রেকর্ড বৃষ্টিতে জলমগ্ন শহর, শহরতলি
ক রাতে ‘রেকর্ড বৃষ্টি’ হওয়ার জেরে শুক্রবার প্লাবিত হল শিলিগুড়ি ও লাগোয়া জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। কোথাও ভাসল ঘরদোর। আবার কোথাও রাস্তা জলের তলায় চলে যাওয়ায় দিনভর হয়রান হলেন বাসিন্দারা। বিশেষত, ছাত্রছাত্রীরা পড়ল চরম দুর্ভোগে। ওই খবর পেয়ে সাতসকালেই বেরিয়ে পড়তে দেখা যায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ির বিভিন্ন প্লাবিত এলাকা চষে বেড়ান তিনি। যেখানে গাড়ি ঢোকার মতো অবস্থায় নেই সেখানে মোটর বাইকের পিছে বসে পৌঁছে গিয়েছেন। কখনও প্যান্ট গুটিয়ে জল থইথই রাস্তায় নেমে ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এমনকী, গত বর্ষায় যে এলাকায় জল জমার পরে দেখতে গিয়ে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন, সেখানে এবারও একই দশা দেখে ক্ষমা চাইতেও দেখা গিয়েছে গৌতমবাবুকে। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “গতবার তো মন্ত্রী ছিলাম না। বহু চেষ্টা করেও কাজ করাতে পারিনি।
শিলিগুড়ি পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের অশোকনগরে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব।
তবুও কথা দিয়েও রাখতে না-পারার জন্য ক্ষমা চাইছি। এবার সমস্যার সমাধান হবেই।” তার পরেই প্রশাসনিক অফিসারদের ডেকে সতর্ক করে দিলেন তিনি। মন্ত্রী বললেন, “নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হয়ে রয়েছে। হাইড্রেনগুলি পরিকল্পনামাফিক তৈরি করা হয়নি। বৃষ্টির জল বেরোতে না পেরে জমা হয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই পুরসভার সঙ্গে বৈঠক করেছি। সঠিক পরিকল্পনায় হাইড্রেন তৈরি করার জন্য তারা একটি ৭ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দিয়েছেন। জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে দিয়ে একটি সমীক্ষা করিয়ে হাইড্রেন তৈরির কাজে হাত দেওয়া হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বানভাসি মানুষের পাশে আমরা রয়েছি। প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন জায়গা কেটে দিয়ে জল বের হওয়ার রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণের দেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্পে তৈরি করতে বলা হয়েছে।” বৃহস্পতিবার রাতভর ১৮৭ মিমি বৃষ্টি হয় শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকায়। সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র দেবব্রত দত্ত বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে।” বৃষ্টির জলে পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যানগর, উৎপলনগর, নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি এলাকা, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের অশোকনগর, কাওায়াখালির পোড়াঝাড়, ফুলবাড়ির পশ্চিম ধনতলা, মাটিগাড়া, আঠারখাই এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমে প্রায় ২ হাজার বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। চরম অসুবিধেয় পড়তে সাধারণ বাসিন্দাদের। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা কিছু সময়ের জন্য চম্পাসারি মেন রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান।
মাটিগাড়া বালিকা বিদ্যালয়ে সামনে বৃষ্টিতে জমে গিয়েছে জল।
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “চম্পাসারিতে নিকাশির সমাধান পুরসভা করতে না-পারলে আমরা করব। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পুরসভার সঙ্গেও আমি কথা বলব। মহানন্দা এবং বালাসন-সহ ১২টি এলাকায় সেচ দফতর থেকে বাঁধ মেরামতির কাজে গতি আনার নির্দেশ দেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। বিধায়ক জলমগ্ন এলাকায় কাজের তদারকিও করেন। কংগ্রেস নেতা কৃষ্ণ সরকার জানান, পরিস্থিতি আয়ত্তে রয়েছে।

ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
Previous Story Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.