চাপানউতোর দুই দফতরের
ভেঙেই চলেছে পদ্মা, চার দিনেও শুরু হয়নি পাড় বাঁধা
থা ছিল চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ভাঙন রোধের কাজ শুরু হবে। কিন্তু চার দিন কেটে গেলেও সে কাজ শুরুর কোনও লক্ষণই নেই। ময়ায় সাধারণ মানুষ এই নিয়ে ক্ষুব্ধ। রাজ্য সেচ দফতরের ভাঙন প্রতিরোধ দফতর অবশ্য এই কাজ না হওয়ার দায় চাপিয়েছে লালগোলা ব্লক প্রশাসনের উপরে। লালগোলা ব্লক অফিসের বক্তব্য, তাঁরা মজুর পাচ্ছেন না, নৌকাও নেই, বস্তার সঙ্কট। ফলে বস্তায় মাটি ভরে নদীতে ফেলার কাজ শুরু করা যায়নি। তবে জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি বলেন, “এমনটা হওয়ার কথা নয়, আমি দেখছি, কোথায় কী সমস্যা রয়েছে।” তবে ময়ায় ভাঙন এখন থমকে রয়েছে। সেচ দফতরের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার অনীশ ঘোষ বলেন, “তবে মন্দের ভাল, কাজ শুরু না হলেও ময়া ভাঙন আপাতত থমকে রয়েছে। পাড়ের বহু বাঁশঝাড় নদীতে ধসে পড়ার কারণে এই ভাঙন সাময়িক ভাবে বন্ধ রয়েছে। তবে এখনই কাজ শুরু না করা গেলে, ভাঙনের হাত থেকে বাঁচা শক্ত হবে।”
এই দিন ময়ায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, ময়া রয়েছে ময়াতেই। রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইঞা বলেন, “আমি সেচ দফতরের অফিসারদের বলেছি জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে ময়ায় কাজ শুরু করতে। টাকার ব্যাপারে তাঁদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। তবু কেন কাজ শুরু হয়নি, তা দেখছি।”
শুরু হয়নি ভাঙন রোধের কাজ। শুক্রবার ময়াগ্রামে ছবি তুলেছেন অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
রবিবার এই এলাকায় সদা নির্মিত পাথরের স্পার ভেঙে শুরু হয় ভাঙন। ২৫টি বাড়ি ধসে গিয়েছে। ৩০টি বাড়ি ধসে পড়ার মতো অবস্থায় চলে গিয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সোমবার জেলাশাসক নিজেই ওই এলাকায় যান ভাঙন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। সেখানেই তিনি বৈঠক করেন ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত কর্তাদের সঙ্গে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্পের এক জন সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারও। তারপরেই জেলাশাসক বলেছিলেন, এক দিনের মধ্যেই বস্তায় মাটি ভরে ভাঙনগ্রস্ত এলাকায় ফেলা হবে।
স্থানীয় বিধায়ক কংগ্রেসের আখরুজ্জামান বলেন, “প্রশাসনের তৎপরতা ও সমন্বয়ের অভাবেই চার দিনেও কাজ শুরু করা যায়নি। আমি নিজেই এই ব্যাপারে বার বার দু’টি দফতরকেই তৎপর হতে অনুরোধ করেছি। কিন্তু কাজ শুরু না করে একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন।” অনীশবাবুর বক্তব্য, “আমাদের দফতরের লোকজন প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু বালি বোঝাই বস্তা না পেলে কাজ শুরু করা যাবে না। কথা রয়েছে, ব্লক প্রশাসন আমাদের বস্তায় বালি ভরে দেবে, আমাদের দফতরের লোকজন নৌকা করে দক্ষিণ পাড়ে বয়ে এনে খাঁচায় পুরে তা নদীতে ফেলতে হবে। প্রায় সাড়ে ৬ লাখ বস্তা লাগবে। কিন্তু সেই বস্তা তো এখনও পাইনি। তাই কাজ শুরু করা যায়নি।”
লালগোলার বিডিও প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, “কর্মনিশ্চিত প্রকল্পে কাজ করার ক্ষেত্রে কিছু বিধি নিয়ম রয়েছে। তা ছাড়া এ ক্ষেত্রে শ্রমিক পাওয়াও বড় সমস্যা হচ্ছে। নৌকাও নেই এই এলাকায়। শ্রমিকদের কাজের জন্য নিয়ে যেতে পদ্মা পেরোতে নৌকায় ৯০০ টাকা দাবি করা হয়েছে।” তবে তিনি বলেন, “শুক্রবার থেকে মাটি কাটা শুরু হয়েছে। আশা করছি, দু’দিনের মধ্যেই সমস্যা মিটে যাবে।” লালগোলা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের সাজাহান আলি বলেন, “কর্ম নিশ্চিত প্রকল্পে ১০০ কিউবিক ফুট মাটি কাটার জন্য দাবি করা হচ্ছে ১৩৪ টাকা করে।” কিন্তু এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য আবু তালহার দাবি, “যে দু’তিনটি সরকারি দফতর জড়িয়ে রয়েছে এই কাজের সঙ্গে তাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। সে কারণেই কাজ শুরু করা যায়নি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.