সার্কেল হচ্ছে ঝাড়গ্রাম
মমতার সফরের আগে পূর্ত ঢেলে সাজছে জঙ্গলমহলে
মাস তিনেক আগের কথা। জঙ্গলমহলে গিয়ে সেখানকার উন্নয়নে এক গুচ্ছ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী ফের জঙ্গলমহলে যাচ্ছেন ১৫ অক্টোবর। নয়াগ্রামে সুবর্ণরেখা নদীর উপরে সেতুর শিলান্যাস করবেন তিনি, সেই সঙ্গে এ বারও ঘোষণা করবেন একাধিক প্রকল্প। শুধু তা-ই নয়, কত দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে, তা-ও জঙ্গলমহলের মানুষকে জানিয়ে দেবেন। প্রকল্পগুলোর একটা বড় অংশ রূপায়ণ করবে রাজ্য পূর্ত দফতর। এখন তাই পূর্ত দফতরের ঝাড়গ্রামের অফিস পরিকাঠামো ঢেলে সাজা হচ্ছে। সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারের পদও তৈরি হচ্ছে, যেটি অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যে অর্থ দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে মহাকরণ সূত্রের খবর।
জেলায় চার-পাঁচটা ডিভিশন নিয়ে পূর্ত দফতরের এক-একটা সার্কেল। ডিভিশনের মাথায় থাকেন একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, সার্কেলে সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার। স্বাভাবিক ভাবেই একজিকিউটিভের চেয়ে সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারের চটজলদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা ও অর্থ অনুমোদনের ক্ষমতা অনেক বেশি। পূর্ত-সচিব অজিতরঞ্জন বর্ধনের কথায়, “প্রকল্প খাতে একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার যেখানে ২৫ লক্ষ টাকার বেশি খরচ করতে পারেন না, সেখানে সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারের এক্তিয়ার সওয়া কোটি পর্যন্ত। ফলে জঙ্গলমহলে বসেই অনেক বেশি টাকার কাজের অনুমোদন তিনি দিতে পারবেন। মহাকরণের দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে হবে না।”
এখন পূর্ত দফতরের ঝাড়গ্রাম ডিভিশন রয়েছে মেদিনীপুর সার্কেলের অধীনে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার একাধিক মহকুমার কাজও ওই অফিস থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। এমনকী, খড়্গপুরেরও কিছু এলাকার দায়িত্বও ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের। কিন্তু সমস্যাও অনেক। ইঞ্জিনিয়ারদের বক্তব্য: লোকাভাব তো রয়েইছে, তার উপরে অফিসারদের অনেক দূরের কাজ দেখভাল করতে হয় বলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকল্প শেষ করার সময়সীমা পেরিয়ে যায়।
সরকারি সূত্রের দাবি, এই সমস্যা মোকাবিলার প্রয়াস শুরু হয়েছে। ঝাড়গ্রামকে সার্কেল করা তারই অঙ্গ। পূর্ত-সচিব বলেন, “ই-টেন্ডার চালু হওয়ায় এখন সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারেরা যে কোনও অফিসে বসেই ঠিকাদার নিয়োগ করতে পারবেন। সন্দেহ নেই, এতে কাজের স্বচ্ছতা ও গতি বাড়বে।” সচিব জানাচ্ছেন, ঝাড়গ্রাম নতুন পূর্ত-সার্কেল হলে পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের কাজ ওই অফিস থেকেই নিয়ন্ত্রিত হবে। এতে এক দিকে যেমন মেদিনীপুরের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারের চাপ কমবে, তেমন মাওবাদী প্রভাবিত ২৩টি ব্লকের কাজ দেখভাল করা সহজ হবে।
১৫ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী নয়াগ্রামে সুবর্ণরেখার উপরে যে সেতুর শিলান্যাস করবেন, সেটি পূর্ত দফতরেরই তৈরি করার কথা। ঝাড়গ্রাম মহকুমা হাসপাতালকে জেলা হাসপাতালে উন্নীত করার দায়িত্বও তাদের। গত জুলাইয়ে জঙ্গলমহলে গিয়ে এই প্রতিশ্রুতি মমতা দিয়ে এসেছেন। মহাকরণ সূত্রের খবর, হাসপাতালের কাজের জন্য স্বাস্থ্য দফতর সম্প্রতি দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। উপরন্তু জঙ্গলমহলে যুব আবাস ও একাধিক কলেজ-হস্টেলও বানাবে পূর্ত দফতর। এ সবের পাশাপাশি জঙ্গলমহলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর শিবির দেখভালের দায়িত্বও পূর্তের হাতে। এমন বেশ কিছু শিবিরের পরিকাঠামো আরও উন্নীত করার দাবি জানিয়ে রাজ্য পুলিশ ইতিমধ্যে পূর্তকে চিঠি দিয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, ওই অঞ্চলে বেশ কিছু পাকা রাস্তা খানা-খন্দে ভরে গিয়েছে। মাওবাদীরা যাতে ওই গর্তে মাইন বসাতে না-পারে, তা নিশ্চিত করতেই রাস্তাগুলো দ্রুত মেরামত করা জরুরি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.