ঝামটিয়ায় উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র
ভবন কোথায় হবে, সেই বিবাদেই থমকে আছে কাজ
টাকা এসে পড়ে রয়েছে প্রায় এক বছর ধরে। কিন্তু উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য নতুন বাড়ি তৈরি হচ্ছে না। বাড়ি কোথায় হবে, তা নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে জটিলতার জেরে কাজ শুরুই করা যায়নি।
ঘটনাটি হাওড়ার জয়পুরের ঝামটিয়া পঞ্চায়েত এলাকার। ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, সাওড়িয়া গ্রামে একটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাড়ি তৈরির জন্য স্বাস্থ্য দফতর ৬ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে। আমতা ২ ব্লক প্রশাসনের কাছে সেই টাকা পৌঁছেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পাশের গ্রাম কামারগেড়িয়ার বাসিন্দারা দাবি করেছেন, টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তাঁদের গ্রামে তৈরি করার জন্য। বরাদ্দ টাকা তাঁরা সাওড়িয়া গ্রামের জন্য খরচ করতে দেবেন না। বিডিও-র কাছে কামারগেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা একাধিকবার স্মারকলিপিও দিয়েছেন। এই বিবাদের ফলেই কাজটি করা যাচ্ছে না বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর।
২০০৩ সালের আগে অবশ্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ছিল কামারগেড়িয়া গ্রামেই। নাম ছিল কামারগেড়িয়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এক স্বাস্থ্যকর্মীর ভাড়া দেওয়া বাড়িতে চলত উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। ২০০৩ সালে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে কোন গ্রাম থেকে কত রোগী আসেন সে বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতর থেকে একটি সমীক্ষা হয়। তাতে দেখা যায়, এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কামারগেড়িয়া-সহ সাতপোতা এবং সাওড়িয়া গ্রাম থেকেও রোগী আসেন। ওই সমীক্ষার পরে সাওড়িয়া গ্রামে উঠিয়ে আনা হয় উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে। সাওড়িয়া গ্রামে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে উঠিয়ে আনা হলেও সাইনবোর্ড রয়েছে কামারগেড়িয়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র নামেই।
বছর খানেক আগে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাকা বাড়ি তৈরির জন্য ৬ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা এসেছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর। এতেই বেঁকে বসেছেন কামারগেড়িয়ার বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির পাকা বাড়ি তৈরি করতে হবে ওই গ্রামেই। সাওড়িয়ায় তাঁরা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র করতে দেবেন না বলে ব্লক প্রশাসনের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়ে দেন।
বিডিও পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “সাওড়িয়া গ্রামেই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি করার জন্য টাকা এসেছে। কেন তা খরচ করা যাচ্ছে না, সে বিষয়টি আমি জেলাশাসককে জানিয়েছি। এর বেশি কিছু বলব না।”
কামারগেড়িয়ার বাসিন্দারা পুরো বিষয়টির জন্য দায়ী করেছেন সিপিএম পরিচালিত আমতা ২ পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ দিলীপ সামন্তকে। তাঁদের অভিযোগ, দিলীপবাবুর বাড়ি সাওড়িয়া গ্রামে। তিনিই সমীক্ষকদের ভুল বুঝিয়ে তাঁদের গ্রামের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছেন নিজের গ্রামে। বরাদ্দ টাকায় সেখানেই পাকা বাড়ি তৈরি করতে চান তিনি। একই অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বেরও।
অভিযোগ অস্বীকার করে দিলীপবাবু বলেন, “সমীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতেই যা হওয়ার হয়েছে। কামারগেড়িয়া গ্রামের নামে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি থাকলেও, সাওড়িয়া এবং সাতপোতা এই দু’টি গ্রামও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির অধীন। উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি কামারগেড়িয়া গ্রামের একটি প্রান্তে অবস্থিত ছিল। ফলে সেখানে সাওড়িয়া গ্রামের বহু মানুষ যেতে পারতেন না। ২০০৩ সালের সমীক্ষায় এ কথা জানার পরে সাওড়িয়া গ্রামেই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে সরিয়ে আনা হয়। তিনটি গ্রামের পক্ষে এটিই সুবিধাজনক জায়গা।” দিলীপবাবুর আরও দাবি, “সাওড়িয়া গ্রামেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির বাড়ি তৈরির জন্য জমিও দান করা হয়েছে। সেই জমির দলিলের উপরে ভিত্তি করেই টাকা এসেছে। কিন্তু উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির নাম যেহেতু থেকে গিয়েছে কামারগেড়িয়া গ্রামের নামে, সে কারণেই হয় তো ওই গ্রামের বাসিন্দারা ভুল বুঝছেন।”
জটিলতা কাটাতে জেলাশাসকের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক দেবকুমার নন্দন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.