পুরপ্রধানকে চিঠি দিয়ে পানীয় জলের দাবিতে পুরসভার সামনে অনশনে বসার হুমকি দিলেন কবি নির্মল হালদার। পুরুলিয়া শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের চকবাজার-সন্দেশগলি এলাকার বাসিন্দা নির্মলবাবুর অভিযোগ, ওই এলাকার পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা টানা কয়েক মাস অকেজো হয়ে রয়েছে। পুরসভায় একাধিকবার বলেও কোনও সুরাহা হয়নি। নিরুপায় হয়ে তিনি অনশনে বসবেন বলে ঠিক করেছেন।
পুরপ্রধানকে লেখা চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, সন্দেশগলিতে পুরসভার পানীয় জলের সরবরাহ ব্যবস্থা দীর্ঘ আট মাস ধরে কার্যত অকেজো। ফলে, বাসিন্দারা পানীয় জলের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অতীতে বেশ কয়েক বার লিখিত অভিযোগ ও আবেদন করা সত্ত্বেও তাঁরা সুফল পাননি। এমনকী এলাকার বিধায়কের কাছে আবেদন জানিয়েও কাজ হয়নি। চিঠিতে নির্মলবাবু লিখেছেন, “এই প্রেক্ষিতে আপনি (পুরপ্রধান) শীঘ্রই কোনও ব্যবস্থা না নিলে আমি এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে পুরসভার সামনে অনশনে বসতে বাধ্য হব।”
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পুরসভার পানীয় জলের যে কল রয়েছে, তাতে জল পড়ে সুতোর মতো। এক বালতি জল ভরতে মিনিট কুড়ি সময় লাগে। পুরসভার একটি নলকূপ ছিল। সেটি থেকে জল পাওয়া যেত। নলকূপটিও কিছুদিন বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। পুরসভায় বলেও কোন কাজ হয়নি। আর পাশের পাড়ায় যদিও বা কলে জল মিলছে, সেখান থেকে জল নিতে গেলে বাধা আসছে। স্থানীয় বাসিন্দা বাপি কর্মকার, নির্মল জৈন, প্রশান্ত দাসদের বক্তব্য, “গরমের সময় তো এমনিতেই জল কমে যাবে। এই অবস্থায় জল সংগ্রহ করতে আমরা কোথায় যাব?” নির্মলবাবুর কথায়, “শহরে ভারীরা বাড়ি বাড়ি টিনে করে জল পৌঁছে দেয়। দু’টাকা টিন প্রতি নেয়। এত দিন ওই দামেই জল মিলছিল। এ বার গরমের সময় আসছে। এখন দু’টিনের জন্য তারা ৮-১০ টাকা দাম হাঁকছে। বলছে গরমের সময় ওই দামের কমে পোষাবে না। অবস্থা কি এই জায়গায় পৌঁছে যাবে যে পুর এলাকার বাসিন্দা হয়ে পানীয় জলটুকুও পাব না। এখন অনশনই শেষ রাস্তা। সেকথাই পুরপ্রধানকে জানিয়েছি।”
কয়েক দিন আগে শহরবাসীর পুর-পরিষেবার দাবিতে বিরোধী দল কংগ্রেস পুরসভার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেছিল। সেখানেও দাবিগুলির অন্যতম ছিল পানীয় জল। তাদের অভিযোগ ছিল, পুরসভা নিবার্চনের আগে প্রতিশ্রুতি ছিল, শহরে পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হবে। কিন্তু, কিছুই হয়নি। গোটা শহর জুড়ে পাইপলাইন পাতার কাজ চললেও জল মিলবে কবে, জানা নেই। নির্মলবাবুর আবেদনের প্রেক্ষিতে পুরুলিয়ার পুরপ্রধান, তৃণমূলের তারকেশ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ঐ ওয়ার্ডে জলের সমস্যার বিষয়টি দেখছি। |