তেন্ডুলকরকে প্রতিযোগিতায় ফেলে টেস্টের পাঁচ দিন ধরে আলোচিত থাকার নিদর্শন ভারতীয় ক্রিকেটে খুব কমই আছে। তা-ও আবার অভিষেক সিরিজে খেলতে নামা কোনও প্লেয়ার। আরব সাগরের পারে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ঠিক সে রকমই চর্চিত ক্রিকেটার।
কখনও তাঁর ক্যারম বল। কখনও পাঁচ উইকেট। কখনও তাঁর বিস্ময়কর সেঞ্চুরি। আবার কখনও হরভজনকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরের টেস্ট দলে ঢুকে পড়া। এ দিন ভারত যখন রান তাড়া করছে, তখন জাতীয় নির্বাচকেরা অস্ট্রেলিয়া সফরের টেস্ট দল বাছতে বসেছেন। অশ্বিন আর ওঝা ঠিক তার আগেই নিজেদের মধ্যে দশ উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধসিয়ে দিয়েছেন। সভায় হরভজনের নাম পর্যন্ত ওঠেনি। ধোনিও তোলেননি।
কিন্তু ওয়াংখেড়ে টেস্টে দু’ইনিংস মিলিয়ে নয় উইকেট আর সেঞ্চুরির জন্য অশ্বিন যেমন আলোচিত হচ্ছেন, তেমনই কথা হচ্ছে শেষ ওভারে তিন রান করা যেত কি না তা নিয়ে। অশ্বিন শেষ ওভারে পেয়েছিলেন দু’বল। জিততে গেলে করতে হত ২ রান। পঞ্চম বলটা তিনি ডিফেন্সিভ খেলেন। যা নিয়ে কারও কারও মনে হয়েছে, তিনি একটু ঝুঁকি নিতে পারতেন। কিন্তু অশ্বিনের যুক্তি “আমি আগে নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম যাতে ম্যাচটা না হারি। আমাদের দুই উইকেট বাকি ছিল। কী হত যদি শেষ দুই বলে দু’টো উইকেট চলে যেত? আমি পঞ্চম বলটা ডিফেন্ড করে দেওয়া মানে আমরা আর হারব না। আমার লক্ষ্য ছিল, শেষ বলটায় যা চেষ্টা করার করব।”
শেষ বলে তাঁর দু’রানের জন্য দৌড় দেখে যে কেউ কেউ প্রসন্ন হতে পারেননি সেটা হোটেলে ফিরে বুঝতে পারেন ভারতের নতুন স্পিন-আবিষ্কার। কিছুটা বিরক্ত হয়ে তিনি বলেন, আমি আর কী করতে পারতাম? হারাটা আগে ঠেকাব না? আর দু’রান নিতে গিয়ে দেখি ফিল্ডার থ্রো করে দিয়েছে। বল তখন প্রায় আমার মাথার ওপরে। তা-ও জোর চেষ্টা করেছিলাম। তবে টিম ম্যানেজমেন্টের তরফে সরকারি ভাবে কেউ উষ্মা প্রকাশ করেননি। ধোনিও সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলেননি যে, শেষ বলে দু’রান করে ফেলা উচিত ছিল। তিনি বলেছেন, আমাদের হিসেব কষে রান তাড়া করারই প্ল্যান ছিল। কিন্তু ৩-০ না হওয়ার আক্ষেপ যে একেবারে গোপন করতে পারছিলেন, এমনও নয়।
শেষ দিন দুর্দান্ত ক্রিকেট হয়েছে স্বীকার করে নিয়ে ধোনি বলেন, “শিক্ষা হল যে, যতক্ষণ না জিতছ ততক্ষণ ম্যাচ তোমার নয়।” এর পর যোগ করেন, “এ বার দেখতে চাইব প্রথম দিন থেকে বল এ রকম ঘুরছে। যাতে শেষ দিন বিকেল পর্যন্ত উত্তেজনা আনার জন্য বসে না থাকতে হয়।” |