ঠেকে শিখেছে রাজ্য।
প্রথমেই বড় পরিকাঠামো গঠন নয়। চাহিদা বুঝে ধাপে ধাপে তৈরি করা হবে ডোমজুড়ে রাজ্যে গয়না শিল্পের নতুন পার্ক। গয়না শিল্পের একমাত্র বিশেষ আর্থিক অঞ্চল মণিকাঞ্চনে এখনও প্রায় ২৫% জায়গা ফাঁকা পড়ে আছে। নেই কারখানা তৈরির আগ্রহ। এই পরিস্থিতি দেখেই এ বার দেখেশুনে এগোতে চায় রাজ্য সরকার।
হাওড়ার ডোমজুড়ে ৭ একর জমিতে গয়না শিল্পের পার্ক তৈরি করবে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম। বড়, মাঝারি, ছোট— সব গয়না সংস্থার জন্য উৎপাদন কেন্দ্র বা মডিউল তৈরি করে দেবে তারা। ইতিমধ্যেই এখানে জায়গা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সংস্থা ও কারিগরদের কাছ থেকে আবেদনপত্র চাওয়া হয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, সেই সংখ্যার উপরে ভিত্তি করেই পরিকাঠামোর মাপ ঠিক হবে। চাহিদা ও জোগানের হিসেব মেনেই পরিকাঠামো তৈরির কাজে হাত দিতে চায় নিগম।
প্রসঙ্গত, ২০০৪-এ চালু হয়ে যাওয়ার পরেও মণিকাঞ্চনের সব মডিউল ভর্তি হয়নি। কমন ফেসিলিটি সেন্টার ও স্ট্যান্ডার্ড ডিজাইন ফ্যাক্টরি মিলিয়ে ২ লক্ষ বর্গ ফুট জায়গা। ৩১টি কারখানা তৈরির ব্যবস্থা রয়েছে। প্রায় এক দশক কেটে গেলেও ২০টি জায়গা ফাঁকা পড়ে আছে, আপাতত যেগুলির চাহিদাও নেই বলে জানান মণিকাঞ্চন কর্তৃপক্ষ। তার অন্যতম কারণ, বিশ্ব বাজারে গয়না শিল্পে মন্দার ছায়ায় মার খাচ্ছে রফতানি। আর বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে তৈরি গয়না দেশে বিক্রির উপরে রয়েছে বিধিনিষেধ।
ডোমজুড়ে সে সমস্যা হবে না বলে মনে করছে গয়না শিল্পমহল। জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা পঙ্কজ পারেখের দাবি, দেশের বাজারে চাহিদা এখনও ঊর্ধ্বমুখী। একই সঙ্গে হাওড়ার এই এলাকা কারিগরদের আঁতুড়ঘর। ডোমজুড় সংলগ্ন গ্রামগুলিতে বংশ পরম্পরায় এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কারিগররা থাকেন। ফলে হাতের কাছে দক্ষ শ্রমিক মেলার সুযোগও লগ্নিকারীদের কাছে বাড়তি আকর্ষণ। লগ্নিকারী ছাড়া এই শিল্প তালুকে কারিগরদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কম দামে মডিউল কিনতে পারেন তাঁরা। মুম্বই বা সুরতে না-গিয়ে নিজের গ্রামে থেকে কাজের সুযোগ পেতে আগ্রহী তাঁরাও।
দক্ষ শ্রমিক, জাতীয় সড়কের সুবিধা, মডিউল নেওয়ায় ছাড়— লগ্নি টানার সব শর্ত থাকলেও সাবধানে পা বাড়াতে চায় রাজ্য। বাজার বুঝেই পরিকাঠামোর মাপ স্থির হবে। নভেম্বরে আগ্রহী সংস্থা ও ব্যক্তির কাছ থেকে ইচ্ছাপত্র চাওয়া হয়। যা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩১ ডিসেম্বর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, আশানুরূপ সাড়া না-মেলায় তা ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ২০১৬-র মার্চে কারখানা তৈরির জায়গা হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজ্য। নিগম সূত্রের খবর, শিল্প তালুক তৈরির জন্য প্রাথমিক দরপত্র শীঘ্রই চাওয়া হবে। |