ইন্দ্রপতনের হ্যাটট্রিক: রড লেভার কোর্টের রাজা-রানি
হারলেও জকোভিচই আমার
কাছে বিশ্বের এক নম্বর
স্ট্রেলীয় ওপেনে পরপর তিন দিনে নক্ষত্র পতনের হ্যাটট্রিক হলেও আমি অন্তত অবাক নই। সেরেনা পিঠের চোট নিয়ে খেলে হেরেছে। শারাপোভার আবার কাঁধের পুরনো যন্ত্রণাটা বেড়েছিল।
এবং মঙ্গলবার জকোভিচ ওয়ারিঙ্কার কাছে চার ঘণ্টার ম্যারাথন কোয়ার্টার ফাইনালে ৬-২, ৪-৬, ২-৬, ৬-৩, ৭-৯ হারলেও আমার চোখে অঘটন নয় সেটাও। গত বছরই অস্ট্রেলীয় ওপেনে এই দু’জনের চতুর্থ রাউন্ডে পাঁচ ঘণ্টা সমানে-সমানে যুদ্ধের পর ওয়ারিঙ্কা পঞ্চম সেটে ১০-১২ হেরেছিল। যুক্তরাষ্ট্র ওপেন সেমিফাইনালেও ওয়ারিঙ্কাকে হারাতে পাঁচ সেট নিয়েছিল জকোভিচ। এ দিনও বলব, ওর হারটা ব্যাড লাক। পঞ্চম সেটেও একটা ব্রেকে এগিয়ে ছিল। এমনকী ওয়ারিঙ্কার ম্যাচ উইনিং গেমে জকোভিচ দু’টো আনফোর্সড এরর করেছে। দু’জনের আগের দু’টো পাঁচ সেটের মহালড়াইয়ে দিনটা জকোভিচের ছিল, সেখানে এ দিনটা ছিল ওয়ারিঙ্কার। ব্যাস, আমার কাছে স্রেফ এটাই হারের ব্যাখ্যা।
তা হলে কি বরিস বেকারকে কোচ করে এনে বিশেষ লাভ হল না জকোভিচের? সেটাও বলার সময় এখনই আসেনি। আরও তিন-চার মাস পর হয়তো বিচার সম্ভব। তবে যে যা-ই বলুক, আমার মতে জকোভিচই এই মুহূর্তে বিশ্বের এক নম্বর প্লেয়ার। এটিপি র‌্যাঙ্কিং যা-ই দেখাক। এ দিনের হারের আগে ওর টানা ২৫টা ম্যাচ অপরাজেয় থাকাটাই তার প্রমাণ। টানা চোদ্দোটা গ্র্যান্ড স্ল্যামের পর জকোভিচ এই প্রথম সেমিফাইনালের আগে হারল। একজন বিশ্বসেরাই এ রকম ধারাবাহিকতা দেখাতে পারে।
গুরু-শিষ্যের মাথায় হাত। মেলবোর্নে মঙ্গলবার
নোভাক জকোভিচ এবং বরিস বেকার। ছবি: এপি ও রয়টার্স।
ওয়ারিঙ্কাও এই বছরে দারুণ খেলছে। চেন্নাই ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ওর টানা দু’বার চেন্নাইয়ে এটিপি খেতাব জেতার পরই অস্ট্রেলীয় ওপেনে জ্বলে ওঠা দেখে আমার অ্যান্ডি মারের একটা কথা মনে পড়ছে। এ বার মেলবোর্ন পৌঁছে মারে বলেছিল, চেন্নাই ওপেন হল অস্ট্রেলীয় ওপেনের জন্য সেরা প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট। পারলে ও নাকি পরের বার চেন্নাইয়ে খেলবে। আমি এই কথার সঙ্গে অনেকটা সহমত। বছরের এই সময় চেন্নাই আর মেলবোর্নের গরম আর আর্দ্রতা প্রায় এক রকম। অসহ্য গরম। ফলে চেন্নাই ওপেন খেলে অস্ট্রেলীয় ওপেনে নামলে প্লেয়াররা কষ্টসাধ্য আবহাওয়ার সঙ্গে বাড়তি সড়গড় থাকতেই পারে। টেনিসের বড় নামরা অস্ট্রেলীয় ওপেনের ঠিক আগে দোহায় সাধারণত খেলে থাকে। কিন্তু দোহায় এই সময় কলকাতার মতো ঠান্ডা। তা ছাড়া দোহা-মেলবোর্ন দূরত্বের প্রায় অর্ধেক চেন্নাই-মেলবোর্ন দূরত্ব। সে ক্ষেত্রে জেটল্যাগও প্লেয়ারদের অনেক কম হবে। সমস্যা একটাই। মারে, নাদালদের চেন্নাই ওপেনে খেলাতে যে বিশাল অঙ্কের অ্যাপিয়ারেন্স মানি দরকার, সেটা আমাদের দেশের সংগঠকদের পক্ষে দেওয়া আদৌ সম্ভব কি? যেটা মধ্যপ্রাচ্যের তেলের দেশগুলোর পক্ষে খরচ করা সম্ভব!
জকোভিচের হারের চেয়েও আমার কাছে বরং বেশি তাৎপর্যের মেয়েদের সিঙ্গলসে কানাডার টিনএজার ইউজিন বাউচার্ডের সেমিফাইনাল ওঠা। তা-ও কিনা আগের রাউন্ডেই সেরেনাকে হারিয়ে টগবগে থাকা ইভানোভিচকে ৫-৭, ৭-৫, ৬-২ হারিয়ে! মেয়েটার খেলা গত বার উইম্বলডনে স্বচক্ষে দেখেছি। কমপ্লিট প্লেয়ার। এক বছরের মধ্যে অসাধারণ উন্নতি করেছে। গত বার এই অস্ট্রেলীয় ওপেনেই কোয়ালিফাইং রাউন্ডেই ছিটকে গিয়েছিল। তখন র‌্যাঙ্কিং ছিল ১৪৫। এখন ৩১। গ্র্যান্ড স্ল্যামেও বাছাই (৩০)। সেমিফাইনালে তেরো বছরের সিনিয়র না লি-কেও ভোগাবে বাউচার্ড। ফাইনালও চলে যেতে পারে।
তেমনই ভাল সম্ভাবনা কিন্তু এক চল্লিশ বছরের সিনিয়রেরও! লিয়েন্ডার পেজ। ওর ডাবলস পার্টনার স্টেপানেকও খুব ভাল খেলছে। সে জন্য জুটিটাকে আরও ভাল দেখাচ্ছে মেলবোর্নে। যেটার অভাবে সানিয়া মির্জা এ দিন ডাবলস কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে গেল। বিশ্বের এক নম্বর জুটি সারা ইরানি-রবার্তা ভিঞ্চির বিরুদ্ধে মীমাংসাসূচক তৃতীয় সেটে ৪-১ এগিয়ে থেকেও সানিয়া-কারা ব্ল্যাক ম্যাচ হেরে গেল ২-৬, ৬-৩, ৪-৬। পার্টনারের চেয়ে অনেক ভাল খেলেছে সানিয়া। মিক্সড ডাবলসে অবশ্য ‘ওয়ান অল’ সেট হয়ে গেলে ম্যাচটা আমার মতে লটারি! তার পর সুপার টাইব্রেকটা যে কেউ জিততে পারে। ফুটবলের পেনাল্টি শ্যুট আউটের মতো। কতকটা সে কারণেই কিন্তু মিক্সড ডাবলসে লিয়েন্ডারদের কাছে হেরেছে মহেশরা।

স্ট্যানিলাস ওয়ারিঙ্কা
দেশ সুইজারল্যান্ড বয়স ২৮ বছর বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং ৮ গ্র্যান্ড স্ল্যামে সেরা ’১৩ যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ও ’১৪ অস্ট্রেলীয় ওপেন সেমিফাইনাল সাফল্য ’০৮ অলিম্পিক ডাবলসে সোনা (সঙ্গী ফেডেরার), ’১৩ ও ’১৪ চেন্নাই ওপেন চ্যাম্পিয়ন।
‘...নোভাক বিস্ময়কর চ্যাম্পিয়ন। এক মুহূর্তও লড়াই ছাড়ে না। তবে আমি জিতলাম। সত্যি সত্যি সত্যিই ভীষণ আনন্দ হচ্ছে।’
ইউজিন বাউচার্ড
দেশ কানাডা বয়স ১৯ বছর বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং ৩১ গ্র্যান্ড স্ল্যামে সেরা ২০১৪ অস্ট্রেলীয় ওপেন সেমিফাইনাল সাফল্য ২০১৩-এ ডব্লিউটিএ-র সেরা ইমার্জিং প্লেয়ার, গ্র্যান্ড স্ল্যামে ওপেন যুগে প্রথম কানাডিয়ান মেয়ে হিসাবে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা মেলবোর্নে।
‘...ইউ গটা স্টার্ট ফ্রম দ্য বটম অ্যান্ড নাউ উই আর হিয়ার, রাইট? (বিখ্যাত কানাডিয়ান র্যাপ গায়ক ড্রেক-এর জনপ্রিয় গানের লাইন ‘কোট’ করে)।’




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.