বড়সড় আর্থিক ক্ষতি
বিদ্যাসাগরে থমকে প্রেক্ষাগৃহের কাজ
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহের (অডিটোরিয়াম) নির্মাণকাজ সেই যে থমকেছে, প্রায় এক বছর পরেও তা শুরু হয়নি। প্রেক্ষাগৃহ তৈরি পিছিয়ে তো গেলই, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতিও হল কোটি টাকা।
অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতার জন্যই এমন ঘটল। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি একটি কমিটিও সে কথা-ই জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রেক্ষাগৃহের নক্শা তৈরির বরাত দিয়েছিলেন একটি বেসরকারি এজেন্সিকে। ওই সংস্থার দেওয়া রূপরেখা মেনে ঠিকাদার সংস্থা কাজ শুরু করেছিল। কাজ কিছুটা এগোনোর পরেই দেখা যায়, যে-ভাবে কাজ হচ্ছে তা প্রেক্ষাগৃহের উপযুক্ত নয়। যখন তা নজরে আসে ততক্ষণে অবশ্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে! তার পরে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। তৈরি হয় কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রণজিৎ ধর বলেন, “প্রেক্ষাগৃহের নকশায় কিছু ত্রুটি ধরা পড়ায় কাজ বন্ধ করতে হয়। আমরা ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে যে কমিটি তৈরি করেছিলাম তাঁরা জানান, নকশায় ত্রুটি রয়েছে। যে সংস্থা নকশা তৈরি করেছে, তারা এত বড় কাজের উপযুক্তও নয়। এখন আবার নতুন করে কাজ শুরুর উদ্যোগ চলছে।” কিন্তু ওই বেসরকারি এজেন্সিকে নক্শা তৈরির বরাত দেওয়ার আগে তাদের যোগ্যতা যাচাই করা হল না কেন? রেজিস্ট্রারের বক্তব্য, “ওই সংস্থাটি আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন তৈরি করেছে। সমস্যা হয়নি। খরচের মাত্র ৩ শতাংশ ফি নিয়েই নক্শা বানাতে রাজি হয় সংস্থাটি। পুরনো অভিজ্ঞতা ও কম খরচ দেখে তাদের বরাত দেওয়া হয়েছিল। এখন দেখছি, ভুল হয়েছিল।”
অসমাপ্ত সেই ভবন। নিজস্ব চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনও প্রেক্ষাগৃহ নেই। এক হাজার আসন-বিশিষ্ট প্রেক্ষাগৃহের জন্য প্রাথমিক ভাবে খরচ ধরা হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুষ্ঠান করলে কম খরচে ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। বেসরকারি এজেন্সি নক্শা তৈরি করে। নক্শা অনুযায়ী কাজ শুরু করে ঠিকাদার সংস্থা। কাজ খানিকটা এগোয়। কিন্তু সিঁড়ি তৈরির সময়েই ত্রুটি ধরা পড়ে। দেখা যায়, অনেকটাই খাড়া ভাবে সিঁড়ি তৈরি হচ্ছে। তাতে হুড়মুড়িয়ে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। তা ছাড়া, ভিতরে যে-ভাবে আসন তৈরির নক্শা ছিল, তাতেও ত্রুটি ধরা পড়ে। নক্শায় দেড় মিটার ছাড়া একটি করে ‘রো’ তৈরির রূপরেখো ছিল। কিন্তু কমপক্ষে ২ মিটার দূরত্বের প্রয়োজন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ার সজল দাস জানান। তাঁর কথায়, “না-হলে দু’টি রো-এর মধ্যে দূরত্ব এতটাই কম হবে যে মাঝপথে যাতায়াত করাই যাবে না।” এমনকী নক্শা মেনে কাজ করলে মঞ্চ থেকে প্রথম রো-এর দূরত্ব খুব বেশি হয়ে যাওয়ার অবস্থা হত। ফলে প্রেক্ষাগৃহের আসন সংখ্যাও কমে যেত। খরচ হবে, অথচ প্রেক্ষাগৃহ ত্রুটিমুক্ত হবে না বুঝেই ঠিকাদার সংস্থাকে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ঠিকাদার সংস্থার মতে, তৈরি হওয়া অংশ পুরো ভেঙে ফেলার প্রয়োজন হবে না। কিছুটা ভেঙে একটু সাজিয়ে নিলেই হবে। তার জন্য অবশ্য প্রায় এক কোটি টাকা বাড়তি খরচ হবে।
এ বার পুরনো এজেন্সি বাতিল করে নতুন এজেন্সিকে নক্শা তৈরির কাজে লাগানো হচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তার জন্যও বাড়তি খরচ হবে। রেজিস্ট্রার বলেন, “কিছু টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে ঠিকই। কিন্তু ভাল কাজ না হলে তো পুরো টাকাই নষ্ট হত। পুরনো সংস্থাকে বাদ দিয়ে নতুন সংস্থার মাধ্যমে কাজ করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।” পুরনো সংস্থাটির অবশ্য দাবি, তাদের তরফে ত্রুটি হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে বনিবনা না-হওয়াতেই নাকি সমস্যা। ইঞ্জিনিয়ারের বক্তব্য, “সংস্থাটি ভুল নক্শা দিয়েছিল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.