ভেস্তে গেল বৈঠক
ঝাড়খণ্ডে বিজেপি-জেএমএম শরিকি দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে
ঝাড়খণ্ডে শরিক দলের হঠাৎ আক্রমণে ফের ‘অস্বস্তি’তে পড়ল বিজেপি। আজ রাজ্যের ‘দ্বিতীয় রাজধানী’ হিসেবে চিহ্নিত দুমকায় নির্ধারিত রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার ঘটনায় বিজেপি ও তাদের জোট শরিক ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার মতানৈক্য প্রকাশ্যে এল। গত কালই রাজ্যের মাদ্রাসাগুলিতে সরকারি অনুদান চালু করা নিয়ে রাজ্যের মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী বৈদ্যনাথ রামের সঙ্গে বিরোধ বেধেছিল সংখ্যালঘু কল্যাণমন্ত্রী হাজি হুসেন আনসারির। সরকারি অনুদানের অভাবে রাজ্যের ৫২৯টি মাদ্রাসা ধুঁকছে বলে দাবি করে প্রকাশ্যে সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন আনসারি। এর পরে রাজোর উপ-মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও তাঁর দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বিধায়ক তথা মন্ত্রী আনসারির সমর্থনে বিবৃতি দিয়েছেন। এই বাগযুদ্ধ চলতে চলতেই নির্ধারিত মন্ত্রিসভার বৈঠক বেস্তে যাওয়ায় রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা দানা বেঁধছে।
বিজেপি-র তরফে শরিক দলের সঙ্গে বিরোধের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু জেএমএম স্পষ্টতই বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার জন্য বড় শরিক বিজেপি তথা মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডার দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে। সরকারি সূত্রে অবশ্য বলা হয়েছে, এ দিন তামাড়ে প্রয়াত শিক্ষাবিদ তথা সাংসদ রামদয়াল মুন্ডার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠক স্থগিত রাখা হল।
চলতি সরকারের ‘অভিভাবক’ বলে পরিচিত জেএমএমের প্রধান নেতা শিবু সোরেনের পুত্র উপ-মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন মাদ্রাসার অনুদানের বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। আর জেএমএম-এর অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য কোনও রাখঢাক না-করেই বলেছেন, “রাজ্য সরকারের মাদ্রাসা-নীতির প্রতিবাদেই মন্ত্রিসভার বৈঠক জেএমএম ভেস্তে দিয়েছে।” বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার আরও একটি কারণও সুপ্রিয়বাবু উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, “ভেবেচিন্তেই পিছিয়ে-পড়া সাঁওতাল পরগনার দুমকায় মন্ত্রিসভার বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু আলোচনার বিষয়বস্তুর মধ্যে সাঁওতাল পরগনার উন্নয়নের কোনও প্রকল্পই নেই। তা হলে দুমকায় লোক দেখানো বৈঠক করার কী দরকার?”
নীতিগত ভাবেই ঝাড়খণ্ড সরকার ঘুরে-ফিরে রাজ্যের পাঁচটি প্রধান অঞ্চলে সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠক করা হবে বলে স্থির করেছে। এই হিসাবে, উত্তর ও দক্ষিণ ছোটনাগপুরে হাজারিবাগ ও রাঁচি, কোলহান অঞ্চলে চাইবাসা বা জামশেদপুর, পলামুতে ডাল্টনগঞ্জ এবং সাঁওতাল পরগনার দুমকায় ঘুরে-ফিরে মন্ত্রিসভা বৈঠকে বসবে বলে স্থির হয়। তার উপরে দুমকা আবার খাতায়-কলমে রাজ্যের দ্বিতীয় রাজধানী। কিন্তু দুমকায় বৈঠক হলেও আলোচ্য বিষয়বস্তুর মধ্যে সাঁওতাল পরগনা-সংক্রান্ত কোনও বিষয় না-থাকায় ক্ষুব্ধ অঞ্চলের বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্টী।
এই ক্ষোভটাকে কাজে লাগিয়েই জেএমএম বৈঠক ভেস্তে দিয়েছে বলে রাজ্য-রাজনীতির কুশীলবেরা মনে করছেন। সুপ্রিয়বাবু বলেন, “সাঁওতাল পরগনায় হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গঠন থেকে শুরু করে দুমকার সিধু-কানহু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নের ননা প্রস্তাবিত প্রকল্প নিয়ে সরকার নীরব। সাহেবগঞ্জে গঙ্গার উপরে সেতু গড়তে রাজ্য সরকার রাজি হলেও কাজ এগোচ্ছে না। ওই সেতু গড়া হলে রাজ্যের যোগাযোগ-ব্যবস্থাটাই পাল্টা যাবে। এ সবের প্রতিবাদেই আমরা বৈঠকে যাচ্ছি না।”
কাল রাতে বৈঠক বাতিল করা হলেও জনতা দল (সংযুক্ত)-এর বিধায়ক তথা রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী রাজা পিটার গত কালই দুমকায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী অবশ্য দাবি করেন, “জেএমএম-এর সঙ্গে বিজেপি-র সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.