হাতে পাওয়া সত্ত্বেও খননের কাজ শুরু করতে দেরি করায় বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার হাত থেকে ৩১টি কয়লা ব্লক ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। যার ফলে দেশের পরিকাঠামো শিল্পে বিনিয়োগ টানার ক্ষেত্রে নতুন করে অনিশ্চয়তার মেঘ ঘনাতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
কেন্দ্রের দাবি, ব্লক পাওয়া সত্ত্বেও খনন শুরু করতে দেরি হয়েছে। তাই এই বহুমূল্য প্রাকৃতিক সম্পদকে এ ভাবে ফেলে না-রেখে, বরাবরের মতোই তা ফিরিয়ে নেওয়ার পথে হেঁটেছে তারা। কিন্তু সংস্থাগুলির পাল্টা যুক্তি, উৎপাদন শুরু করার জন্য যে ছাড়পত্র দরকার, তা দিতে দেরি করছে খোদ সরকারই। ফলে এই দেরির দায় তাদের নয়। বরং হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া তাদের আর কিছু করার ছিল না। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিনিয়োগ এমনিতেই বাড়ন্ত। তার উপর বুধবার কেন্দ্র ও শিল্পের মধ্যে এই চাপান-উতোরে নতুন করে লগ্নি আসা আরওই অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলে তাঁদের আশঙ্কা। বিশেষত যেখানে ইতিমধ্যেই কিছুটা হলেও উৎপাদনের তোড়জোড় শুরু করেছিল টাটা গোষ্ঠী, জিন্দলরা। |
মঙ্গলবারই কেন্দ্র জানিয়েছিল যে, বণ্টিত হওয়ার পরও গত ১০ বছরে যে ব্লকগুলিতে কয়লা তোলা শুরু হয়নি, সেগুলি ফিরিয়ে নেওয়া হবে। এ দিন কয়লা মন্ত্রকের মুখপাত্র এন সি জোশী জানান, বেশ কিছু সংস্থার কাছে ইতিমধ্যেই নোটিস পাঠানো হয়েছে। বাকিদেরও জানানো হবে।
তবে এই সিদ্ধান্তে বিপুল লগ্নি-পরিকল্পনা অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় ইতিমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হতে শুরু করেছে সংস্থাগুলি। টাটা গোষ্ঠী দক্ষিণ আফ্রিকার সাসোল-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ১০০০ কোটি ডলার লগ্নির পরিকল্পনা করেছিল। প্রকল্পটি ছিল নিম্ন মানের কয়লা থেকে তেল তৈরির। ওড়িশার দু’টি কয়লা ব্লক পায় তারা। এই যৌথ উদ্যোগ সংস্থা এ দিনই ব্লক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে। আদালত কেন্দ্রকে বিষয়টি নিয়ে আপাতত না-এগোনোর নির্দেশও দিয়েছে বলে জানান সংস্থার মুখপাত্র। দাবি, “ছাড়পত্রের অপেক্ষায় ছিলাম।”
জিন্দল স্টিলও ওড়িশায় টাটাদের মতোই কয়লা থেকে তেল তৈরির প্রকল্পে নেমেছে। প্রস্তাবিত লগ্নি হাজার কোটি ডলার। যার ১.২০ কোটি খরচ হয়েছে ইতিমধ্যেই। চেয়ারম্যান নবীন জিন্দল (যিনি আবার কংগ্রেস সাংসদ) এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আদালতে টেনে নিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। ক্ষুব্ধ বাকি সংস্থাগুলিও। |