নদীর সংস্কার হয়নি, জলে ভাসা ব্রিটেনে নয়া আতঙ্ক

৯ ফেব্রুয়ারি
কটা, দুটো, তিনটে, চারটে, পাঁচটা... ঝড়ের সংখ্যা গণনা করাও ছেড়ে দিয়েছেন ব্রিটেনবাসী। কিন্তু তা বলে দুর্যোগ মোটেও পিছু ছাড়ছে না ব্রিটেনের। সপ্তাহান্তে অতলান্তিকের ঝড় আছড়ে পড়তে না পড়তেই নতুন করে প্রমাদ গুনছেন আবহবিদ্রা। কারণ, সোমবার ক্ষান্ত দিলেও মঙ্গলবার আরও একটি ঝড়ের কবলে পড়তে চলেছে ব্রিটেন। সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি এবং বন্যার সম্ভাবনাও রয়েছে।
ত্রাণ ও উদ্ধারকাজের পাশাপাশি তাই দেশ জুড়ে পাঁচশো নতুন বন্যা-সতর্কতাও জারি করেছে প্রশাসন। চলছে বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা মেরামতির কাজও। দক্ষিণ লন্ডনের ক্রয়ডনের একটি আন্ডারপাসকে জলাধার হিসেবে ব্যবহার করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। বন্যার জল যাতে উপচে পড়ে ঘরবাড়ি ভাসিয়ে না দেয়, সে জন্য তা ধরে রাখতেই আন্ডারপাসকে জলাধার বানানোর চেষ্টা চলছে বলে প্রশাসনের দাবি। তবে উদ্ধারকারী দল, পুলিশ, আবহাওয়া দফতর প্রত্যেকেরই অভিযোগ, টেমস, সেভার্ন এবং বাকি নদীগুলির নিয়মিত ড্রেজিং(নদীগর্ভ সংস্কারের কাজ) হলে বৃষ্টির বাড়াবাড়ি সত্ত্বেও এত দুর্ভোগ পোহাতে হতে না ব্রিটেনবাসীদের।
বাসিন্দারাও জানাচ্ছেন, এ নিয়ে একাধিক বার প্রশাসনের কাছে আর্জিও জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পরিবেশ দফতরের পরামর্শকে বেদবাক্য মেনে চলা প্রশাসন তাতে এক বারের জন্যও কান দেয়নি। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে শুরু হওয়া প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে ভেসেছে দক্ষিণ পশ্চিম ব্রিটেন। ক্রিসমাসের আগেই বৃষ্টি-ঝড়-বন্যায় গোটা দেশের প্রায় পাঁচ হাজার বাড়ি সমুদ্রগর্ভে চলে গিয়েছিল। সেই শুরু। তার পর থেকে একের পর এক ঝড়, কখনও সখনও তুষারপাত ব্রিটেনের অবস্থা শোচনীয় করে তুলেছে। আবহবিদ্রা কারণ হিসেবে বায়ুমণ্ডলের ছকভাঙা ব্যবহারকে দায়ী করলেও ব্রিটেনের বাসিন্দাদের চোখে খলনায়ক কিন্তু সরকারি উদাসীনতা।
এবং সে উদাসীনতা যে পরিবেশ দফতরের গাফিলতির ফল, তা স্পষ্ট বলে দিয়েছেন আঞ্চলিক প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী এরিক পিকলস। তাঁর বয়ানে, “আমরা যে একটা ভুল করেছি, তাতে সন্দেহ নেই। হয়তো পরিবেশ দফতরের পরামর্শের উপর বড্ড বেশি নির্ভর করেছিলাম।” সাধারণ মানুষের ভোগান্তির জন্য তিনি ক্ষমাও চেয়ে নেন।
কিন্তু তাতে ক্ষয়ক্ষতির ছবিটা মোটেও বদলাচ্ছে না। শনিবারের প্রবল ঝড়বৃষ্টির পর আজ সারের চার্টসে এলাকার একটি বন্যাকবলিত বাড়িতে উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে সাত বছরের এক নাবালকের দেহ খুঁজে পেয়েছে উদ্ধারকারী দল। তাঁর বাবাও মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। এ দিন সকালেও সারের বিভিন্ন অঞ্চল, ডরসেট এবং কর্নওয়ালের বহু বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিল। অন্য দিকে, সমুদ্রের প্রবল জলোচ্ছ্বাসে রেলপথে গোটা দক্ষিণ পশ্চিম ইংল্যান্ডের সঙ্গে বাকি এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সে জায়গায় স্বল্পমূল্যের বাস পরিষেবা চালু করা হয়েছে। দুর্যোগের মধ্যেও বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা মেরামতির কাজ চলছে।
কিন্তু আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, আগামী সপ্তাহেও টেমস, সেভার্ন নদীর জলস্তর বাড়বে। ফলে বন্যার আশঙ্কা ফের ব্রিটেনের শিয়রে। এর মধ্যেই বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তাঁর তদারকিতে এ বার ব্রিটেনের দুর্ভোগ কতটা কমে, সেটাই দেখার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.