বাসস্ট্যান্ড সম্প্রসারণ নিয়ে দীর্ঘদিনের জট কাটতে চলেছে বাগনানে। আটের দশকের গোড়ায় এখানে বাসস্ট্যান্ডটি তৈরি হয়েছিল। পরবর্তীকালে গাড়ির সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। সেই কারণে বাসস্ট্যান্ডটি সম্প্রসারণের প্রস্তাব রাজ্য পরিবহণ দফতরের কাছে পাঠায় হাওড়া জেলা প্রশাসন। বর্তমানে বাসস্ট্যান্ডটি রয়েছে বাগনান-১ পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে। জেলা প্রশাসনের আবেদনের ভিত্তিতে পঞ্চায়েত সমিতিকে বছর দুয়েক আগে রাজ্য পরিবহণ দফতর জানায়, বাসস্ট্যান্ডটি সম্প্রসারণ করতে তারা প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা দিতে রাজি আছে। এর জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট এবং জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র তাদের কাছে পাঠাতে বলা হয়। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডের জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র সমিতির কাছে না-থাকায় তা রাজ্য পরিবহণ দফতরে পাঠানো যায়নি। ফলে প্রকল্পটি থমকে যায়। এখন পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, জমি সংক্রান্ত সমস্যা কাটতে চলেছে। শীঘ্রই পরিবহণ দফতরের কাছে ওই বাসস্ট্যান্ড সম্প্রসারণের জন্য টাকা চেয়ে ফের আবেদন করা হবে। |
পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রের খবর, যে জমির উপরে বাসস্ট্যান্ডটি রয়েছে সেটি ছিল রেলের মালিকানাধীন। রেলের সঙ্গে চুক্তি করেই বাসস্ট্যান্ডটি তৈরি হয়েছিল বলে সমিতির তরফ থেকে জানানো হয়। কিন্তু যে চুক্তির ভিত্তিতে রেলের কাছ থেকে তৎকালীন রাজ্য সরকার জমিটি নিয়েছিল সেই সংক্রান্ত কোনও কাগজপত্র সমিতির হেফাজতে ছিল না। রেলের তরফ থেকেও প্রথমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাদের যে চুক্তি হয়েছিল সেই সংক্রান্ত কাগজপত্র তারাও খুঁজে পাচ্ছে না। এই অবস্থায় জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র না পাওয়ার করাণেই পরিবহণ দফতর টাকা দিতে অস্বীকার করে। ফলে বাসস্ট্যান্ড সম্প্রসারণের বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। সমিতির সভাপতি অপূর্ব চক্রবর্তী এবং পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ দেবানন্দ ঘোষ বলেন, “শেষ পর্যন্ত ‘তথ্য জানার অধিকার আইন’-এর সাহায্যে আমরা সমিতির পক্ষ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর দফতরের কাছ থেকে বাগনান বাসস্ট্যান্ডের জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছিলাম। রেল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে সেগুলি পাঠিয়ে দিয়েছেন। সেইসব কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে। বর্তমানে জমি সংক্রান্ত সমস্যাটি কেটে যাবে বলেই আমরা আশা করছি। ফলে বাসস্ট্যান্ড সম্প্রসারণের প্রক্রিয়াও শুরু করা যাবে।”
বতর্মানে স্বল্প পরিসরের বাসস্ট্যান্ডে যানবাহনের ভিড়ে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। বিভিন্ন রুটের বাস তো বটেই, অটো রকশা, ট্রেকার, মিনি বাস, ছোট গাড়িগুলিও বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী ওঠানামা করায়। এখান থেকেই বাগনান-ধর্মতলা রুটের সিটিসি বাস চলাচল করে। কয়েক হাজার যাত্রী এই বাসে নিত্য কলকাতায় যাতায়াত করেন। কিন্তু গাড়ির ভিড়ে যাত্রীদের অপেক্ষা করার জায়গা থাকে না। তা ছাড়া বিভিন্ন রুটের বাসগুলির স্ট্যান্ডে ঢোকা এবং বেরোনোর সময় প্রবল যানজটের সৃষ্টি হয়। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটে।
যাত্রীদের বক্তব্য, একমাত্র বাসস্ট্যান্ডটি সম্প্রসারণ করলেই সমস্যাটি মেটানো সম্ভব। অপূর্ববাবু বলেন, “জমির সমস্যাতেই এতদিন সম্প্রসারণের কাজটি আটকে ছিল। তবে সেই সমস্যা কাটতে চলেছে। এ বারে নতুন করে পরিবহণ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।” |