কাশ্মীরে ফের ঝঞ্ঝা-বার্তায় শীত বিদায় অনিশ্চিত বঙ্গে
পুরোদস্তুর শৈত্যপ্রবাহ না-বইলেও দক্ষিণবঙ্গে শীতের দাপট অব্যাহত। কলকাতা-সহ রাজ্যের অধিকাংশ জেলায় বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের ৪-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে ছিল। কলকাতা-সহ কিছু জায়গায় দিনের তাপমাত্রাও ছিল স্বাভাবিকের কম। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। তবে রাতে ভালই ঠান্ডা মালুম হবে।
কিন্তু ফাল্গুনে ফিরে আসা এই শীত রাজ্য থেকে পুরোপুরি বিদায় নেবে কবে, আবহবিদেরা এ মুহূর্তে তার আঁচ দিতে পারছেন না। কারণ, কাশ্মীরে নতুন একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার আগমনী শোনা গিয়েছে। সেটি উত্তর ভারত থেকে পূর্বমুখী গতিপথ বজায় রাখলে এ রাজ্যে ‘ফাল্গুনী’ শীতের স্থায়িত্ব দীর্ঘায়িত হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
উচ্চচাপের গুঁতোয় মাঘ মাসে উত্তুরে হাওয়া দক্ষিণবঙ্গ থেকে পাততাড়ি গুটিয়েছিল। সেই ফাঁকে পরিমণ্ডলে দখিনা বাতাস ঢুকে পড়ে। কিন্তু ফাল্গুন পড়তে না-পড়তেই ফের শীত এসে হাজির হয়েছে প্রবল পরাক্রমে। এ জন্য ইউরোপ, আমেরিকা-সহ বিশ্বের নানা প্রান্তের অস্বাভাবিক আবহাওয়ার দিকে আঙুল তুলছেন বিশেষজ্ঞেরা। অতলান্তিক-ভূমধ্যসাগরে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের দরুণ একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ইরান-আফগানিস্তান-পাকিস্তান হয়ে কাশ্মীরে এসে আছড়ে পড়ছে। যার জেরে কাশ্মীর-হিমাচল-উত্তরাখণ্ডে বৃষ্টি ও তুষারপাত চলছে একটানা। তামাম উত্তর ভারত জুড়ে কনকনে ঠান্ডা বিরাজ করছে। আর উচ্চচাপ বলয়ের বাধা কেটে যাওয়ায় বরফছোঁয়া সেই হাড়-হিম বাতাসই দক্ষিণবঙ্গে ঢুকে শীত ফিরিয়েছে। রাতের তাপমাত্রা এক লাফে নেমে গিয়েছে অনেকটা। আলিপুর আবহাওয়া হাওয়া অফিসের খবর, মঙ্গলবার বীরভূমের কিছু এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ বয়েছিল। (সাধারণত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের অন্তত পাঁচ ডিগ্রি কমে গেলে শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে সে ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নীচে থাকতে হবে) এ দিকে উত্তুরে হাওয়ার রমরমায় গত দিন তিনেক দিনের তাপমাত্রাও বাড়তে পারেনি। তাই ভরদুপুরেও শীতের আঁচ পুইয়েছে বঙ্গবাসী।
এ দিন কলকাতায় সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ১৩.৪ ডিগ্রি ও ২৫.৫ ডিগ্রি। দু’টোই এ সময়ের স্বাভাবিকের তুলনায় ৫ ডিগ্রি কম। দ্বিতীয় ইনিংসে শীতের এ হেন ঝোড়ো ব্যাটিং চলবে ক’দিন?
আলিপুর হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “আগামী দিন তিনেক চলবে। বৃহস্পতিবারে হয়তো দিনের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে। যদিও রাত ও ভোরে ঠান্ডা থাকবে যথেষ্ট।”
বস্তুত শীত পুরোপুরি বিদায় নেবে কবে, সে সম্পর্কে আবহবিদেরা অন্ধকারে। উত্তর ভারতে এখনও শীতের কামড় আলগা হয়নি। উত্তরপ্রদেশের কোথাও কোথাও শৈত্যপ্রবাহ চলছে। তার প্রভাব পড়েছে বিহার-ঝাড়খণ্ডে, সেখানেও অনেক জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ। মৌসম ভবনের খবর, কাশ্মীরের উপরে এখন একটা পশ্চিমী ঝঞ্ঝা রয়েছে। সেটি উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যাওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু আগামি কাল, শুক্রবার নতুন একটা ঝঞ্ঝা উপত্যকায় আছড়ে পড়তে পারে। যে কারণে কাশ্মীর ও আশপাশে ইতিমধ্যে বৃষ্টি-বরফের পূর্বাভাস জারি হয়েছে। উত্তর ভারতেও নতুন করে বৃষ্টি নামতে পারে। সেটি অন্য দিকে চলে গেলে এখানে ঠান্ডার প্রকোপ কমবে। তবে নয়া ঝঞ্ঝা যদি তার চেনা গতিপথ বজায় রাখে, অর্থাৎ উত্তর ভারত দিয়ে বিহার-ঝাড়খণ্ড হয়ে পূর্ব ভারতে ঢুকে পড়ে, তা হলে বঙ্গভূমিতে অকাল শীতের মেয়াদও দীর্ঘায়িত হতে পারে বলে আবহবিদেরা জানিয়ে রাখছেন।
অর্থাৎ কাশ্মীরের নতুন ঝঞ্ঝা কোন দিকে বয়ে যায়, তার উপরে অনেকটাই নির্ভর করছে বাংলার শীত-ভাগ্য।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.