বিক্ষোভে গুলির ঘটনায় চাপে চহ্বাণ, উত্তাল বিধানসভা
টিভি চ্যানেলে দেখা গিয়েছিল, সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি ছুড়ছে পুলিশ। শূন্যে নয়, সটান সামনের দিকে আগ্নেয়াস্ত্র বাড়িয়ে। আশপাশের লোকগুলো তখন প্রাণপণে ছুটে পালাচ্ছে।
গত ৯ অগস্টের ঘটনা। মহারাষ্ট্রের পাওনা বাঁধ থেকে পিম্পড়ি-চিঞ্চওয়াড় টাউনশিপে জল সরবরাহের জন্য প্রস্তাবিত পাইপলাইন প্রকল্পের বিরোধিতা করে মুম্বই-পুণে এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেছিলেন স্থানীয় কৃষকরা। পুণের মভল তালুকের কাছে বিক্ষোভকারী সেই কৃষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেধেছিল। পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন তিন জন। সেই ঘটনা ঘিরেই অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে মহারাষ্ট্র সরকার তথা পুলিশ-প্রশাসনের। বিধানসভায় বিরোধীদের প্রবল আক্রমণের মুখে পড়েছে শাসক পক্ষ।
গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে ছ’জন কনস্টেবলকে গত কালই সাসপেন্ড করা হয়েছিল। আজ সাসপেন্ড হয়েছেন আরও দুই পুলিশ অফিসার। ওই দু’জন ইনস্পেক্টর অশোক পাটিল এবং সাব-ইনস্পেক্টর গণেশ মানেকে গুলি ছুড়তে দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ। পুণের পুলিশ কমিশনারের কাছে গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তবে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণের দাবি, গোটা ব্যাপারটাই পরিকল্পিত ভাবে ঘটানো হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “পরিস্থিতি যাতে আয়ত্তের বাইরে চলে যায়, সেটা নিশ্চিত করতেই কিছু লোক কাজ করে। সম্প্রতি একটা মূর্তি সরানো নিয়েও এমন হয়েছিল। পরে ফোনের কথোপকথন থেকে বোঝা গিয়েছিল কী ভাবে অশান্তিতে ইন্ধন দেওয়া হয়েছে।”
গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে মহারাষ্ট্রের বিরোধী নেতৃত্বের হট্টগোলে আজ তিন বার মুলতুবি হয়ে যায় বিধানসভার অধিবেশন। পরে বিরোধী দলনেতা একনাথ খাডসে ৭০ জনের এক প্রতিনিধিদল নিয়ে রাজ্যপাল কে শঙ্করনারায়ণের সঙ্গে দেখা করে সরকারকে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছেন। গত কাল শিবসেনার কার্যনির্বাহী সভাপতি উদ্ধব ঠাকরে খবরের কাগজের ছবি দেখিয়ে অভিযোগ করেছিলেন, মোরেশ্বর সাঠে নামে এক কৃষককে টেনে নিয়ে গিয়ে গুলি করে মেরেছে পুলিশ। স্বভাবতই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। পাল্টা ফুটেজ দেখিয়ে তাদের দাবি, প্রথমে এমন এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, যে পরে ছাড়া পেয়ে পুলিশ ভ্যানে আগুন লাগাতে যায়। তবে যে লোকটিকে নিহত মোরেশ্বর সাঠে বলে উদ্ধব দাবি করেছেন, তাঁর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে কিছু জানায়নি পুলিশ।
পুণের এসপি (গ্রামীণ) সন্দীপ কার্নিকের কথায়, “পুলিশ নিরপরাধ লোককে মেরেছে, এই অভিযোগ ঠিক নয়। যে পুলিশ ভ্যানটা জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তাতে ছ’জন পুলিশ ছিলেন। পাথরের ঘায়ে এক জন পুলিশ জখমও হয়েছিলেন। কাঁদানে গ্যাস আর রবার বুলেটে কাজ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে গুলি ছুড়তে হয়। বিচার বিভাগীয় তদন্তে সব বোঝা যাবে।” সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন পুলিশ আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন কার্নিক। এ দিকে, রাজ্য বিজেপি তাঁর অপসারণ দাবি করেছে।
মভলের কালে গ্রামের বিক্ষোভকারী কৃষকদের দাবি ছিল, পাইপলাইন প্রকল্প হলে তাঁরা চাষের জমি হারাবেন। গ্রামে জলসঙ্কটও দেখা দেবে। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলেই শুরু হয় অশান্তি। পুলিশকে আক্রমণ করার অভিযোগে আট জন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.