সন্দীপ রায়ের ‘বাদশাহী আংটি’
ফেলুদা-র গোড়াপত্তন
ত্যজিতের বাদশাহী আংটি-র পুরনো লখনউ-র কথা তুলতেই সন্দীপ রায় বললেন, ‘লোকেশন দেখতে যে ক’বার লখনউ গেলাম, ঐতিহ্যের নিদর্শনগুলো আগের মতোই আছে খেয়াল করলাম, সত্তরের শেষেও তো গেছি ‘সতরঞ্জ...’-এর সময়। বড় ইমামবারা বা রেসিডেন্সি সবই। বাকি শহরটা পাল্টেছে, কিন্তু বাবার ষাটের দশকের কাহিনির সঙ্গে সাযুজ্য তো ওই সব স্থাপত্যেরই। ফেলুদাকে ২০১৪-য় এনে ফেলতে সমস্যা কোথায়!’ সন্দীপের এই নতুন ছবির কাহিনি ’৬৬-তে ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় প্রথম ধারাবাহিক রহস্য উপন্যাস হিসেবে লেখেন সত্যজিত্‌, ফেলুদাকে নিয়ে (সঙ্গে বাঁ দিকে ‘সন্দেশ’-এ সত্যজিত্‌ কৃত ইলাস্ট্রেশন) উপন্যাস সেই প্রথম, ’৬৯-এ এটি বই আকারে বের করে আনন্দ।
তখন ফেলুদা নবীন, শখের গোয়েন্দাগিরি করে, রিভলভার ব্যবহারের প্রশ্নই ওঠে না। কোনও নামডাকই হয়নি, পুলিশমহলেও কেউ চেনে না। স্রেফ বেড়াতে গিয়ে রহস্যে জড়িয়ে পড়ে। ‘এটাই চ্যালেঞ্জ আমার কাছে। বাবা যখন প্রথম ছবি করেন ফেলুদাকে নিয়ে, ‘সোনার কেল্লা’-য় সৌমিত্রকাকু রীতিমতো পেশাদার, রিভলভার খুলে দেখান লালমোহনবাবুকে। আমার ফেলুদা বেণু-ও (সব্যসাচী চক্রবর্তী) ঠিক তাই। কিন্তু নতুন প্রজন্মের জন্য এই নতুন ফেলুদা একেবারে আনকোরা, অথচ তার মগজাস্ত্র আছে, শারীরিক কসরতেও সে যথেষ্ট পটু। সে দিক থেকে আবীর এক্কেবারে ঠিক নির্বাচন।’ ঝুঁকির প্রশ্নটাকে মানলেনই না সন্দীপ, ‘পশ্চিমে স্পাইডারম্যান, ব্যাটম্যান, সুপারম্যান, মায় জেমস বন্ড নতুন করে শুরু হচ্ছে। ফেলুদারই বা গোড়াপত্তন হবে না কেন! বাবার সৌমিত্রকাকু কিংবা আমার বেণুর যুগ শেষ, এখানে প্রথম থেকে শুরু হবে ফেলুদা। বাবার কাহিনিকে অনুসরণ করে ‘হু ডান ইট’ রীতিতেই ছবিটা করছি। দেশটা গ্লোবাল হচ্ছে, দর্শক নেবেই এই ফেলুদাকে।” ১৭ ফেব্রুয়ারি লখনউতে শুটিং শুরু, ডান দিকে লোকেশন-এ বড় ইমামবারায় সন্দীপের সঙ্গে সিনেমাটোগ্রাফার শীর্ষ রায় ও শিল্পনির্দেশক মানিক ভট্টাচার্য।

সেই সব কথা
শ্রীসঞ্জীব, ক্ষণেশপ্রসাদ দত্ত, সত্য গুপ্ত, সুরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, বটুক নানা নামে লিখতেন শম্ভু মিত্র। কিন্তু কেন? কন্যা শাঁওলী মিত্রের অনুমান, ‘একটি রাজনৈতিক দল কতোরকম ভাবে তাঁকে বিড়ম্বিত করেছে। বারে বারেই। তাই জন্যেই কি অনেক কথা, যা তাঁর বলবার ইচ্ছে হয়েছে, তিনি স্বনামে বলতে পারেননি?’ কী সেই কথা? সে সবই এত কাল ছড়িয়েছিটিয়ে ছিল নানা বই, পত্রপত্রিকা, স্মারকপুস্তিকায়। সেই সমস্ত নিয়ে প্রকাশ শুরু হল শম্ভু মিত্রের রচনাসমগ্র-এর। আনন্দ পাবলিশার্স থেকে শাঁওলী মিত্রের সম্পাদনায় বইমেলায় প্রকাশিত হল প্রথম খণ্ডটি। চল্লিশের দশক থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত প্রবন্ধ, গল্প, নাটক এই মূল তিন ভাগে সাজানো। নাটকে ‘উলুখাগড়া’, ‘একটা দৃশ্য’, ‘বিভাব’ যেমন আছে তেমন মঞ্চায়নের নির্দেশ-সহ শম্ভু মিত্র সম্পাদিত ‘রক্তকরবী’র পাঠটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

মুদ্রা চর্চা
মুদ্রা চর্চাই ছিল তাঁর জীবন। তাঁর আদর্শ ছিলেন বিশিষ্ট প্রত্নবিদ দেবলা মিত্র। দুজনেরই আদি বাড়ি খুলনায়। ডলি মুখোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি-তে এম এ এবং মিউজিওলজি-তে ডিপ্লোমা করেন। কর্মজীবন শুরু ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণে, পরে যোগ দেন ভারতীয় সংগ্রহালয়ে। সেখানে মুদ্রা বিভাগের অধ্যক্ষা হন তিনি। অধ্যাপনা সূত্রে যুক্ত ছিলেন কলকাতা ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন, তার মধ্যেও সম্পূর্ণ করেছেন স্টাডিজ ইন ইন্ডিয়ান নিউমিসম্যাটিক্স বইটি। ১৯ জানুয়ারি চলে গেলেন।

কলকাতায় ‘মিফ’
গত দু’দশক ধরে ফিল্মস ডিভিশন, শর্ট-ডকুমেন্টারি-অ্যানিমেশন-এর সমারোহে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে যে মুম্বই ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল (মিফ) করে চলেছে, তার কলকাতা-কেন্দ্রিক শাখা-উত্‌সবটি এই প্রথম চালু হল নন্দনে (৫-৯ ফেব্রুয়ারি)। মুম্বইয়ে না গিয়েও কলকাতার দর্শক দেখতে পেলেন ছবিগুলি। এই ‘মিফ জোন কলকাতা-২০১৪’ উদ্বোধন করলেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। অন্য দিকে নন্দনেই একগুচ্ছ সমকালীন ইতালির ছবি নিয়ে উত্‌সব, ১২-১৪ ফেব্রুয়ারি। উদ্যোগে ফোরাম ফর ফিল্ম স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যালায়েড আর্টস।

নোবেল শতবর্ষ
‘রবীন্দ্রনাথও বিদেশে বহু সম্মান পাইয়াছেন, কিন্তু তাহা তিনি নিজের বলিয়া গ্রহণ করেন নাই, ভারতবর্ষের সম্মান বলিয়াই গ্রহণ করিয়াছেন।’...১ ফেব্রুয়ারি ১৯১৪ রামমোহন লাইব্রেরিতে কবির নোবেল প্রাপ্তির সংবর্ধনা সভার বিবরণী হিসেবে পুণ্যস্মৃতি গ্রন্থে লিখেছিলেন সীতা দেবী। তার শতবর্ষ স্মরণে দু’দিনের অনুষ্ঠান হল রামমোহন লাইব্রেরিতে। প্রকাশ পেল গীতাঞ্জলির ইংরেজি সংস্করণ সঙ অফারিংসরবীন্দ্রনাথ টেগোর অ্যান্ড দ্য পোস্ট অফিস বই দু’টি। বললেন সুধীর চক্রবর্তী এবং অরুণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯১৪-র ২৯ জানুয়ারি রাজভবনের মার্বল হলে কবির হাতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেন গভর্নর লর্ড কারমাইকেল। তার শতবর্ষ উপলক্ষে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের উদ্যোগে দুই দিনের প্রদর্শনী ছিল রাজভবনে। এখানকার গ্রন্থাগারিক উমা মজুমদার খুঁজে বার করেছিলেন অনেক দুষ্প্রাপ্য নথি। কবির নোবেল প্রাপ্তিকে কেন্দ্র করেই ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘কলকাতা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’-এর আয়োজনে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এ কথায় গানে আবৃত্তিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য। প্রদর্শিত হবে গীতাঞ্জলি-র নানা সংস্করণ।

দশের আলাপ
ছেলে আর মেয়ের মধ্যে মানসিক ভাবে তফাত গড়ে এখনও সামাজিক লিঙ্গ নির্মাণ করে দেওয়া হয়, যার শুরু বাড়ি থেকেই। এর ফল মেয়েদের কম পারিশ্রমিক, পণপ্রথা, স্বাস্থ্য নিয়ে অবহেলার মতো সামাজিক নানা বৈষম্য। বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের মধ্যে এই বিষয়ে সচেতনতা গড়তে কাজ করে ‘এবং আলাপ’। সংস্থার সম্পাদক শর্মিষ্ঠা দত্তগুপ্ত জানালেন, “ইংরেজি মাধ্যমের ছেলেমেয়েরা চাইলেই অনেক তথ্য পেতে পারেন। ‘এবং আলাপ’ তাই কাজ করে মফস্বল ও গ্রামের বাংলা মাধ্যমের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে।” ‘এবং আলাপ’-এর দশ বছর উপলক্ষে ১৩ ফেব্রুয়ারি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেমোরিয়াল হলে রবীন্দ্রনাথ স্টাডিজ সেন্টার-এর সঙ্গে তারা মেয়েদের প্রতি হিংসার সঙ্গে সমাজের অন্যান্য হিংসা নিয়ে সারা দিন ভাবনা ভাগের আয়োজন করেছে। আসবে কল্যাণী, শান্তিনিকেতন, বর্ধমান ও সুন্দরবন থেকে ছাত্রছাত্রীরা। আলোচনার পাশাপাশি থাকবে নাটক ও গান।

আন্দামান থেকে
আক্ষরিক নির্বাসন নেই আর, কিন্তু ভাবনায়? মূল স্রোত থেকে আজও বিচ্ছিন্ন আন্দামানের বাঙালিরা। তাতে কী? বইমেলায় লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়নে নিজের পত্রিকা ‘বাকপ্রতিমা’ নিয়ে সেই সুদূর আন্দামান থেকেই হাজির ছিলেন অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস। দেড় দশক ধরে ত্রৈমাসিক পত্রিকাটি প্রকাশ করছেন তিনি। শুধু গল্প কবিতা উপন্যাসই নয়, সাম্প্রতিক বিষয় নিয়েও রচনা থাকে এতে।

ধ্রুপদী
ছোটবেলা থেকেই নরেন্দ্রনাথের গানের গলাটি সুন্দর ছিল। বাবার দৌলতে বাড়িতে প্রধানত ধ্রুপদী সংগীত শোনা ও শেখার সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর। মার্গসংগীতের বিভিন্ন রাগরাগিণী তুলে ফেলতে পারতেন সহজেই। তাঁর জন্মের সার্ধশতবর্ষের সমাপ্তিতে জলসাঘর ও রামকৃষ্ণ মিশন স্বামী বিবেকানন্দের পৈতৃক আবাস ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে ১১-১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ দিনের ধ্রুপদ উত্‌সবের আয়োজন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিখ্যাত ধ্রুপদ শিল্পীরা আসছেন। এই প্রথম স্বামীজির পৈতৃক আবাস প্রাঙ্গণে এমন অনুষ্ঠান হচ্ছে।

বয়স্কদের অসুখ
রাতে বুকে ব্যথা, অম্বলের ওষুধ খেয়ে তখনকার মতো সামলে নেওয়ার চেষ্টা। হয়ত আসলে সেটা হার্ট থেকেই। আবার কখন হার্ট অ্যাটাক হয়েছে টেরই পাওয়া গেল না। মানসিক অবসাদ থেকেও বুকে ব্যথা করছে মনে হতে পারে। সচেতনতা বাড়লেও অসুখবিসুখ নিয়ে রয়েছে এমন নানা ভুল ধারণা। বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে। এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে বয়স্কদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ডিগনিটি ফাউন্ডেশন। সংস্থার আয়োজনে ৮-৯ ফেব্রুয়ারি রোটারি সদনে ছিল ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন মেডিসিন’ নামের স্বাস্থ্য সচেতনতা শিবির। বয়স্কদের নানা সমস্যার সমাধান ও স্বাস্থ্য নিয়ে বহু ভুল ধারণা ভাঙলেন চিকিত্‌সকরা। প্রথম দিন হোমিয়োপ্যাথি, রেইকি, যোগ, আকুপাংচার, আয়ুর্বেদ-এর সাম্প্রতিক চিকিত্‌সার কথা শোনা গেল। পর দিন কলকাতার নানা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিত্‌সকরা এ সব বিষয়ে আলোচনা করলেন, সঙ্গে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দিলেন।

শতবর্ষে বিদ্যালয়
একশো বছর পূর্ণ করল কলকাতার ঐতিহ্যমণ্ডিত স্কুল জগদ্বন্ধু ইনস্টিটিউশন। প্রতিষ্ঠা পর্বে জমিদার জগদ্বন্ধু রায় দিয়েছিলেন ফানর্ রোড আর একডালিয়ার সন্ধিস্থলে দু’বিঘা জমি। তখন রাসবিহারী অ্যাভিনিউ হয়নি। ত্রিসীমানায় কোনও হাইস্কুল ছিল না।
ছিল ডোবা, জলা, কাঁচা নর্দমা, ধানখেত। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। পরে সি আই টি-র অর্থানুকূল্যে ও এমার্সনের উত্‌সাহে তৈরি হয় ২৫ নং ফার্ন রোডের সুদৃশ্য বর্তমান বাড়িটি (সঙ্গের ছবি)। স্কুল কমিটিতে সভাপতিত্ব করেছেন আশুতোষ চৌধুরী, রমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো মানুষ। প্রধান শিক্ষক উপেন্দ্রনাথ দত্ত ১৯৬১ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মান পান। বিশিষ্ট ছাত্রদের তালিকাটি সুদীর্ঘ। হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়, তপন রায়চৌধুরী, হরিসাধন দাশগুপ্ত, জগন্ময় মিত্র, অশোক রুদ্র, গজেন্দ্রকুমার মিত্র, সুমথনাথ ঘোষ থেকে আরও অনেকেই। এই স্কুলেই দীর্ঘকাল পড়িয়ে গেছেন এক আশ্চর্য বাঁশিওয়ালা, যাঁর নাম জ্যোতিভূষণ চাকী।

মুক্ত অঙ্গন
রাসবিহারী মোড়ে ‘মুক্ত অঙ্গন’ মঞ্চটি একদা বাংলা থিয়েটারের পীঠস্থান ছিল। মেট্রো রেলের খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হতে মুক্ত অঙ্গনে লাগল ভাটার টান। আবার তাকে জাগিয়ে তুলতে ১৬-২০ ফেব্রুয়ারি এখানে শুরু হচ্ছে হাসির নাটকের উত্‌সব। থাকবে নটসেনার ‘গোরুর গাড়ির হেডলাইট’, কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্রের ‘গোড়ায় গলদ’, অন্য থিয়েটারের ‘জগাখিচুড়ি’-র মতো নাটক, আর শেষ দিন থিয়েটার ওয়ার্কশপ-এর ‘সলিউশন এক্স’। প্রতি সপ্তাহে চলবে নিয়মিত নাট্য প্রযোজনা। অন্য দিকে দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১২১তম জন্মবর্ষে দুর্গাদাস স্মৃতি সঙ্ঘের আয়োজনে মধুসূদন মঞ্চে নবম দুর্গাদাস নাট্যোত্‌সব-এর সমাপ্তি পর্ব ১০-১৬ ফেব্রুয়ারি। পঞ্চম বৈদিক-এর ‘রাজনৈতিক হত্যা?’ দিয়ে শুরু নাট্যোত্‌সব।

জ্যাজ-শিল্পী
জ্যাজ সংগীতে রয়েছে আধ্যাত্মিকতা, এমনটাই মনে করেন সালিম ওয়াশিংটন। জন্ম মেম্ফিসে, লেখাপড়া ডেট্রয়েট ও বস্টনে। স্কুল এবং চার্চের বাজনা দিয়েই সঙ্গীতে হাতেখড়ি। বস্টনে কলেজজীবনে তিনি বিলি স্কিনারের দলে ছিলেন, সেটি ভেঙে গেলে নিজেই গড়েন একটি দল। জড়িয়ে পড়েন কৃষ্ণাঙ্গ শিল্প-আন্দোলনে। আফ্রো-আমেরিকান এই সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ বাজাতে পারেন সতেরোটি বাদ্যযন্ত্র। তবে ওঁর প্রিয় যন্ত্র স্যাক্সোফোন, ফ্লুট, ক্ল্যারিওনেট এবং ওবো। ইনস্টিটিউট অব স্টাডিজ ইন আমেরিকান মিউজিকের সিনিয়র ফেলো সালিম পড়িয়েছেন ব্রুকলিন বিশ্ববিদ্যালয়ে, পেয়েছেন ফুলব্রাইট, ট্রিনিটি, হার্ভার্ড ও ব্রুকলিন ফেলোশিপ। হার্ভার্ডের পিএইচ ডি সালিম র্যান্ডি ওয়েস্টন সহ বহু বিশিষ্ট শিল্পীর সঙ্গে বাজিয়েছেন। জ্যাজ সংগীতের আধুনিক প্রবক্তাদের মধ্যে তাঁর গুরুত্ব স্বীকৃত। বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সিটি অব কোয়াজুলু নাটাল-এ পূর্ণ সময়ের অধ্যাপক। সম্প্রতি এই শহরে এসে ঘুরে দেখলেন জোড়াসাঁকোর রবীন্দ্রস্মৃতি সংগ্রহশালা। সংগ্রহ করলেন কবির বই। সেটি পড়তে পড়তেই সোজা শান্তিনিকেতন। সহযোগী পিয়ানোশিল্পী সুমি তনোকা, শর্মিলা রায় পোমো ও শ্রীলা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে জমাটি অনুষ্ঠান হল সেখানে। কলকাতায় বাজালেন গত সন্ধ্যায়, উইভার্স স্টুডিয়ো সেন্টার ফর দ্য আর্টস-এ।
 
ডাক্তারবাবু
সকালে সাপে কাটা রোগীর পা চিরে কালো রক্ত বের করছেন। বিকেলে রোগীর বাড়ির চামচের সমস্যা মেটাচ্ছেন। নইলে ওষুধ মাপবে কী ভাবে? গরিব রোগী ওষুধ কিনবে কী করে? তাই নিজেই কিনে দিতেন। মোটা চালের ভাত খেতে পারবে না বলে ডাক্তার ঘরনিকেই সরু চালের ভাত রেঁঁধে রোগীকে খাওয়াতে হত। ১৯৪৭ থেকে ২০০৭ মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত সুন্দরবনের গোসাবার মানুষের ‘বড় ডাক্তারবাবু’ ছিলেন গোপীনাথ বর্মন। এ যেন বাস্তবের ‘অগ্নীশ্বর মুখার্জি’। ড্যানিয়েল হ্যামিলটনের আদর্শে অনুপ্রাণিত মানুষটির একমাত্র হাতিয়ার ছিল অসাধারণ পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা-নিরীক্ষার তো উপায় নেই। গাছে ঝোলানো স্যালাইনের বোতল, স্ত্রীর হাতে হ্যারিকেন আর ধমক-সান্ত্বনার ‘ভোকাল অ্যানাস্থেসিয়া’ সম্বল করেই চলত চিকিত্‌সা। তাতেই হয়ে উঠেছিলেন এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা। ঘোড়া, সাইকেল আর নৌকো বাহন। রোগীর কাছে নিজের পরিবারও ছিল তুচ্ছ। শনিবার হাটবারে অনেক রোগী আসবে। তাই বড় মেয়ের বউভাত উপেক্ষা করে ছুটেছিলেন গোসাবায়। বলতেন, ওরাও আমার আপনজন। ওদের দেখার কে আছে? গোসাবার উন্নয়নের জন্যও ছিলেন সচেষ্ট। জলজঙ্গলের দেশে জড়িবুটি, তুকতাকের বাইরে বিজ্ঞানসম্মত চিকিত্‌সার দরজা খুলে দিয়েছিলেন তিনি। ৮৭ বছর বয়সে গোসাবাতেই মারা যান। বইমেলায় প্রকাশিত হল ডাক্তার গোপীনাথ বর্মনের জীবন ও কাজ নিয়ে সৌমেন দত্তর বই গোসাবার ডাক্তারবাবু (দীপ)।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.