দুপুর ১২টা, অথচ বেশ কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ তখনও তালাবন্ধ। এ দিকে শ্রেণিকক্ষের বাইরে হাজির শিক্ষক ও পড়ুয়ারা। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ ছাত্রদের একাংশ, শিক্ষক কমনরুম ও অফিসে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালিয়ে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের কলেজ থেকে বাইরে বের করে গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। শনিবার মালদহের চাঁচল কলেজের ঘটনা।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে বিবাদের জেরে ওই কলেজে অচলাবস্থা চলছে। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে আন্দোলনে নেমে কলেজে তালা ঝোলানো হয়েছে বলে ছাত্র সংসদ সূত্রে দাবি করা হয়েছে। এ দিন ছাত্রদের রণমূর্তি দেখে অনেক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী পালিয়ে যান। অভিযোগ, যাঁরা বের হতে চাননি তাঁদের কার্যত ধাক্কা দিয়ে টেনে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়। ছাত্র সংসদের নেতৃত্বে এ দিন ভাঙচুর চলে বলে অভিযোগ উঠেছে। সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছাত্র পরিষদের মহম্মদ আবদুর রউফ বেলাল বলেন, “এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ শিক্ষক পঙ্কজ কুণ্ডু এসে শ্রেণিকক্ষের তালা খুলতে যান। অথচ তার আগে থেকে ছাত্রছাত্রীরা শ্রেণিকক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে। এ ভাবে দূরদূরান্ত থেকে পড়ুয়ারা এসে হয়রান হবেন তা মানা যায় না। উত্তেজিত ছাত্রদের একাংশই ভাঙচুর চালিয়েছেন।”
সম্প্রতি ওই কলেজের প্রশাসক নির্দেশ জারি করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ থেকে অনিতা চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়ায় গোলমাল বাধে। কলেজের শিক্ষক গাহুল আমিনকে প্রশাসক নিযুক্ত করায় আদালতে যান অনিতাদেবী। আদালত থেকে তিনি স্থগিতাদেশ নিয়ে কলেজে এলেও দায়িত্ব বুঝে পাননি। এক একদিন এক একজন শিক্ষককে কলেজ চালানোর ভার দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। পঙ্কজবাবু বলেন, “এ দিন সব ঘর বন্ধ ছিল এটা ঠিক নয়। আসলে যাদের ক্লাস থাকে তাঁরা না আসা পর্যন্ত সেই ঘরগুলো খোলা হয় না। তা নিয়েই সমস্যা হয়। আমি এখানে স্থায়ী পদে নেই। তাই আমারা ক্লাসের আগে কলেজে আসি।”
এ দিন কলেজে এসেছিলেন অনিতাদেবী। তিনি বলেন, “অধিকাংশ শিক্ষকই তো এ ভাবেই দেরি করে কলেজে আসেন। আর সেটা বন্ধ করার চেষ্টা করায় আমায় পদ থেকে সরানোর চক্রান্ত শুরু হয়।” তবে শিক্ষক পঙ্কজ কুন্ডু ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সব সমস্যা মেটানো হবে বলে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। |