গুজরাতে লোকায়ুক্ত প্রশ্নে কঠোর কংগ্রেস
গুজরাতের লোকায়ুক্ত নিয়োগ প্রশ্নে আপাতত কট্টর অবস্থান নিল কংগ্রেস। লোকায়ুক্ত পদে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আর এ মেটাকে যে ভাবে রাজ্যপাল কমলা বেনিওয়াল নিয়োগ করেছেন, তা সমর্থন করে মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রকাশ্য বিতর্কের জন্য চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কড়া অবস্থান বিজেপি-রও। বিজেপি নেতারা আজ রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সংসদ অচল করেন। লালকৃষ্ণ আডবাণী, অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজরা বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিলের সঙ্গেও দেখা করেন। লোকায়ুক্ত প্রত্যাহার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া না পেলে নানা বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা না করার কথাও ভাবছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
এই পরিস্থিতিতে কৌশলগত ভাবেই কেন্দ্রের বক্তব্য, লোকায়ুক্ত নিয়োগের বিষয়টি হাইকোর্টের বিবেচনাধীন। আদালতে বিজেপিই গিয়েছে। সুতরাং রায়ের জন্য অপেক্ষা করা হোক। ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে পরবর্তী শুনানি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ আজ বলেন, “লোকায়ুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিজেপি-র যেমন আপত্তি রয়েছে, তেমনই পাল্টা মত রয়েছে রাজ্য কংগ্রেস নেতাদেরও। সোমবার তাঁরাও রাষ্ট্রপতির কাছে যাবেন।” আজ রাষ্ট্রপতিও বিজেপি নেতাদের বক্তব্য শোনার পর একটাই প্রশ্ন করেন, বিষয়টি কি আদালতের বিচারাধীন? বিজেপি নেতৃত্বের মতে, কংগ্রেস আইনের কথা তুলে তাদের আটকে রাখতে চাইছে। আদালত মোদী সরকারের বিপক্ষে রায় দিলে সরকার সেটিকেই ঢাল হিসাবে ব্যবহার করবে। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব এই ‘ফাঁদ’ থেকে বেরিয়ে পাল্টা রাজনৈতিক লড়াই করতে চাইছে। রাষ্ট্রপতিকেও আজ জেটলি বলেন, গুজরাতের বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন হলেও কেন্দ্র ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে রাজনৈতিক সূত্রে বলা হচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যেও দ্বিমত রয়েছে। দলের নেতাদের একাংশ মনে করছেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে মীমাংসা করে নেওয়া ভাল। কারণ, সংসদে লোকপাল বিলের খসড়া থেকে শুরু করে পণ্য পরিষেবা কর-সহ আর্থিক সংস্কারের বিষয়গুলো পাশ করাতে এখন প্রতি পদক্ষেপে বিজেপি-র সহযোগিতা প্রয়োজন। কট্টর অবস্থান নিলে বিজেপি সেই সহযোগিতা করবে না। যশবন্ত সিন্হার নেতৃত্বে সংসদের অর্থ বিষয়ক স্থায়ী কমিটি পেনশন সংস্কার বিলের ব্যাপারে সরকারের পক্ষেই রায় দিয়েছে। এটি এখন বিজেপির সমর্থনেই সংসদে পাশ করাতে হবে। তবে দলে অন্য মতও রয়েছে। দৃশ্যত সেটাই আজ প্রাধান্য পেয়েছে। সংসদ বিষয় মন্ত্রী পবন বনশল এবং আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদের বক্তব্য, “আজ পর্যন্ত ২১ দিন সংসদের অধিবেশন চলেছে। ১৩ দিনই সংসদ অচল করেছে বিজেপি। ফলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলো পাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।” আবার গুজরাতের রাজ্য নেতাদের মতে, লোকায়ুক্ত নিয়োগ প্রশ্নে বিজেপি-র সঙ্গে আপস করলে রাজ্যে কংগ্রেসের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। গুজরাতে ভোটের প্রায় ১৪ মাস বাকি ঠিকই। কিন্তু তার আগে লোকায়ুক্ত প্রশ্নে নরম হলে মোদীকে আগে থেকেই জমি ছেড়ে দেওয়া হবে। বরং মোদী যে অন্যায় ভাবে লোকায়ুক্ত পদে নিজের মনপসন্দ কাউকে বসাতে চাইছেন, কংগ্রেসের উচিত সেটাই প্রচার করা। আর রাহুল গাঁধী নীতিগত ভাবে আগে থেকেই ভোট প্রস্তুতির পক্ষপাতী। যে কারণে, আজ গুজরাত ভোটের প্রচার কমিটির সভাপতি পদে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শঙ্কর সিংহ বাঘেলাকে নিয়োগ করেছেন সনিয়া গাঁধী।
বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শক্তিসিংহ গোয়েলকে আজ দিল্লিতে ডাকা হয়েছিল। পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি প্রশ্ন তোলেন, মোদী প্রশাসন যদি দুর্নীতিমুক্ত হয় তা হলে লোকায়ুক্ত নিয়োগকে ভয় পাচ্ছে কেন? আইনে লোকায়ুক্ত নিয়োগে মুখ্যমন্ত্রীর মত নেওয়া বাধ্যতামূলক বলা হয়নি। কিন্তু সেই আইন সংশোধন করে মোদী চাইছেন, লোকায়ুক্ত নিয়োগে যেন তাঁর মত প্রাধান্য পায়। লোকায়ুক্ত নিয়োগের প্রশ্নে কংগ্রেস অণ্ণাকেও অস্ত্র করছে। দলের বক্তব্য, বিচারপতি মেটা অণ্ণার আস্থাভাজন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.