নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় চার্জগঠন শুরু
দুর্নীতি নিয়ে দলীয় তদন্তের মুখে পড়ে বিদ্রোহ করায় তাঁর ব্যাপারে ধীরে চলো নীতি নিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। তাতে কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেরেও এ বার নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় বিড়ম্বনায় পড়লেন সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠ। মঙ্গলবার তমলুকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতে ওই মামলার চার্জগঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। লক্ষ্মণবাবু ছাড়াও অমিয় সাহু, অশোক গুড়িয়া, তপন ঘোষ, সুকুর আলির মতো সিপিএম নেতারা এই মামলায় অভিযুক্ত। আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবী আব্দুল মোহিত বলেন, “নন্দীগ্রামে ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর সিপিএমের সশস্ত্র হামলার পরে ৬ জন নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের প্রক্রিয়া আজ শুরু হল।”
লক্ষ্মণবাবুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তে এসে কিছু দিন আগেই তমলুকে লক্ষ্মণ অনুগামীদের চরম বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন রবীন দেব-সহ সিপিএমের রাজ্য স্তরের তিন নেতা। তারপর এ দিনই প্রথম জেলায় পা রাখলেন লক্ষ্মণবাবু। তবে সাংবাদিকদের সামনে তিনি মুখ খোলেননি। প্রশ্ন এড়িয়ে গাড়িতে উঠে যান। এ দিনও আদালত চত্বরে লক্ষ্মণ-অনুগামীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। লক্ষ্মণবাবু-সহ অভিযুক্তদের আইনজীবী শাহিদ ইমাম বলেন, “আমরা প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে আবেদন করব।”
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতে লক্ষ্মণ শেঠ। —নিজস্ব চিত্র।
সিপিএমের নন্দীগ্রাম ‘পুনর্দখল’ অভিযানের সময় ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির মিছিলে নির্বিচাল গুলিবর্ষণে অনেকে জখম হন। ৬ জনের খোঁজ মেলেনি। সেই মামলাতেই অভিযুক্ত ৮৮ জনের মধ্যে জামিনপ্রাপ্ত ও জেল হেফাজতে থাকা ৭১ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের জন্য এ দিন তমলুক আদালতে শুনানি ছিল। তমলুকের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ, প্রাক্তন বিধায়ক অমিয় সাহু, খেজুরির সিপিএম নেতা হিমাংশু দাস, বিজন রায়, পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার সিপিএম নেতা তপন ঘোষ, সুকুর আলি, কেশপুরের এন্তাজ আলি-সহ মোট ৫৫ জন অভিযুক্ত আদালতে হাজির হয়েছিলেন। অসুস্থতা-সহ নানা কারণে জামিনপ্রাপ্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে এখন চার্জগঠন হচ্ছে না।
বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ জেলা ও দায়রা বিচারক মধুমতি মিত্রের এজলাসে উপস্থিত ৫৫ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধেই চার্জগঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সরকারপক্ষের আইনজীবী শক্তিকুমার ভট্টাচার্য ও সরকারপক্ষের আইনজীবী আব্দুল মোহিত ৮৮ জন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় আনা অভিযোগ পড়ে শোনান। সিআইডি নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলার তদন্ত করে অভিযুক্ত সিপিএম নেতাদের বিরুদ্ধে খুন, খুনের ষড়যন্ত্র, বেআইনি জমায়েত, সশস্ত্র আক্রমণ, অপহরণ, তথ্য প্রমাণ লোপাট প্রভৃতি ধারা এনেছে। নব সামন্ত ও মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে বেআইনি অস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ দিন অভিযোগ পড়ে শোনানোর পরে অভিযুক্তদের তরফে আবেদনে বলা হয়, “এখানে আমরা বিচার পাব না। এখানে পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে।” তবে অভিযুক্ত পক্ষের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। মামলায় চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া চালানোর জন্য আজ, বুধবার ফের ৫৫ জন অভিযুক্তকে জেলা আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশও দেন বিচারক।
২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় ৮৮ জনের বিরুদ্ধে হলদিয়া মহকুমা আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিল সিআইডি। ওই বছরই ১৭ মার্চ মুম্বইয়ের চেম্বুর থেকে লক্ষ্মণ শেঠ, অমিয় সাহু, অশোক গুড়িয়াকে গ্রেফতার করা হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.