দিঘা থানা থেকে ‘ছিনতাই’ ধৃত তৃণমূল নেতা
ভূপতিনগরের পরে এ বার দিঘা থানা থেকে অভিযুক্ত নেতাকে কার্যত ‘ছিনতাই’ করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়, নন্দীগ্রাম-পর্বের পরে যা তৃণমূলের ‘শক্ত ঘাঁটি’ বলেই পরিচিত।
তোলাবাজির অভিযোগে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির পদিমা-২ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান সুশান্ত পাত্রকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। খবর পেয়ে রাতেই এক দল তৃণমূল কর্মী-সমর্থক দিঘা থানায় এসে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। পরে সুশান্তবাবুকে ‘ছিনতাই’ করে নিয়ে যায় তারা। ভাঙচুরের অভিযোগে দিঘা থানার পুলিশ ৭ জনকে গ্রেফতার করলেও সুশান্তবাবুকে আর ধরতে পারেনি। তবে গণ্ডগোল ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে তাঁর স্ত্রী তথা পদিমা-২ পঞ্চায়েতের বর্তমান তৃণমূল প্রধান গীতা পাত্র-সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরি ও রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দেবব্রত দাস বুধবার সকালে দিঘা থানায় যান। সাত জনকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারের প্রতিবাদ করে অখিলবাবু বলেন, “জেলায় নতুন পুলিশ সুপার আসার পর থেকেই দিঘা থানার পুলিশ ব্রিটিশ পুলিশের মতো আচরণ করছে!” ধৃত সাত তৃণমূল কর্মীকে এ দিন কাঁথি এ সি জে এম আদালতে তোলা হলে বিচারক দেবপ্রিয় বসু তাঁদের ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেই সুশান্তবাবুর বিরুদ্ধে স্থানীয় সূত্রে নানা অভিযোগ পৌঁছেছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ডিজি-কে ব্যবস্থা নিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেই গ্রেফতার করা হয় সুশান্তবাবুকে। এই নিয়ে মন্তব্য না-করলেও পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অশোককুমার প্রসাদ বলেন, “ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আগেও দু’টো মামলার চার্জশিট রয়েছে। তোলা চেয়ে দিঘার এক হোটেল মালিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।”
বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে বাম জমানায় পূর্ব মেদিনীপুরেরই ভূপতিনগর থানায় বিক্ষোভ দেখিয়ে দলের এক কর্মীকে লক-আপ থেকে ছিনতাই করেছিল তৃণমূলের লোকজন। কিন্তু এখন তারাই রাজ্যের শাসক দল। তা সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা কেন ঘটছে জানতে চাইলে তৃণমূল সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শিশির অধিকারী বলেন, “দিল্লিতে আছি। তবে ঘটনার কথা শুনেছি। জেলায় আসন্ন কোর কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।” ঘটনার তীব্র নিন্দা করে সিপিএমের স্থানীয় জোনাল কমিটির সম্পাদক আশিস প্রামাণিক বলেন, “দিঘাকে গোয়া বানানোর পরিকল্পনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই তার লক্ষণ! পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই তোলাবাজি করত তৃণমূলের লোকেরা। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে মাত্রা ছাড়িয়েছে।” পুলিশ সূত্রে খবর, দিঘার হোটেল মালিক অপরূপ কুণ্ডু ১৪ লক্ষ টাকা তোলা চাওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূল নেতা সুশান্তবাবুর বিরুদ্ধে। যদিও গীতাদেবীর অভিযোগ, “যৌথ ভাবে ব্যবসার জন্য অপরূপ কুণ্ডুুকে আমার স্বামী ৪০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। প্রকল্পটি না-হওয়ায় টাকা চাইলে ওই হোটেল মালিক ১৩ লক্ষ টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকা আদায়ের জন্য চাপ দেওয়ায় আমার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “মঙ্গলবার দিঘা থানায় গেলে ওসি ধাক্কা দিয়ে বার করে দেন আমায়।” দিঘার ওসি অজিত ঝা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “প্রায় শ’দেড়েক লোক এসে থানার গেট, দরজা-জানলার কাচ ভাঙচুর করার পরে সুশান্ত পাত্রকে জোর করে নিয়ে চলে যায়। পরে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও ধৃতকে পাওয়া যায়নি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.