মাদকাসক্তি কাটাতে বটতলার
মুস্কিলআসান ‘সংস্কার কমিটি’
গ্রামে মদ-জুয়ার প্রকোপ রুখতে সংস্কার-কমিটি গড়ে পথে নামলেন গ্রামবাসীরা। ফরাক্কার বটতলা, শিবতলা, ও মুস্কিননগর গ্রামে মদ-জুয়ার রমরমায় অতিষ্ঠ হয়েই এই পথে নামা তাঁদের। তাদের এই উদ্যোগের পাশে এক দিকে যেমন দাঁড়িয়েছেন পুলিশ, অন্য দিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও। সমাজ সংস্কার যুব কমিটির দাবি, গত দেড় বছর ধরে চলা এই প্রচেষ্টা ফরাক্কার তিন গ্রামে ফিরিয়ে এনেছে অনেকটাই সুস্থ পরিবেশ। মদের প্রকোপ তো কমেছেই, গ্রামের আমবাগানগুলিতে জুয়ার আসরও বন্ধ হয়েছে।
ফরাক্কার ওই তিন গ্রামে প্রায় হাজার খানেক পরিবারের বাস। গড়ে ওঠা সমাজ সংস্কার কমিটির সম্পাদক শামিম আখতার বলেন, “ধুলিয়ান ও অর্জুনপুর থেকে মদ এনে প্রকাশ্যে কেনাবেচা চলত ওই তিন গ্রামে। দুপুরের পর একাধিক বাগানে বসে যেত জুয়ার আসর। এমনকী ইদানীং তরুণদেরও অনেকেই সামিল হচ্ছিল তাতে। পরিবেশ এতটাই বিষিয়ে উঠেছিল যে নিত্যদিনই অশান্তি পোহাতে হচ্ছিল গ্রামের মানুষকে।”
সংস্কার কমিটির সহকারি সভাপতি নুরুল হক বলেন, “গত দেড় বছর ধরে গ্রাম সংস্কারের এই পথে হেঁটেছি, কিন্তু কখনও আইন ভাঙার পথে হাঁটিনি আমরা। কারণ আমরা জানি, কোথায় কতটুকু এগোনো দরকার। প্রথম আমরা সেই সব মানুষের বাড়ি-বাড়ি ঘুরে বোঝানোর চেষ্টা করেছি মদ তার পরিবারের কি সর্বনাশ ডেকে আনছে। কীভাবে ছেলের মুখের খাবার কেড়ে নিচ্ছে সর্বনাশা জুয়া।”
তাঁর কথায়, “দেখা গেল এক আম বাগানে প্রতি দিন জুয়ার আসর বসে। কমিটির কয়েক জন এক দিন দুপুরে যেতেই সবাই যে যার মত পালিয়ে গেল। ভাবলাম আর বসবে না জুয়ার আসর। কিন্তু দু-দিন পরেই যে কে সেই। তাই সেই বাগানের পাশেই সভা ডাকলাম। এলাকার বহু মানুষ যোগ দিল তাতে। এলেন বিডিও নিজেও। প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে কিভাবে সর্বনাশ করছে মদ, জুয়া বোঝানো হল। তার পর থেকে ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে গেল সেই জুয়ার ঠেক। সর্বত্র এগিয়েছি এভাবেই। সফলও হয়েছি।”
মুস্কিননগর গ্রামের সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য রেজাউল হক বলেন, “আসামাজিক কাজ থেকে নতুন প্রজন্মকে বাঁচাতেই হবে। সেই লক্ষেই এগোচ্ছেন কমিটির কর্তারা।” বটতলা গ্রামের কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ ওদুদ বলেন, “সমাজের স্বার্থেই অসামাজিক কাজকর্ম রোখা দরকার। একেই তো গরীব এলাকা। তার উপর মদ এবং জুয়ার নেশা যেভাবে বেড়ে উঠছিল গ্রামে তা নিয়ে চিন্তা ছিল। সংস্কার কমিটি বহু মানুষকে সচেতন করে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে এনেছে।”
তৃমমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি সোমেন পাণ্ডে বলেন, “এই ধরণের উদ্যোগে বোঝা যায় গ্রামাঞ্ছলের মানুষ ক্রমশ সচেতন হচ্ছেন। ওই তিন গ্রামের মানুষ যেভাবে এগিয়েছে সমাজ সংস্কারে অন্যান্য গ্রামবাসীদেরও উচিত তাদের অনুসরণ করা।”
কি বলছেন পুলিশ কর্তারা?
ফরাক্কা থানার আইসি উত্তম দালাল বলেন, “অসামাজিক কাজকর্ম থেকে গ্রামের সমাজকে রক্ষার উদ্যোগ নিশ্চয় ভাল। কিন্তু তাদের এটা মনে রাখতে হবে সংস্কারের নামে আইন যেন তারা হাতে তুলে না নেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.