নড়বড়ে সেতুতেই ছুটছে ভারী যান
ঞ্চাশের দশকে দুর্গাপুর-বাঁকুড়া রাস্তায় ডিভিসি-র বর্ধমান সেচ খালের উপর সেচ দফতরের গড়া সেতু বিপদের খাঁড়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেচ দফতর বহন ক্ষমতা নির্দিষ্ট করে সেতুর পাশে বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়েছে। কিন্তু তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভারি যান ছুটছে সেতু দিয়ে। যে কোনও সময় ঘটেত পারে দুর্ঘটনা।
জীর্ণ সেতরু দু’পাশের রাস্তা অনেকটাই বসে গিয়েছে। সেতুর কংক্রিটের মেঝে ক্ষয়ে গিয়েছে। সেতুর উপরেই খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। তাছাড়া সেতুর উপরে নিকাশি ব্যবস্থার বালাই নেই। ফলে গত কয়েকদিনের লাগাতার বর্ষায় সেই গর্তে জল জমে পরিস্থিতি আরও খারাপ। রেলিংও দুর্বল হয়ে গিয়েছে জায়গায় জায়গায়। সব মিলিয়ে ওই সেতু দিয়ে যাওয়া-আসা মানেই বিপদ ডেকে আনা, এমনই অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। আশঙ্কা, সেতুটি সংস্কার করা না হলে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
দুর্গাপুর থেকে বাঁকুড়া যাওয়ার পথে ওই সেত দিয়ে কয়েক বছরে ভারি যান চলাচল বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে। বাঁকুড়ার বড়জোড়া এলাকায় বহু শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। সেই সমস্ত কারখানার মালপত্র আদান-প্রদান হয় এই রাস্তা দিয়েই। তার উপরে যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যাও আগের তুলনায় বেড়ে গিয়েছে। দুর্গাপুর স্টেশনের পূর্ব কেবিন সংলগ্ন রেল গেটে উড়ালপুল ও সংযোগকারী রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হওয়ায় সেতুটির গুরুত্ব আরও বেড়ে গিয়েছে। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে দুর্গাপুর ব্যারাজের দিক থেকে উড়ালপুলের সংযোগকারী রাস্তায় ওঠার মুখে পড়বে ওই বিপজ্জনক সেতুটি। কাজেই সেতুটি সংস্কার না করলে উড়ালপুল ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে যাতায়াতকারীদের।
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার সঙ্গে বর্ধমান জেলা ও উত্তরবঙ্গের অন্যতম যোগাযোগকারী রাস্তাটি মার খাচ্ছে শুধু সেতুর অংশটুকুর জন্য। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুটি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে সেতুটির বহন ক্ষমতা কমে গিয়েছে। বর্তমানে এই সেতুর উপর দিয়ে ১০ টনের বেশি মালবোঝাই গাড়ি যাতায়াত করা বিপজ্জনক। দফতরের দামোদর হেড ওয়ার্কস ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অবনী রায় বলেন, “নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে সেতুর গায়ে বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
কিন্তু নিষেধাজ্ঞা আদৌ মানা হচ্ছে না। দিনের ব্যস্ততম সময়ের কথা ছেড়েই দেওয়া যাক। যে কোনও সময় ওই সেতুতে গেলেই দেখা যাবে, একই সঙ্গে ভারি লরি, যাত্রীবাহী বাস, মোটরবাইক, রিক্সা সবই চলছে। ওই রাস্তা দিয়ে দুর্গাপুর থেকে নিয়মিত বড়জোড়া যাতায়াত করেন স্বপন সোম, রবীন্দ্রনাথ বন্ধুরা। তাঁরা বললেন, “সেতুর উপর দিয়ে আমাদের গাড়ি যখন যায় তখন বুক দুরু দুরু করতে থাকে। সেতু পেরিয়ে রাস্তায় নামার পর স্বস্তি পাই।”
সেচ দফতর জানিয়েছে, পুরনো ওই সেতু সংস্কার করে লাভ হবে না। দীর্ঘস্থায়ী সুবিধার কথা ভেবে সেতুর পাশে নতুন সেতু গড়লেই লাভ বেশি। তবে নতুন সেতুটি তারা গড়বে না। গড়বে পূর্ত দফতর। সেচ দফতর থেকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওখানে নতুন সেতু গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে।
যত দ্রুত সম্ভব পরিকল্পনার বাস্তব রূপ চাইছেন ভুক্তভোগীরা। কত দিনে হয় সেটাই এখন দেখার!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.