জামিন পেয়ে জেলের বাইরে রণবীর সেনা প্রধান বড়মেশ্বর
প্রায় তিনশো লোককে হত্যার পিছনে তাঁর প্রত্যক্ষ হাত আছে বলে অভিযোগ। গলায় গাঁদা ফুলের মালা ঝুলিয়ে এক গাল দাড়ি সেই মানুষটিই আজ আরা জেলের ফটক পেরিয়ে এসে বলে উঠলেন, “আমায় কি খুনির মতো দেখতে?” ইনিই গত দু’ দশক ধরে বিহারে বহু আলোচিত রণবীর সেনার প্রধান বড়মেশ্বর মুখিয়া। প্রায় ৯ বছর পরে জেল থেকে আজ মুক্তি পেলেন তিনি। ঘটনা হল, বড়মেশ্বরের নামে রুজু করা অধিকাংশ মামলাতেই পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ ও সাক্ষ্য জোগাড় করতে পারেনি।
সাত দিন আগেই বড়মেশ্বর তাঁর শেষ মামলায় পটনা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন। তার আগে তাঁর বিরুদ্ধে চলা ২২টি মামলার মধ্যে ইতিমধ্যেই ১৬টিতে যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে তাঁকে মুক্তি দিয়েছে আদালত। বাকি পাঁচটি মামলাতেও দাপুটে এই নেতা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। ভোজপুর জেলার পৌনা থানায় দায়ের অস্ত্র আইনের একটি মামলাতেও জামিন মেলায় আজ আরা জেল থেকে বেরিয়ে এলেন তিনি।
জেল থেকে বেরিয়ে বড়মেশ্বর। ছবি: জয় প্রকাশ
বড়মেশ্বর এ দিন মুক্তি পাচ্ছেন, এ কথা চাউর হতেই আরা জেলের বাইরে ভিড় জমে যায়। বড়মেশ্বর জেল থেকে বেরোতেই অপেক্ষমান জনতা ‘বড়মেশ্বর মুখিয়া জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিতে থাকে। বিজেপির কয়েক জন নেতাও এ দিন সেখানে গিয়েছিলেন। যদিও বিজেপি সূত্রে ব্যাপারটা অস্বীকার করা হয়েছে। জেল থেকে বেরিয়ে বড়মেশ্বর সোজা চলে যান ভোজপুরের খোপিরা গ্রামের বাড়িতে। তার আগে বলে যান, “আমি নির্দোষ। গণহত্যার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্কই নেই। ও-সব রণবীর সেনা ঘটিয়েছে।”
বড়মেশ্বর মুখিয়ার বিরুদ্ধে প্রায় ৩০০ লোককে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। এদের বেশির ভাগই দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। যে ছ’টি মামলা এখনও তাঁর বিরুদ্ধে ঝুলছে, তার মধ্যে সব থেকে বড় মামলাটি হল, ১৯৯৬ সালের বাথানি-টোলা গণহত্যা মামলা। অভিযোগ, সোনে ২১ জন দলিতকে হত্যা করেছিল রণবীর সেনা। তবে সব থেকে বড় গণহত্যার মামলাটি হল, ১৯৯৭ সালের ১ ডিসেম্বর লক্ষ্মণপুর-বাথের ঘটনা। ৬১ জন দলিত নিহত হয় ওই হামলায়।
মহিলা-শিশু-সহ কাউকে রেহাই দেয়নি রণবীর সেনা। ঘটনা হল, এই সব মামলার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বড়মেশ্বরের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ এবং সাক্ষ্যই জোগাড় করতে পারেনি পুলিশ। আর এই বিষয়টি তুলে পুলিশ এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজ্যের অন্যতম বিরোধী দল এবং ওই সময়ে রণবীর সেনার প্রধান প্রতিপক্ষ সিপিআইএম-এলের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।
বড়মেশ্বর মুখিয়া মুক্তি পাওয়ার খবর শোনার পরে চেন্নাই থেকে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য আজ বলেন, “আমাদের নেতাদের টাডা মামলায় ফাঁসিয়ে সরকার জেলে ঢুকিয়েছে। আর যারা সত্যি গণহত্যার অপরাধী, তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড়ের কোনও চেষ্টাই করেনি। সাক্ষীদের যথেষ্ট নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হয়নি। শুধু বড়মেশ্বর মুখিয়ার বিরুদ্ধেই নয়, এই ঘটনা ঘটেছে কুখ্যাত বাহুবলী সিওয়ানের শাহবুদ্দিনের ক্ষেত্রেও। সাক্ষী আমাদেরই জোগাড় করতে হয়েছে।”
Previous Story Desh Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.