কামদুনি-কাণ্ডের প্রতিবাদে আট মাস আগে প্রবল বৃষ্টির শহরে রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করেছিল বামপন্থী চারটি ছাত্র সংগঠন। সেই মিছিলের জন্যই আইন ভেঙে পুলিশের খাতায় ‘ফেরার’ এসএফআই-এর তিন নেতা-নেত্রী ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবজ্যোতি দাস ও মধুজা সেন রায়! তার মধ্যে ঋতব্রত রাজ্যসভার প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়ে বিধানসভায় ভোটে জিতে বিজয়ীর শংসাপত্রও নিয়ে নিয়েছেন! তবু আইনের গেরোয় পড়ে এবং দলের নির্দেশে আজ, বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে আত্মসমর্পণ করতে হচ্ছে তাঁদের!
কলকাতায় বাম ছাত্রদের ওই মিছিল হয়েছিল গত বছরের ১৩ জুন। বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশের দিন (৯ ফেব্রুয়ারি) আচমকাই পুলিশের তরফে যোগাযোগ করে ছাত্র-নেতাদের জানানো হয়, ওই তিন জনের পাশাপাশি এআইএসএফের পার্থ মুখোপাধ্যায়, পিএসইউ-এর মৃণ্ময় সেনগুপ্ত এবং প্রসেনজিৎ দাসের নামে হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ হয়েছে। সেই মামলার ব্যাপারে আদালতে তাঁদের হাজিরা দিতে হবে। ঘটনা হল, ওই মিছিলের দিন বক্তা ছিলেন ছাত্র ব্লকের বিশ্বজিৎ মাইতি। কিন্তু মামলা হয়েছে প্রসেনজিতের নামে, যিনি ঘটনাস্থলে ছিলেনই না! তলব পেয়ে বুধবার আদালতে গিয়ে ঋতব্রত, দেবজ্যোতিরা দেখেন, তাঁদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়ে ‘ফেরার’ তকমা পড়ে গিয়েছে! সিপিএম নেতৃত্বকে তাঁরা বিষয়টি জানানোর পরে তাঁদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। ওই একই দিনে কামদুনি নিয়েই মহাকরণে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার জেরে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে মহিলা আন্দোলনের কিছু কর্মীর নামেও।
বিষয়টি বিধানসভায় তুলেছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি বলেন, “অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিয়েছে পুলিশ! মিছিল করার অপরাধে যাদের নামে মামলা হয়েছে, তারা কেউ অপরাধী নয়! তবু আইনি প্রক্রিয়া মেনে ওদের আদালতে যেতে হবে।” পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, মিছিলের অনুমতি সে দিন ছিল না। তা ছাড়া, ১৪৪ ধারা ভাঙার জন্যই জামিনযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে। তবে ‘ফেরার’ দেখানো হল কেন, তার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। |