খেলা
অভাব সরঞ্জামের
নুশীলনে ঝুঁকি রয়েছে। সরঞ্জামগুলিও বেশ পুরনো। এর মধ্যেই চলে বেতড় ব্যায়াম সমিতির জিমন্যাস্টিক চর্চা। এর মধ্যেও বড় জিমন্যাস্ট হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছে শ্রেবন্তী রুদ্র, ইসবিনা খাতুন, দেবারতি দাস, মধুরিমা আদক, দীপাঞ্জন সরকাররা।
আটের দশকের গোড়ায় এই ক্লাবে জিমন্যাস্টিক্স চর্চার শুরু। এখানে অনুশীলন করেই শম্পা দে, পম্পা দে, পুতুল দে-রা জিমন্যাস্টিক্সে সাড়া ফেলেছিলেন। ক্লাবে এখন রয়েছে মিনি ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্স। সরকারি অনুদানে নতুন ভাবে গড়ে উঠেছে ক্রীড়াচর্চা কেন্দ্র। তবে সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। কিন্তু সায়ন দাস, স্বস্তিকা দে, কৃষ্ণা লাকড়াদের শেখার আগ্রহে খামতি নেই। কারও বয়স চার, কারও বা পাঁচ। প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন দু’ই প্রাক্তন জিমন্যাস্ট সঞ্জীব পাত্র ও সুন্দরী মণ্ডল।
তিনটি বিশ্বকাপ-সহ আটটি আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সুন্দরীদেবী বললেন, “যেখানে-সেখানে জিমন্যাস্টিক্স হয় না। ভাল ম্যাট দরকার। ইন্ডোর দরকার। এখানে ইন্ডোর হয়েছে। কিন্তু ভাঙাচোরা সরঞ্জাম নিয়ে অনুশীলন করতে হয়। একটি দল ম্যাট নিলে অন্য দল পায় না। ম্যাট ছাড়া অনুশীলন করা ঝুঁকির। এ ভাবে ভাল জিমন্যাস্ট তৈরি করা শক্ত।”
নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে সঞ্জীববাবুরও। তিনি বললেন, “খুব ভয়ে ভয়ে অনুশীলন করাই। পর্যাপ্ত ম্যাট থাকলে বাচ্চাদের নির্ভয়ে অনুশীলন করানো যায়। প্যারালাল বারের উচ্চতা বেড়েছে। সেই অনুযায়ী বার নেই। তৈরি করতে ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ।” তাঁর কথায়: “নতুন পয়েন্ট ব্যবস্থা চালু হওয়ায় এমনিতেই জিমন্যাস্টিক্স আগের তুলনায় অনেক কঠিন হয়েছে। তার পরে সুযোগ-সুবিধা না বাড়ায় আগের মতো ভাল জিমন্যাস্ট উঠে আসছে না।” তবে আশার কথা, এ বারের বেঙ্গল স্কুল জিমন্যাস্টিক্সে জেলার হয়ে অংশ নেওয়ার জন্য এই ক্লাব থেকে পাঁচ জন নির্বাচিত হয়েছে। অনূর্ধ্ব ১৪ বিভাগে খেলবে শ্রেবন্তী রুদ্র, ইসবিনা খাতুন ও সোনিয়া নন্দী। অনূর্ধ্ব ১৭ বিভাগে দেবারতি দাস ও অনূর্ধ্ব ১৯ বিভাগে অংশ নেবে মধুরিমা আদক। গত বছর সাইতে প্রাইমারি স্কুল জিমন্যাস্টিক্সে জেলার হয়ে ভাল ফল করে এই ক্লাবের রাহুল রায়, বিবেক ঘড়ুই ও পৃথা ঘোষ।
২০০৯-এ কটকে ওপেন ন্যাশনালে বিমে সোনা জিতেছিল বিনোদিনী বালিকা বিদ্যাভবনের দশম শ্রেণির ছাত্রী মধুরিমা। জাতীয় স্কুল জিমন্যাস্টিক্সে তার দু’টি রুপো আছে। গত বছর ওপেন রাজ্য প্রতিযোগিতায় হাওড়া হোমস ইন্সটিটিউশনের দশম শ্রেণির ছাত্রী দেবারতি টেবিল ভল্টিংয়ে সোনা জিতেছিল। আন ইভেন বারে পেয়েছিল ব্রোঞ্জ। দু’জনেই সল্টলেকের সাইতে অনুশীলনে যায়। মধুরিমার কথায়: “আমাদের জেলায় ভাল সরঞ্জাম নিয়ে অনুশীলনের ব্যবস্থা থাকলে আমাদের সল্টলেকের সাইতে অভ্যাস করতে যেতে হত না। যাতায়াতেই অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়।”
ক্লাবের সচিব জয়দীপ রায় বললেন, “গরিব ঘরের ছেলে-মেয়েরা খেলাটি শিখতে আসছে। অনেকে চাঁদাও দিতে পারে না। অথচ ছ’জন কোচ নিয়ে জিমন্যাস্টিক্স ইউনিটটি চালাতে মাসে হাজার ছয়েক টাকা খরচ হয়ে যায়।” ক্লাব সূত্রে খবর, স্থানীয় সাংসদ অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ওই টাকা পেলে সরঞ্জামের সমস্যা অনেকটাই মিটবে।

ছবি: রণজিৎ নন্দী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.