কেজরিওয়ালের ধর্না নিয়ে পুলিশি অভিযোগ
সংবাদ সংস্থা |
গত দু’দিনের মতো বুধবারও দিল্লি সরগরম রইল শাসক দলের কাণ্ডকারখানায়।
অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ধর্না নিয়ে দিল্লি পুলিশ ইচ্ছাকৃত ভাবে সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়ার লিখিত অভিযোগ জানাল পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায়। বুধবার দায়ের করা এই অভিযোগে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। রেল ভবন চত্বরে গত সোম ও মঙ্গলবার কেজরিওয়ালের নেতৃত্বে ধর্নায় বসেন ‘আম আদমি পার্টি’র কর্মী-সমর্থকেরা। দ্বিতীয় দিনের শেষে দিল্লির উপ-রাজ্যপাল নাজিব জঙ্গের মধ্যস্থতায় কেজরিওয়াল ধর্না উঠিয়ে নিয়েছিলেন। গত দু’দিনে ওই চত্বরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। জনতা-পুলিশ মারপিটে ৩১ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও ছিলেন। কেজরিওয়াল নিজেও এ দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অসুস্থতার কারণে তিনি এ দিন দফতরে জাননি। বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা করার জন্য তাঁকে দিল্লির যশোদা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, কেজরিওয়ালের ব্রঙ্কাইটিস হয়েছে। সঙ্গে জ্বরও আছে। তাঁর সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
এ দিন দিল্লির বেশ কয়েক জন বিদ্বজ্জন ও কয়েকটি সংগঠনের তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিতর্কিত আইনমন্ত্রী সোমনাথ ভারতীর অপসারণের দাবি করা হয়।
অন্য দিকে, কেরলের নার্সদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে ক্ষমা চাইতে হল আর এক আপ নেতা কুমার বিশ্বাসকে। ২০০৮ সালে রাঁচির এক কবি সম্মেলনে কুমার মালয়ালি নার্সদের সম্পর্কে মন্তব্য করেন। সম্প্রতি সেই অনুষ্ঠানের ভিডিওর কিছু অংশ সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে প্রকাশ করা হয়। বিতর্কিত সেই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কুমারকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান কেরলের মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চান্ডি। তিনি চিঠি লিখে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে এ কথা জানান। চিঠি পাওয়ার পর এ দিন তড়িঘড়ি আপ-এর কেরল ইউনিটকে বিবৃতি পাঠিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন কুমার। সেখানে তিনি লিখেছেন, “আমার একটি কবি সম্মেলনের পুরনো ভিডিও-ক্লিপ কেরলের অনেক বন্ধুকে ব্যথিত করেছে। আমি জাতি-ধর্ম-লিঙ্গ-অঞ্চল ভেদাভেদে বিশ্বাস করি না। ইচ্ছাকৃত ভাবে কাউকে আহত করার জন্য কিছু বলিনি।” কেরলে আপ-এর মুখপাত্র কে পি রাতীশ-ও এ দিন ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, মালয়ালি নার্সদের প্রতি আপ যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল।
আপ-এর কর্মকাণ্ডে এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লেখক চেতন ভকত। আপ-এর সাম্প্রতিক ধর্নাকে চেতন ‘আইটেম গার্ল রাজনীতি’ বলে কটাক্ষ করেন। সমর্থক হিসেবে তাদের কীর্তিকলাপ মেনে নিতে পারছেন না জানিয়ে চেতন বলেন, “লোকসভা নির্বাচন নিয়ে বড় তাড়াহুড়ো করে ফেলছেন আপ নেতৃত্ব। তাঁরা চটজলদি মানুষকে আকৃষ্ট করতে চাইছেন, অনেকটা বলিউডের আইটেম গার্লদের মতো।”
|
বেপরোয়া অটোর ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু, অবরোধ গড়িয়ায়
নিজস্ব সংবাদদাতা |
অটোর দৌরাত্ম্য ঠেকাতে প্রশাসন কার্যত নিষ্ক্রিয়। প্রতিবাদে পথে নামল সাধারণ মানুষ।
অটোর ধাক্কায় এক বৃদ্ধের মৃত্যুর জেরে বুধবার রামগড়ে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসসি মল্লিক রোড দিয়ে চলাচলকারী সব অটো বন্ধ করে দেন। যার জেরে সকাল নটা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত ওই রুটে কোনও অটো চলাচল করেনি। অফিসের সময়ে অটো বন্ধে সমস্যায় পড়েন অফিসযাত্রী ও স্কুল কলেজের পড়ুয়ারা।
অটোর দৌরাত্ম্য বন্ধে রাজ্য সরকার একাধিক কমিটি গড়েছে।
প্রথমে তারাতলা, তার পর পার্ক সার্কাস। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল গড়িয়ার রামগড়ও। তারাতলা আর পার্ক সার্কাসে অটো চালকের গুন্ডামিতে জখম হয়েছিলেন দু’জন মহিলা। এ বার অটোর লাগামছাড়া দৌরাত্ম্যে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। মঙ্গলবার রাতে মদ্যপ অটো চালকের ধাক্কায় মৃত্যু হল গড়িয়ার রামগড়ে আশুতোষ সেনগুপ্ত নামের ৬৯ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের।
রামগড়ের ঘটনার পরে অবশ্য প্রশাসনের ভরসায় বসে থাকলেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার সকালে ওই ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা। যার জেরে ঘণ্টাতিনেক বন্ধ রইল গড়িয়া-গোলপার্ক রুটের অটো চলাচল। বিক্ষোভে নেমে অটোর বিরুদ্ধে যাবতীয় ক্ষোভও উগরে দিলেন সাধারণ বাসিন্দারা। কারও অভিযোগ, অটো চালকদের বেপরোয়া আচরণের বিরুদ্ধে। কারও বা অভিযোগ, অটো চালকদের আইন ভাঙা নিয়ে। লাগামছাড়া অটোকে শাসন করতে কমিটির পর কমিটি তৈরি করেছে সরকার। একাধিক বার অটোর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। কিন্তু অটোর দৌরাত্ম্য রয়ে গিয়েছে সেই তিমিরেই।
কী ঘটেছে মঙ্গলবার?
পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে বাড়ি ফিরছিলেন পাটুলি থানার রামগড়ের বাসিন্দা ৬৯ বছরের অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার আশুতোষবাবু। হঠাৎই পিছন থেকে একটি অটো এসে ধাক্কা মারে তাঁকে। মুখ থুবড়ে রাস্তায় পড়ে যান তিনি। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশের দাবি, মদ্যপ অবস্থায় ওই অটো চালাচ্ছিল অঞ্জন রায় ওরফে নাঙ্কি নামের বছর ছাব্বিশের এক যুবক। যার জেরে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার প্রতিবাদেই এ দিন সকাল ন’টা থেকে গড়িয়া-গোলপার্ক রুটে অটো চালানো বন্ধ করে দেন রামগড় এলাকার সাধারণ মানুষ। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিত্যদিন অটো চালকদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। কিন্তু প্রশাসন কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিভু নন্দীও মানছেন, অটোর এই দৌরাত্ম্য বাড়ছে। যদিও তাঁর দাবি, “এ সবই সরকারকে কালিমালিপ্ত করার জন্য সিপিএমের চক্রান্ত।” সিটু নিয়ন্ত্রিত অটো ইউনিয়নের নেতা বাবুন ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, “ওঁরা তো সব কিছুতেই চক্রান্তের গন্ধ পান। আমরাও চাই, সঠিক তদন্ত হোক এবং সত্যিটা বেরিয়ে আসুক।”
|
মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরে চুরি
নিজস্ব সংবাদদাতা |
২৫০ বছর প্রাচীন মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরে প্রায় লক্ষাধিক টাকার গয়না ও সামগ্রী চুরি গেল। বুধবার ভোরে ঘটনাটি প্রথম মন্দিরের কেয়ারটেকারের নজরে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, ভোর সওয়া চারটে নাগাদ মন্দিরের কেয়ারটেকার মঙ্গলারতির জন্য দরজা খুলতে গিয়ে দেখেন একটি দরজা খোলা রয়েছে। তালাগুলো সব উধাও। মন্দিরের ভিতরে গিয়ে তিনি লক্ষ করেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার রুপোর মুকুট, রুপোর গ্লাস, কোশাকুশি, পৈতে, সোনার চিক ইত্যাদি চুরি গিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, মন্দিরের পাঁচিল টপকে চোর মন্দিরে ঢুকেছিল।
মন্দির কর্তৃপক্ষের অবশ্য অভিযোগ, পুলিশের টহলদারি ঠিক মতো হয় না। মন্দিরের নিজস্ব সুরক্ষা ব্যবস্থাও কিছু নেই। মূলত পুলিশের টহলদারির উপরই
তাঁদের নির্ভর করতে হয়। সেখানে গাফিলতি থাকাতেই এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও পুলিশের কাছ থেকে এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তদন্তের স্বার্থে পুরোহিত-সহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
|
বসিরহাটে গাড়ির ধাক্কায় মৃত শিশু
নিজস্ব সংবাদদাতা |
বসিরহাটে গাড়ির ধাক্কায় একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট-নেজাট রোডে সন্দেশখালির বয়ারমারির কাছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র নুর হোসেন (৫) দোকান থেকে কিছু জিনিস কিনে ইটভাটার দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় নেজাট রোড থেকে বসিরহাটগামী একটি ম্যাক্স গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে ধাক্কা মারে। গুরুতর আহত অবস্থায় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। ঘটনার খবর পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষ। কারণ দিন দু’য়েক আগে এই একই জায়গায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টে পুকুরে পড়ে গিয়েছিল। স্থানীয় মানুষের প্রচেষ্টায় প্রায় ৫০-৬০ যাত্রী প্রাণে বেঁচে যান। দু’দিনের মধ্যে ফের পথ দুর্ঘটনায় তাঁরা যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। ঘটনার প্রতিবাদে গাড়ি ও চালককে আটকে প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও তাতে কাজ হয়নি। পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ সঙ্গে পথ অবরোধ শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
|