হুগলি-চুঁচুড়া
আদালতের নির্দেশে হোটেল ভেঙে দিল পুরসভা
বেআইনি ভাবে জলাশয় বুজিয়ে তৈরি হয়েছিল হোটেল। আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার সকালে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলপুকুরে বুলডোজার চালিয়ে সেই নির্মাণ ভেঙে দিল পুরসভা।
পুরসভা সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে অলোক পাঠক নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ফুলপুকুরে প্রায় ২ বিঘা জমি কেনেন। ওই জমিতেই প্রায় ১০ কাঠা আয়তনের একটি ডোবা ছিল। আশপাশের কয়েকটি ওয়ার্ডের নিকাশি নালার জল সেখানে এসে পড়ত।
কাজে নেমেছে বুলডোজার। ছবি: তাপস ঘোষ।
অভিযোগ, বছর ন’য়েক আগে নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে রাতারাতি জলাশয়টি ভরাট করে ফেলেন ওই ব্যবসায়ী। চারদিকে উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। ফলে ১৮, ১৯ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা বেকায়দায় পড়েন। বিষয়টি প্রশাসনের নানা মহলে জানানো হয়। কিন্তু সমস্যা না মেটায় আদালতের দ্বারস্থ হন এলাকাবাসী।
বছর তিনেক আগে ওই জমিতে পুরোদস্তুর একটি হোটেল তৈরি হয়ে যায়। রমরমিয়ে চলতে থাকে সেটি। বর্তমান তৃণমূল পুরবোর্ডও ওই নির্মাণের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে। জেলাশাসক, ভুমি ও ভূমি সংস্কার দফতর-সহ নানা জায়গায় বিষয়টি জানায় তারা। পুরসভার তরফে আদালতে পৃথক মামলাও করা হয়। কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, বেআইনি ভাবে জলা ভরাট করে ওই নির্মাণ করা হয়েছে। সেটির ব্যাপারে পুরসভাকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। দেশের সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টে মামলা ফেরত পাঠায়। তারা আগের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। পুরসভা সূত্রের খবর, গত ২০ ফেব্রুয়ারি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে ওই নির্মাণ ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে পুরপ্রধান, উপপ্রধান এবং একাধিক কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে ওই নির্মাণ ভাঙা হয়। বিশাল পুলিশবাহিনীও ছিল। এ জন্য সকাল থেকে কার্যত বন্ধ হয়ে যায় শহরের মূল প্রবেশপথ ফুলপুকুর রোড। দুপুর পর্যন্ত চলে ভাঙার কাজ। পুর-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, শুধু জলা বোজানোই নয়, কোনও রকম অনুমতি ছাড়াই সেখানে গভীর নলকূপের মাধ্যমে জল তোলা হত। এমনকী, হোটেল চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্সও ছিল না।
পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, “বোর্ড মিটিংয়ে ওই নির্মাণ ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিএলএলআরও দফতরও ওই নির্মাণ ভেঙে আগের জলাশয় ফিরিয়ে দিতে বলে। যা খরচ হবে, হোটেল কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে।” হুগলি-চুঁচুড়ার বিএলএলআরও বীরেন্দ্রনাথ দাস বলেন, “ওই বেআইনি নির্মাণ ভাঙার বিষয়টি নজির সৃষ্টি করল।” হোটেল মালিকের স্ত্রী রাধারানি পাঠক জানান, হোটেল ভাঙার খবর শুনেই স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “আগাম কিছু না জানিয়ে ভেঙে দেওয়া হল। রাজনীতির শিকার হলাম।” জলা ভরাটের প্রশ্ন এড়িয়ে বলেন, “বাস্তু জমির উপরেই নির্মাণ হয়েছিল।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.