জঙ্গলমহলে পরিবেশ-বান্ধব শিল্পে সাহায্য, আশ্বাস পার্থর
ঙ্গলমহলের কেন্দ্রভূমি ঝাড়গ্রামে এসে রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, জঙ্গলমহলে পরিবেশ-বান্ধব ভারী ও মাঝারি শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে আগ্রহী শিল্পোদ্যোগী ও সংস্থাগুলিকে সব ধরনের সাহায্য দেবে রাজ্য সরকার। জঙ্গলমহলে নিবিড় কর্মসংস্থানের প্রয়োজন। সে জন্য দরকার শিল্প। শিল্পমন্ত্রীর বক্তব্য, “জঙ্গমহলের মূল সমস্যা অনুন্নয়ন। মানুষের হাতে কাজ নেই। বছরে গড়ে ১৭৭ দিন এখানকার মানুষের হাতে কাজ থাকে না। মানুষকে কাজ দিতে হবে। উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান হলে বেপথু হয়ে বন্দুক ধরার প্রয়োজন হবে না।” কিন্তু বনবাসী মানুষের জঙ্গলের অধিকার খর্ব করে শিল্পস্থাপনেরও যে তাঁরা বিরোধী, সে কথাও জানিয়ে দেন শিল্পমন্ত্রী। পাশাপাশি, শিল্প কারখানায় প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়োগ ও শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দেওয়ার উপরেও জোর দেন পার্থবাবু।
আলোচনা সভায় সুকুমার হাঁসদা ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শুক্রবার ঝাড়গ্রামের ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসের সভাঘরে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াএই তিন জেলার শিল্পোদ্যোগী ও শিল্পস্থাপনে আগ্রহী শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধারদের সঙ্গে শিল্পমন্ত্রীর এক খোলামেলা আলোচনার আয়োজন করা হয়। উদ্যোক্তা ছিল ‘রিসার্জেন্ট বেঙ্গল’ নামে একটি সংগঠন। যৌথ ব্যবস্থাপনায় ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা চেম্বার অফ কমার্স এবং ঝাড়গ্রাম মহকুমা চেম্বার অব কমার্স। উপস্থিত ছিলেন তিন জেলার প্রায় দু’শো জন শিল্পোদ্যোগী। ঝাড়গ্রাম মহকুমা চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি ভবতোষ মণ্ডল বলেন, “সন্ধের পর ঝাড়গ্রাম এলাকা যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো হয়ে যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির বিষয়টি সরকারকে ভাবতে হবে।” পুরুলিয়া চেম্বার অফ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-র সভাপতি গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, পুরুলিয়া জেলায় শিল্পের প্রয়োজনীয় জল ও বিদ্যুতের অভাব রয়েছে। জঙ্গলমহলের বনজসম্পদ-ভিত্তিক বড় ও মাঝারি শিল্প এবং পর্যটন-ভিত্তিক শিল্প গড়ার প্রস্তাব দেন বাঁকুড়া চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন দরিপা। তাঁর অভিযোগ, আগের সরকার জঙ্গলমহলে একের পর এক স্পঞ্জ আয়রন কারখানা গড়ার অনুমতি দিয়েছে। ওই সব কারখানা এলাকার তীব্র দূষণের সৃষ্টি করছে। ওঙ্কার গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান প্রহ্লাদকুমার গোয়েনকা জানান, “ঝাড়গ্রামের সর্ডিহা ও গুপ্তমণি এলাকায় ৫০০ একর জমিতে ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তাঁরা চিনের প্রযুক্তির সহযোগিতায় একটি বড় মাপের ইস্পাত কারখানা গড়তে চলেছেন। এর ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কয়েক হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।” মন্ত্রীর কাছে কয়েক জন শিল্পোদ্যোগী অভিযোগ করেন, ‘মার্কেটিং টোল’ আদায়ের নামে পণ্যবাহী লরি থেকে জোর করে বেআইনি ভাবে হাজার হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। পার্থবাবু অবশ্য জানিয়ে দেন, “ভয় দেখিয়ে কেউ টাকা চাইলে কখনই দেবেন না। এ রকম ঘটনা ঘটলে আমাদের জানাবেন।”
ঝাড়গ্রামে পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পার্থবাবু এ দিন জানান, শালবনিতে জিন্দলদের ইস্পাত প্রকল্প ছাড়াও আরও এক হাজার একর জমিতে শিল্প গড়তে চেয়েছে পুণের একটি শিল্প-সংস্থা। শিল্পমন্ত্রী এটাও স্মরণ করিয়ে দেন, রাজ্যের দেনার পরিমাণ ২ লক্ষ ৩ হাজার কোটি টাকা। তবে আশাবাদী শিল্পমন্ত্রীর বক্তব্য, “রাত যত গভীর হয়, সকালের সম্ভাবনাও তত বাড়ে।” পাশাপাশি, বর্তমান যে সব শিল্পসংস্থার বিরুদ্ধে দূষণের অভিযোগ উঠছে, ওই সব কারখানায় দূষণ-রোধে আধুনিক ব্যবস্থা করতে হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী। কুটির শিল্প, পশুপালন, বনজ ও পর্যটন-ভিত্তিক শিল্প ও উন্নয়নের আশ্বাস দেন তিনি। জঙ্গলমহলে শিল্প-স্থাপনের উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা ছাড়াও খড়্গপুরে সফ্টঅয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং ‘আইটি হাব’ গড়ে তুলতে রাজ্য সরকার আগ্রহী বলে জানান পার্থবাবু।

ছবি: দেবরাজ ঘোষ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.