|
|
|
|
|
|
|
উদার হয়ে গেল সীমাটাই |
চারুকলায় খোলা হাওয়া |
গ্যালারির ঠান্ডা ঘর, কঠিন এবং নরম পানীয়, মাপা হাসি আর চাপা কান্না। বাঙালির শিল্পদুনিয়া মোটের ওপর এই পরিবেশেই সীমাবদ্ধ। মাঝে মাঝে সেখানেও লাগে খোলা হাওয়া। রবীন্দ্রসদন-নন্দন প্রাঙ্গণে ‘সরকারি চারুকলা উৎসব’ বেশ কয়েক বছর ধরেই তেমনই একটা উদ্যোগ। কিন্তু এ বার তাতে অনেক বদল, অনেক নতুন। খোলা হাওয়া যে একেবারে দম আটকে যায়নি তার প্রমাণ ‘কার্টুন দল’। শহরের কার্টুনিস্টদের নবগঠিত এই দল শুভেন্দু দাশগুপ্তের আহ্বানে ‘পশ্চিমবঙ্গ চারুকলা উৎসব ২০১৪’-র উদ্যোগ পর্বেই প্রশ্ন তুলেছিল, চারুকলা মেলায় কার্টুন কেন জায়গা পাবে না? নানা মহলে কিঞ্চিৎ সংশয় ছিল, কার্টুন! আবার সে আসিবে ফিরিয়া! কিন্তু না, সরকারি চারুকলা মেলাতেই দিব্য তূণ সাজিয়ে বসেছে চণ্ডী লাহিড়ী, অমল চক্রবর্তী, অনুপ রায়, দেবাশিস দেব, উপল সেনগুপ্ত, উদয় দেব এবং ঋতুপর্ণ বসুর তুলি-কালি-কলম। এঁদের করা পোস্টার (সঙ্গের ছবি), কার্টুন-ফোল্ডার জায়গা পেয়েছে মেলায়। শুধু কার্টুনই কেন, ‘চারুকলা’র সীমাটাই আরও উদার এই উৎসবে (১৪-২৩ ফেব্রুয়ারি)। |
|
চিত্রকলা-ভাস্কর্য তো বটেই, ছাপচিত্র, আলোকচিত্র, নিউ মিডিয়া আর্ট, স্থাপত্য এমনকী কিছু হস্তশিল্পের পশরাও থাকছে। থাকছে নানা আলোচনাসভা। বাংলা আকাদেমিতে ‘ইন ডিফেন্স অব দ্য মডানর্র্’ প্রসঙ্গে বললেন অশোক বাজপেয়ী। শিশির মঞ্চে ১৮ ফেব্রুয়ারির সেমিনারের বিষয় বিভিন্ন শিল্পমাধ্যমের আন্তঃসম্পর্ক। বলবেন বিভাস চক্রবর্তী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সুমন মুখোপাধ্যায়, তপন ভট্টাচার্য, শর্মিলা বিশ্বাস, রুচিরা পান্ডা। অবনীন্দ্র সভাঘরে দেখানো হবে নানা তথ্যচিত্র। মুক্তমঞ্চে গানের অনুষ্ঠানও এ বার শিল্পিত স্বভাব। নিছক রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে যাওয়া নয়, অসিতকুমার হালদার, নন্দলাল বসু, নবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা কয়েকটি ছবি জড়িয়ে আছে যে সব গানের সঙ্গে, সেগুলি গাইলেন শর্মিষ্ঠা দত্ত পাঠক। উৎসবে প্রকাশিত হয়েছে যামিনী রায়ের ছ’টি ছবির বড় অ্যালবাম এবং প্রদোষ দাশগুপ্ত, ধীরেন্দ্রনাথ ব্রহ্ম, বিকাশ দেবনাথের মোনোগ্রাফ। উৎসবের আয়োজক ‘রাজ্য চারুকলা পর্ষদ’। ডান দিকে তারই ক্যাটালগ-এর প্রচ্ছদ।
|
বিস্মৃত শিল্পী |
জন্ম শান্তিপুরে, কিন্তু ছোটবেলা থেকেই লখনউ-প্রবাসী। শিল্পশিক্ষা প্রথমে সেখানেই, আর্ট স্কুলে শিক্ষকতাও। কিন্তু জলপানি নিয়ে ইংল্যান্ডে রয়্যাল কলেজ অব আর্টে শিক্ষা অন্য জগতের দরজা খুলে দিয়েছিল ললিতমোহন সেন-এর (১৮৯৮-১৯৫৪) কাছে। পরে দিল্লির ভাইসরিগাল হাউস বা লন্ডনের ইন্ডিয়া হাউস অলংকরণে যুক্ত ছিলেন তিনি। লরেন্স বিনিয়নের অনুরোধে অনুলিপি করেন বাগ গুহার ছবি। পাশ্চাত্য অ্যাকাডেমিক ঘরানার সঙ্গে অবনীন্দ্র-নন্দলালের শৈলীতে বহু কাজ করেছেন। লখনউ সরকারি আর্ট কলেজের প্রিন্সিপাল ললিতমোহনের শিল্পীসত্তা বিকশিত হয়েছিল বহু বিচিত্র মাধ্যমে। লিনোকাট (সঙ্গের ছবি), উডকাট, এচিং, এনগ্রেভিং, কাপড়ের নকশা, শাড়ির ডিজাইন, বিজ্ঞাপনের পোস্টার, নিসর্গদৃশ্য, প্রতিকৃতি, স্কেচ (বিশেষত হিমাচল, গাড়োয়ালের ছবি) কত কী সঞ্চিত রয়েছে তাঁর পারিবারিক সংগ্রহে। চমৎকার আলোকচিত্রী ছিলেন তিনি, বহু প্রদর্শনীতে ছবি দেখিয়েছেন। এই সব কিছু মিলিয়েই শিল্পীকে খুঁজতে চেয়েছেন দেবদত্ত গুপ্ত, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল-এ আজ শুরু হচ্ছে তাঁর কিউরেট করা প্রদর্শনী ‘আনর্যাভেলিং আ মডার্ন মাস্টার: দি আর্ট অব ললিতমোহন সেন’। সন্ধে ৬টায় সূচনা করবেন তপতী গুহঠাকুরতা, বলবেন দেবদত্ত গুপ্তও।
|
সুমনে সুমনে |
সুমনে দেখা করো সকলে। এ বইয়ের (সুমনে সুমনে: অন্তরঙ্গ কথোপকথন, সপ্তর্ষি, ২০০.০০) ডাক এটাই। কোন সুমন? সুমন চট্টোপাধ্যায়, কবীর সুমন। গানের সুমন, রাজনীতির সুমন, মনের সুমন, শরীরেরও। এই এত সুমন, একের সঙ্গে কখনও যার অন্যের বিরোধ, তাঁর সঙ্গে এ বইয়ে সুমন দে মারফত দেখা করার শর্ত একটাই, মগজে কারফিউ থাকলে চলবে না। দীর্ঘ, অতি দীর্ঘ কথোপকথনের এ বইয়ের কয়েকটি সুমন উবাচ অতঃপর পড়া যাক। ‘আমার চেয়ে বেশি রাবীন্দ্রিক গীতিকার বাংলায় আসেনি তবে কোথাও কোথাও রবীন্দ্রনাথকে আমি অতিক্রমও করেছি।’ ‘মঞ্চে যতটা রাগ দেখিয়েছি ততটা রাগিনি, অত রাগলে শরীর খারাপ হত। ওটুকু অভিনয়!’ ‘বামপন্থী বা তৃণমূলি নয়, কংগ্রেসিদের সঙ্গে কথা বলতেই সবচেয়ে ভালো লাগে।’ ‘প্রেম করে বড্ড সময় নষ্ট হয়’। সুমন দে-র নেওয়া নানা সাক্ষাৎকার, দুটি লেখা এবং এবিপি আনন্দের ‘বিবেক বনাম দল’ অনুষ্ঠানের ট্রান্সক্রিপ্ট নিয়ে এ বই জমে উঠেছে দেবাশীষ দেবের প্রচ্ছদ (সঙ্গের ছবি) ও অলংকরণে।
|
রবীন্দ্রভারতী উৎসব |
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির ঠাকুরদালানে রবীন্দ্রনাথ ‘বাল্মিকী প্রতিভা’ মঞ্চস্থ করেছিলেন। নিজে অভিনয়ও করেন সেটিতে। বাংলার নবজাগরণের বহু স্মৃতিবিজড়িত এই দালানেই ১৯-২১ ফেব্রুয়ারি ‘রবীন্দ্রভারতী উৎসব’। উদ্বোধনে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন ও বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম। সূচনায় স্বাভাবিক ভাবেই রবীন্দ্রসঙ্গীত, পরিবেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন শিক্ষার্থী মনোময় ভট্টাচার্য ও ওপার বাংলার ফাহিম হোসেন চৌধুরী। দ্বিতীয় সন্ধ্যায় প্রথমে ভায়োলিন ব্রাদার্সের উপস্থাপনা, পরে কিংবদন্তি শিল্পী হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া। শেষ সন্ধ্যায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কয়্যার-- পরিচালনায় উস্তাদ আলি আকবর খাঁ, তিমিরবরণ ও সলিল চৌধুরীর শিষ্য তথা রবীন্দ্রভারতীর শিক্ষক গৌতম ঘোষ। শেষে থাকছে দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের আবাসিকদের নৃত্যনাট্য, পরিচালনায় চিরন্তন ভাদুড়ী। এ দিকে কবির নোবেলপ্রাপ্তির শতবর্ষে গত মাসেই জোড়াসাঁকোয় শুরু হল বিশেষ বক্তৃতামালা, আশিস নন্দী-র পর ১৮ ফেব্রুয়ারি শেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলবেন বাংলার দলিত আত্মচরিত নিয়ে। রবীন্দ্রনাথ ও ভারতীয় সংস্কৃতির এই ধারাবাহিক চর্চা বিশ্ববিদ্যালয় শব্দবন্ধটির সমার্থক হতে সাহায্য করবে রবীন্দ্রভারতীকে।
|
বাংলা রক |
মাত্র ৯ ফুট বাই ৯ ফুট। এ বারের বইমেলায় ‘বাংলা রক’-এর স্টলটি এক কথায় পকেট সাইজ পাওয়ার হাউজ। রূপম ইসলামের সম্পাদনায় বাংলা রক ম্যাগাজিন নামে একটি দ্বিমাসিক মিউজিক জার্নালকে ঘিরে এই স্টল। গত জুলাইয়ে ম্যাগাজিনটির জন্ম। ব্যান্ডের গান, মূলত রক গান নিয়ে। ওপার বাংলার রকের হালহদিসও থাকে। উদ্যমী ছেলেমেয়েদের রঙ-তুলি-কাগজেই সেজে উঠেছিল স্টল। মেলায় সামনের উঠোনকে মঞ্চ করে অনেক ব্যান্ড অনুষ্ঠান করেছে। সমাপ্তিতে রূপমের নেতৃত্বে বাংলা রক টিম এবং নতুন ব্যান্ডরা গানের তালে তালে হাততালি দিয়ে মেলার মাঠ ঘুরে এ বারের মতো বইমেলা থেকে বিদায় নিল।
|
কাঁদনচাপা |
মুসলিম অন্দরমহলের জীবন্ত চালচিত্র বিয়ের গীত— সেখানে পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ, ফলে এই গানগুলোর বিরুদ্ধে ছিল ফতোয়া। সম্প্রতি বেশ কিছু পেশাদার বিয়েগাউনি এই সব গান প্রকাশ্যে পরিবেশন করছেন ওপার বাংলা আর এপারের রাঢ় অঞ্চলে। বর্ধমানের রত্না রশীদ দীর্ঘদিনের শ্রমে চার খণ্ডে প্রকাশ করেছেন এই সব গান। সেখানে মজা আর আমোদের তলায় মেয়েদের কান্না আর হাহাকার জীবন্ত হয়ে ওঠে। এই আধারেই সম্প্রতি চন্দন সেনের নাটক ‘বিয়েগাউনি কাঁদনচাপা’। অশোক মুখোপাধ্যায়ের মেধাদীপ্ত প্রয়োগ ও তপন রায়ের সংগীত পরিচালনায় থিয়েটার ওয়ার্কশপ মঞ্চস্থ করবে গিরিশ মঞ্চে ১৯ ফেব্রুয়ারি। সে সন্ধ্যায় সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত, বিন্দিয়া ঘোষের মতো অভিনেত্রীর পাশাপাশি প্রায় কুড়ি জন শিল্পী গানে-অভিনয়ে এক অচেনা বাস্তবকে তুলে ধরবেন।
|
আলোকবৃত্ত |
বহু বিশিষ্ট মানুষের সান্নিধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছিল রবীন্দ্রবৃত্ত। তাঁদেরই অন্যতম কালিদাস নাগ, যাঁর বিয়ে হয়েছিল রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা শান্তাদেবীর সঙ্গে। সে সময় রামানন্দ-সম্পাদিত ‘প্রবাসী’তে প্রকাশিত হয়ে চলেছে রবীন্দ্রনাথের বহু রচনা। অন্য দিকে কালিদাস নাগের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চিন্তাবিদদের। এর মধ্যে রয়েছেন রম্যাঁ রলাঁ, আইনস্টাইন, মহাত্মা গাঁধী ও আরও অনেকে, যাঁদের সঙ্গে আবার সম্পর্কিত হচ্ছেন কবি স্বয়ং। সম্পূর্ণ হচ্ছে একটি বৃত্ত। এ নিয়েই পরিচালক অশোক বিশ্বনাথন তৈরি করেছেন পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি ‘দ্য লাইট হাউস, দি ওশান অ্যান্ড দ্য সি’ শীর্ষকে। তথ্য গবেষণায় চিন্ময় গুহ। ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক ও ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের সহায়তায় তৈরি এই ছবিটি সম্প্রতি প্রদর্শিত হল রাজারহাটের রবীন্দ্র তীর্থে।
|
মহানায়ক |
‘মহানায়ক’-কে নিয়েই এ বার বৈশাখী-র (সম্পা: ধ্রুবজ্যোতি মণ্ডল) বিশেষ সংখ্যা। উত্তমকুমার সম্পর্কে সম্পাদক তাঁর ‘কথায় কথায়’ জানিয়েছেন, ‘পর্দার অন্তরালে, একজন মানুষ রূপে তাঁকে আমরা জেনেছি কতটুকু! সহশিল্পী হিসেবে সহযোগীদের কাছে তিনি কখনো বন্ধু, কখনো-বা সন্তান অথবা সুখ-দুঃখের সাথী।’— উত্তমের স্বভাবের এ দিকটি মূল্যায়নের সঙ্গে অবশ্য অন্য দিকগুলোও ধরা পড়েছে সূর্য বন্দ্যোপাধ্যায় সোমেন ঘোষ জ্যোতিপ্রকাশ মিত্র বা এ রকম আরও অনেকের আলোচনায়। প্রভাতকুমার দাস লিখেছেন ‘বাংলার যাত্রা ও উত্তমকুমার’ নিয়ে। উত্তম-পরিচালিত ‘বনপলাশীর পদাবলী’র সূত্রে তপন বন্দ্যোপাধ্যায়-কৃত রমাপদ চৌধুরীর সাক্ষাৎকার এবং ক্রোড়পত্রে বুকলেট ও বিবিধ তথ্য সংবলিত ‘শ্যামলী’ নাটকের বৃত্তান্তটি গুরুত্বপূর্ণ। ক্রোড়পত্রেই বাড়তি পাওনা উত্তম-অভিনীত ‘ধন্যি মেয়ে’ ও ‘নিশিপদ্ম’র চিত্রনাট্য। সঙ্গে রয়েছে দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের তৈরি উত্তমকুমারের জীবনপঞ্জি-চলচ্চিত্রপঞ্জি।
|
ছবির ভিতর ছবি |
|
পঞ্চতন্ত্রের গল্প জীবন পেয়েছে কারেন নর-এর ছবিতে। জন্ম ফ্রাঙ্কফুর্টে, পড়াশোনা লন্ডনে। এখন আলোকচিত্র নিয়ে অধ্যাপনায় ব্যস্ত ফার্নহ্যাম-এর ইউনিভার্সিটি ফর দ্য ক্রিয়েটিভ আর্টস-এ। ১৯৮০ সালে প্রথম ভারতদর্শন, রাজস্থান-দিল্লির স্থাপত্য অবাক করেছিল তাঁকে। পাশাপাশি ভাল লেগেছিল অভয়ারণ্যের প্রাণীদের। ওঁর লেন্সে ধরা পড়ল দুটোই। প্রাসাদ, হাভেলি, সমাধি-র সঙ্গে ডিজিটালি জুড়লেন পশুপাখিদের। ছবির ভিতর ছবি নিয়ে তৈরি হল ‘ইন্ডিয়া সঙ’ সিরিজ। তসবির-এর সহযোগিতায় এমন তিরিশটি ছবি এখন দেখা যাচ্ছে সিগাল ফাউন্ডেশনে। আগামী কাল শেষ (২-৮টা)। সঙ্গের ছবি প্রদর্শনী থেকে।
|
আনকোরা |
আদতে তিনি অলঙ্করণশিল্পী। মাঝে মধ্যে লেখালেখি। তবে ছবি আঁকতে গিয়ে মনে হত শব্দের বড় অভাব। ছবি আর শব্দকে একসঙ্গে মেলাতেই সিনেমার ভাবনা। যদিও ছবির জগৎটা একেবারেই আনকোরা, ভরসা প্রচুর সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা। সেই সম্বল করেই তরুণ পরিচালক শৌকর্য ঘোষাল ‘পেন্ডুলাম’-এর স্ক্রিপ্ট লিখে ফেলেছিলেন। কয়েকটি ঘটনা, আপাত ভাবে আলাদা, কিন্তু কোনও সূত্রে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। শৌকর্যের কথায়, “চারপাশে অনেক ঘটনাই ঘটছে। হয়তো সেগুলো আমাদের মনে রেখাপাত করে না। কিন্তু খতিয়ে দেখলে বোঝা যায়, এ রকম কোনও না কোনও ঘটনার সঙ্গে আপনি আমি জড়িয়ে আছি।” এই ব্যাপারটাই শৌকর্য ধরতে চেয়েছেন তাঁর প্রথম ছবিতে। পরিচালক নতুন হলেও ছবিতে অভিনয় করেছেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, রাধিকা আপ্তে, সমদর্শী, রাজেশ শর্মা, রজতাভ দত্ত, শ্রীলেখা মিত্রের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রী। শৌকর্যের কথায়, ‘অসুবিধে হয়েছিল যোগাযোগ করাটা। কাউকেই চিনতাম না। তবে স্ক্রিপ্ট শুনে সবাই আগ্রহ দেখিয়েছিলেন।’ প্রথম থেকেই ক্যামেরার পেছনে বেশ সাবলীল শৌকর্য। “আসলে শ্যুটিং-এর জায়গাগুলো ছিল পরিচিত। অনেকটা সময় কাটিয়েছি রেইকিতে।’ ছবিতে তিনটি গান লিখেছেন শৌকর্য নিজেই। ৭ মার্চ মুক্তি পাচ্ছে ‘পেন্ডুলাম’।
|
|
|
|
|
ভোরের যূথিকা |
বাবার ইচ্ছে রেণুর গান রেকর্ড হোক। মেয়ের সঙ্গীত শিক্ষক জ্ঞানরঞ্জন সেন জানালেন, নজরুল ইসলামই রেকর্ড কোম্পানির সর্বেসর্বা। তিনি বললেই হবে। রেণু এক রবিবার জ্ঞানরঞ্জনের বাড়িতে গান শোনায় কবিকে। মুগ্ধ কবি নিজেই লিখে সুর দিলেন দু’টি গানে। সে রেকর্ড অবশ্য মুক্তি পায়নি। পরে ১৯৩৪-এ চোদ্দো বছর বয়সে রেণুর প্রথম রেকর্ড এইচএমভি থেকে। দু’টি গান ‘আমি ভোরের যূথিকা’ আর ‘সাঁঝের তারকা আমি পথ হারায়ে’। এইচএমভি-র ‘নূতন বাংলা রেকর্ড’-এর তালিকা-পুস্তিকায় লেখা হল ‘বিজন বনে কত মুকুল শোভায়-সৌরভে আপনি ফুটে ওঠে, অথচ লোকে তার কথা জানতে পায় না। তেমনি দুটি ফুল এবার আমরা আপনাদের উপহার দিলাম। এই ফুল দুটি কুমারী যূথিকার দু’খানি গান।’ তিন মাসে ষাট হাজার কপি বিক্রি হয়ে যূথিকা রায় ইতিহাস তৈরি করলেন। পারিবারিক গণ্ডি পেরিয়ে সেই প্রথম কোনও বাঙালি মেয়ের গান গাইতে আসা।
যূথিকার জন্ম ১৯২০-তে। পুজোর সময় মায়ের গলায় স্তব শুনে গানের আগ্রহ। গানে হাতেখড়ি জ্ঞানরঞ্জন সেনের কাছে। শিখেছেন কাজি নজরুলের কাছেও। বাংলার পাশাপাশি অন্য ভাষায়ও। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে যথেষ্ট স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। গাঁধীজির পছন্দ ছিল যূথিকার ভজন। ১৯৪৭-এ স্বাধীনতার দিন দিল্লি রেডিয়োতে এক ঘণ্টা ভজন গেয়েছিলেন। ১৯৭২-এ পদ্মশ্রী সম্মান পান। শেষ জীবনে বেশ কিছু দিন অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন। সম্প্রতি চলে গেলেন শিল্পী। |
|
|
|
|
|
|