কঙ্কাল-কাণ্ড
নিখোঁজদের তালিকা দিয়ে সিপিএমের পাল্টা কৌশল
লাগাতার কঙ্কাল-কাণ্ডের জেরে ‘বিব্রত’ সিপিএম এ বার পাল্টা ‘রাজনৈতিক কৌশল’ নিল। বেশ কয়েক বছর ধরে নিখোঁজ ৬৫ জন বাম কর্মীর সবিস্তার তালিকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠালেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিরোধী দলনেতার আবেদন, যে ‘তৎপরতা’ নিয়ে রাজ্যের কিছু জায়গায় কঙ্কাল এবং হাড়গোড় উদ্ধার অভিযান চলছে, নিখোঁজ বাম কর্মীদের সন্ধান পেতেও ‘অনুরূপ উদ্যোগ’ দেখানো হোক।
মূলত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় একাধিক কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনার জেরে অভিযুক্ত হয়েছেন সিপিএমের নেতা-কর্মীরা। বাম শাসনে নিখোঁজ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের দেহাবশেষ এখন উদ্ধার হচ্ছে বলে ওই নিখোঁজদের পরিবার-পরিজনদের দাবি। সেই জন্যই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা নিজেরাই কঙ্কাল উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কঙ্কাল-কাণ্ডের জেরেই সিপিএমের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ এখন জেলে। কৃষক সভার নেতা তরুণ রায় বা কেশপুরের জোনাল নেতা এন্তাজ আলিরাও অভিযুক্ত। এমতাবস্থায় ‘কোণঠাসা’ সিপিএম বারেবারেই শাসক দলের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ’ করার অভিযোগ এনেছে।
সেই প্রেক্ষাপটেই পাল্টা কৌশল হিসাবে এ বার নিজেদের নিখোঁজ কর্মীদের নামের তালিকা এবং ঠিকানা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে সরকারের উপরে ‘চাপ’ সৃষ্টির চেষ্টা চালানো হল বলে সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা।
যে তালিকা সূর্যবাবু মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন, তাতে নদিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বীরভূম জেলায় ১৯৯০ সাল থেকে এ পর্যন্ত নিখোঁজ ৬৫ জনের নামধাম রয়েছে। তার মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরেরই ৫৬ জন। এই তালিকায় এ বছরের বিধানসভা নির্বাচনের পরে নিখোঁজ হয়েছেন, এমন দু’জনের নাম রয়েছে। আর তালিকার সিংহভাগই ২০০৯-১০ সালে দুই মেদিনীপুরে নিখোঁজ।
সূর্যবাবু শুক্রবার বলেন, “তালিকা দেখে অনেকেই হয়তো বলবেন, তখন তো বামফ্রন্ট সরকার ছিল। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বামফ্রন্টের আমলেও বামপন্থীদের উপরে আক্রমণ অব্যাহত ছিল। তাতে গোপন করার কিছু নেই। ৩৪ বছরে ২৪০০ বামপন্থী নেতা, কর্মী, সমর্থক খুন হয়েছেন। তাঁদের নামের তালিকাও আমরা বারেবারে প্রকাশ করেছি।” সরকারের কাছে তাঁদের দাবি কী? সূর্যবাবুর বক্তব্য, “সরকারের কাছে একটাই কথা বলার, যে তৎপরতায় কঙ্কাল উদ্ধার অভিযান চলছে, এই নিখোঁজ ৬৫ জনের ব্যাপারেও অনুরূপ উদ্যোগ দেখানো হোক।” এ যাবৎ যত কঙ্কাল বা হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে, তার মধ্যে তাঁদের এই তালিকার কারও দেহাবশেষ ছিল, এমন দাবি অবশ্য বিরোধী দলনেতা করেননি।
সূর্যবাবুর অভিযোগ, কোথাও মাওবাদী, কোথাও মাওবাদী-তৃণমূল যৌথ আক্রমণের মুখে পড়েই বাম কর্মী-সমর্থকেরা ঘরছাড়া হয়েছেন। তার পরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। সেই জন্যই জঙ্গলমহল এবং নন্দীগ্রাম ও সংলগ্ন কিছু এলাকায় অনুসন্ধান বা তল্লাশি হওয়া দরকার। কিন্তু তা হচ্ছে না।
সূর্যবাবুর দাবি, “তৃণমূল, কংগ্রেস বা অন্য যে কোনও দলই এই ভাবে নিখোঁজদের তালিকা প্রকাশ করুক। তা হলে আগে থেকেই জানা যাবে, কার দেহ খোঁজা হচ্ছে। একটা করে কঙ্কাল উদ্ধার করে মামলায় অন্য পক্ষের নাম জুড়ে দেওয়া, এ জিনিস কত দিন চলবে?”
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.