। ‘মিস’ করলে বকাঝকা নেই, কিন্তু কঠিন ক্যাচ ধরলে ‘সাবাস’ বলে তারিফ আছে।
ভদ্রলোক যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সেটা আন্দাজ করা কঠিন নয়। কিন্তু ক্যাচিং প্র্যাক্টিসে তিনি কেন? পিচ দেখবেন সেটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু তা বলে ক্যাচিং প্র্যাক্টিসও দিতে হবে? কোচ ডব্লিউ ভি রামন কোথায়?
কোচ ছিলেন আশেপাশে। অবনমনের ভূত ঘাড়ে চেপে বসার কারণেই কি না কে জানে, সোমবার বাড়তি দায়িত্ব নিতে দেখা গেল সৌরভকে। উপায়ও তো নেই। তিন ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে বাংলা এখন লিগ তালিকায় লাস্ট বয়। বাকি তিন ম্যাচ থেকে যদি গোটা সাতেক পয়েন্ট না ওঠে, তা হলে অবনমনের অন্ধকার সুড়ঙ্গে নেমে পড়া কেউ আটকাতে পারবে না। তার উপর যুদ্ধটা হচ্ছে এমন একটা টিমের বিরুদ্ধে যারা আদতে ছোটখাটো ‘টিম ইন্ডিয়া’।
মিশে গিয়েছে পিচ-আউটফিল্ড। এমনটাই নাকি চাইছেন বাংলা অধিনায়ক। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
মুরলী বিজয়, অভিনব মুকুন্দ, দীনেশ কার্তিক, এস বদ্রীনাথ, লক্ষ্মীপতি বালাজিএ বলে আমায় দেখ। ও বলে আমায়। সাত টিমের গ্রুপ থেকে শেষ আটে যাবে তিনটে দল। তিন ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে তামিলনাড়ু চারে। এই টিমের বিরুদ্ধে আটকানো যাবে অবনমনের পয়লা ধাপ?
সৌরভ আক্ষেপ করছেন। ক্লাবহাউসের একতলায় দাঁড়িয়ে এ দিন বলছিলেন, “হরিয়ানা ম্যাচ থেকে পুরো পয়েন্ট পাওয়া উচিত ছিল। দুর্ভাগ্যের যে, সেটা হল না। তবে পুরো পয়েন্ট পেলে শেষ দিকে অনেক কিছু পাল্টাতে পারে।” তামিলনাড়ু-বধের নীল নকশাও ছকে ফেলা হয়েছে। ব্যাপারটা অনেকটা এ রকম:
১) থাকুক ‘গ্রিন টপ’ উইকেট। যাতে ‘অ্যাডভান্টেজ’ তামিলনাড়ু বলা না যায়। বাংলা অধিনায়ক পিচ দেখে বেশ খুশি। তাঁর মতে, পাঁচশো-ছ’শোর উইকেট বানিয়ে লাভ নেই। ফলাফল হয়, এমন পিচ চাই। ইডেনের এই উইকেটে যা আছে।
২) তামিলনাড়ুর ‘ফ্যাব ফোর’-এর পাল্টা হোক বাংলার ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’। সবুজ পিচে বিজয়-বদ্রীনাথ-মুকুন্দ-কার্তিকের জবাব বাংলার পেস-ব্যাটারি। হরিয়ানা ম্যাচে বারো উইকেট নেওয়া অশোক দিন্দাকে বিশ্রাম দেওয়া হল পুরো দু’দিন। সামি আহমেদ যথারীতি আগুনে মেজাজে। আর রণদেব বসু যে সত্যিই ফর্মে ফিরছেন, সেটা সোমবার নেটে অধিনায়কের স্টাম্প ছিটকে দেওয়া থেকে স্পষ্ট। সৌরভ বলেও গেলেন, “গত ম্যাচ থেকেই কিন্তু ভাল বল করছে রণ।”
৩) তামিলনাড়ু টপ অর্ডারের প্রবণতা হল চালিয়ে খেলা। ঠিক হয়েছে, বিজয়দের চালাতে দেওয়া হবে। তাতে উইকেট আসার সম্ভাবনা বেশি।
আর টিম? বদল প্রায় নেই বললেই চলে। ঋদ্ধিমান সাহা যেহেতু নেই, তাই তাঁর জায়গায় শ্রীবৎস গোস্বামী। কিন্তু এই যে ঋদ্ধি নেই, মনোজ নেই, অসুবিধা হবে না? সৌরভ পাল্টা বললেন, “না থাকাটাই তো ভাল। আর কত দিন রঞ্জি খেলবে? এ বার ভারতের হয়ে খেলুক।”
তা হলে? ব্যাটিংয়ের হাল ধরতে কাকে পাওয়া যাবে আর?
“কেন? হরিয়ানায় আমি সেঞ্চুরি করেছি। এখানে অন্য কেউ করবে। আর দরকার পড়লে আবার সেঞ্চুরি করব,” উত্তর দিয়ে গাড়ির দিকে হাঁটা দিলেন সৌরভ।
মুখে যা-ই বলুন, অদৃশ্য লিখনটা বোধহয় সৌরভও পড়তে পারছেন। দোসর হিসেবে কয়েকজন পেতে পারেন শুধু। কিন্তু অবনমন রোখার যুদ্ধে তিনি সেই একা।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.