মেডিক্যালে শিশুমৃত্যু কত, সুপারের রিপোর্ট চাইলেন রবিরঞ্জন
শিশুমৃত্যুর হার জানতে চেয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারের কাছে গত পাঁচ বছরের রিপোর্ট চাইলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের বিজ্ঞান ও জৈবপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়।
মন্ত্রীর ক্ষোভ, সুপার সুবোধ ভট্টাচার্য মৌখিক ভাবে তাঁকে দু’বার দু’রকম তথ্য জানিয়েছেন। তা ছাড়া নিজে গিয়ে যে পরিস্থিতি দেখেছেন, তাতেও তিনি উদ্বিগ্ন। শুক্রবার সুপার বলেন, “মন্ত্রী বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন। আমরা তা দিচ্ছি।”
গত ২ জুলাই বর্ধমান মেডিক্যালে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রবিরঞ্জনবাবু। তাঁর কথায়, “প্রসূতি বিভাগের অবস্থা দেখে মনে হয়েছে, নরক ছাড়া কিছু নয়। ওয়ার্ডের বারন্দায় দুই প্রসূতির রক্তস্রাব হচ্ছিল। অধিক রক্তপাতে তাঁরা সেখানেই মারা যেতে পারতেন। অথচ স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাচ্ছিলেন না। আমি বলতে তবে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে খবর নিয়ে দেখেছি, দুই প্রসূতিকে ওই সময়ে ওটিতে নিয়ে না গেলে তাঁরা শুধু রক্তপাতের কারণেই মারা যেতেন।”
মন্ত্রী যখন যান, সুপার হাসপাতালে ছিলেন না। খবর পেয়ে আসেন। মন্ত্রী তাঁর কাছে প্রসূতি বিভাগের রেজিস্টার দেখতে চান। রবিরঞ্জনবাবুর ক্ষোভ, “কে ছেলে বা মেয়ের জন্ম দিয়েছেন, শুধু সেটুকুই রেজিস্টারে লেখা ছিল। প্রসূতির বয়স, কততম সন্তান, সে সব নেই। এ দেখে পরে কী করে বোঝা যাবে, কত বধূ উপযুক্ত বয়সের আগেই মা হয়েছেন? অপ্রাপ্তবয়সে প্রসবের কারণেও তো সদ্যোজাতের মৃত্যু হতে পারে।” সে দিন সুপার তাঁকে জানান, ওই হাসপাতালে রোজ গড়ে পাঁচটি বাচ্চা মারা যায়। রবিরঞ্জনবাবুর প্রশ্ন, “তার মানে বছরে প্রায় ন’হাজার বাচ্চা মারা যাচ্ছে? এটা শুনেই আমি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি।”
গত ৬ জুলাই, বুধবার বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েই মেডিক্যালের সুপারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রবিরঞ্জনবাবু। কিন্তু সে দিন হিসেব বদলে যায়। রবিরঞ্জনবাবু বলেন, “ওই বৈঠকে সুপার জানান, রোজ গড়ে তিনটি শিশুর মৃত্যু হয়। পাঁচ দিনের তফাতে দু’রকম তথ্য পেয়ে আমি অবাক। ওঁকে বলেছি, অবিলম্বে গত পাঁচ বছরের শিশুমৃত্যুর পরিসংখ্যান দিন।” এ প্রসঙ্গে সুপার বলেন, “মন্ত্রী যেদিন এসেছিলেন, তার আগে পরপর ক’দিন পাঁচটি করে শিশু মারা গিয়েছিল। তাই গড়ে পাঁচটি শিশুর মৃত্যুর কথা বলেছিলাম। কিন্তু বার্ষিক গড় ধরলে দেখা যাচ্ছে, সংখযাটা তিন।” সুবোধবাবুর বক্তব্য, “আমাদের শিশু বিভাগে শীতে বা বর্ষায় গড়ে পাঁচটি শিশুর মৃত্যু হয়। কিন্তু বছরের অন্য সময়ে তত নয়। গোটা বছর ধরলে দৈনিক গড়ে তিনটি শিশুর মৃত্যু ঘটে।” এই শিশুমৃত্যুর হারকে ‘স্বাভাবিক’ আখ্যা দিয়ে সুপারের ব্যাখ্যা, “আমাদের এখানে প্রতি দিনই প্রায় ৬৫টি শিশু ভর্তি হয়। দূর-দূরান্ত থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বহু শিশুকে আনা হয়। ফলে ভর্তি হওয়ার ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে কয়েকটি শিশুর মৃত্যু ঘটে। বিভিন্ন হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে রাজ্যস্তরে যে গড় পাওয়া যায়, এখানে তার চেয়ে বেশি কিছু হয় না।” মন্ত্রী বলেন, “বিস্তারিত রিপোর্ট হাতে এলেই শিশুমৃত্যু কমাতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চাইব।”
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.