পুরনোয় ফেরাটাই নতুনত্ব
সন্দীপের ‘চার’
আগেকার সাদাকালো বাংলা ছবির যে লাবণ্য ছিল সেটা আনতে চেয়েছি ‘পরীক্ষা’য়, বলছিলেন সন্দীপ রায়। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ-কাহিনি তাঁর নতুন ছবির শেষ গল্প। চারটি গল্প নিয়ে ছবি, শুরুতেই পরশুরামের ‘বটেশ্বরের অবদান’, মাঝে সত্যজিতের ‘দুই বন্ধু’ ও ‘কাগ্তাড়ুয়া’। ছবির নাম ‘চার’, আর প্রথম তিনটি কাহিনিই রঙিনে তৈরি, শেষেরটি শুধু সাদাকালোয়। কেন এমন বিন্যাস? ‘আসলে শরদিন্দুর গল্পটা পড়ে ফেলে-আসা একটা সময় টের পাওয়া যায়, স্বাধীনতার সন্ধিক্ষণে লেখা। সিনেমার পুরনো ফরম্যাট’টা ব্যবহার করব ঠিক করলাম। আলো বা ইলিউমিনেশনও যাতে পুরনো সময়টাকে ধরতে পারে, সে ব্যবস্থা করলেন আমার সিনেমাটোগ্রাফার শীর্ষ রায়।’
ছবি: সৌরদীপ রায়।
সেই ‘পিরিয়ড’টাকে ফুটিয়ে তোলার আয়োজনও আছে ডিটেলস-এ: অর্গ্যান, গ্রামাফোন, গ্রামাফোনে বাজানো সে-সময়কার ইংরেজি গান, পত্রপত্রিকা, সিগারেট, পোশাক ইত্যাদি। সর্বোপরি আবির আর কোয়েলের অভিনয়ে তত্‌কালীন রোমান্সের বাতাবরণ (সঙ্গের স্থিরচিত্র)। ‘পরীক্ষা-র নতুনত্বটাই তার পুরনোতে ফিরে যাওয়ায়। এখন তো সবই রঙিন, চেনা রিয়েলিটি বা বাস্তবতা, তার বাইরে বেরিয়ে একটা নস্টালজিয়ার ইলিউশন তৈরি করতে চেয়েছি ভারতীয় সিনেমার শতবর্ষে। পুরো চার-এ মাঝখানে বাবা থাকলেও শুরু করেছি পরশুরামকে দিয়ে, শেষ শরদিন্দুতে বাবার দুই অত্যন্ত প্রিয় লেখক। এঁদেরকে বাঙালি দর্শকের কাছে বারে বারে ফিরিয়ে আনা প্রায় আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। চারটে কাহিনিই নিজগুণে স্বতন্ত্র, একটার সঙ্গে অন্যটার কোথাও কোনও মিল নেই, মানবিক আবেদনটুকু ছাড়া কোনও যোগসূত্র তৈরি করার চেষ্টাও করিনি।’ স্বীকারোক্তি সন্দীপের। ‘পরীক্ষা’ ছাড়া বাকি তিনটির অভিনয়ে পরান বন্দ্যোপাধ্যায়, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, শুভ্রজিত্‌ দত্ত, শ্রীলেখা মিত্র, অনিন্দিতা ভট্টাচার্য, নিমাই ঘোষ, রজতাভ দত্ত, পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়, সুদীপ্তা চক্রবর্তী প্রমুখ। শিল্প-নির্দেশনা মানিক ভট্টাচার্য, সম্পাদনায় সুব্রত রায়। এই শীতেই ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে কলকাতায়।

শতবর্ষে
‘অনেক আর্থিক দুর্গতি আর অনুগত গলগ্রহদের বোঝা তাঁকে বাঁচতে দেয়নি।’ ১৯৫১-র ১৬ এপ্রিল নারকেলডাঙার বাড়িতে মৃত্যু হয় অদ্বৈত মল্লবর্মনের। সেই সংবাদেই এই প্রতিক্রিয়া জানান বিমল মিত্র। একটি উপন্যাসের জন্য বিখ্যাত ঔপন্যাসিকদের তালিকায় বাংলা ভাষার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নামটি বোধহয় অদ্বৈত আর তাঁর তিতাস একটি নদীর নামরাঙামাটি আর সাদা হাওয়া নামে দুটি উপন্যাস, কয়েকটি কবিতাগ্রন্থ, ভ্যান গখের জীবনী লাস্ট ফর লাইফ-এর অনুবাদও তাঁর সাহিত্যকর্মের অন্তর্গত। ১৯১৪-র ১ জানুয়ারি তিতাস নদীর ধারেই গোকর্ণ গ্রামের মালোপাড়ায় জন্ম হয়েছিল তাঁর। দারিদ্রের মধ্যেই পড়াশোনা, কবিতা লেখাও। ১৯৩৪-এ জীবিকার সন্ধানে কলকাতায়। মাসিক ‘ত্রিপুরা’ পত্রিকায় শুরু, পরের বছর সাপ্তাহিক ‘নবশক্তি’র সহকারী সম্পাদক, সম্পাদক তখন প্রেমেন্দ্র মিত্র। ১৯৩৬-এ অদ্বৈত-র নতুন সহকর্মী হলেন সাগরময় ঘোষ, যিনি পরে তাঁকে নিয়ে আসবেন ‘দেশ’ পত্রিকায়। উত্তর কলকাতার একটি ছোট ভাড়াবাড়িতে নীরবে লেখালেখি-সম্পাদনার কাজ করতেন, যেমন নীরবেই করতেন উদ্বাস্তু মানুষের সেবা। সুখের কথা, তাঁর জন্মশতবর্ষ নীরব থাকল না, ‘অদ্বৈত মল্লবর্মন এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল সোসাইটি’র উদ্যোগে সাহিত্য আলোচনা আর গানে বছরের প্রথম দু’দিন উদ্‌যাপন হল রামমোহন লাইব্রেরিতে। সঙ্গের ছবি সোসাইটির সৌজন্যে।

সুবর্ণজয়ন্তী
১৯৬৪-র জানুয়ারিতে দিল্লিতে কলকাতার আট তরুণ শিল্পী প্রদর্শনী করেন। সেই বছর নভেম্বরে তাঁদেরই ছ’জনের কাজের প্রদর্শনী হল কলকাতায়। তৈরি হল নতুন শিল্পীদল ‘ক্যালকাটা পেন্টার্স’। পঞ্চাশ বছরের পরিক্রমায় কেউ কেউ বিদায় নিয়েছেন, এসেছেন অনেক বিশিষ্ট শিল্পী। প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে এখনও আছেন রবীন মণ্ডল ও প্রকাশ কর্মকার, প্রয়াত হয়েছেন মহিম রুদ্র, নিখিল বিশ্বাস, বিজন চৌধুরী ও গোপাল সান্যাল। এ বার পঁচিশ জন শিল্পীর কাজ নিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে ওদের বিশেষ প্রদর্শনী আইসিসিআর কলকাতায়, ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত (১১-৭টা)। প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি মূল্যবান লেখা-সহ একটি পুস্তিকাও। সঙ্গে সুবর্ণজয়ন্তী লোগো, যোগেন চৌধুরী কৃত।

সাহিত্য উত্‌সব
পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির লিটল ম্যাগাজিন মেলা এ বার নব সাজে,‘সাহিত্য উত্‌সব ও লিটল ম্যাগাজিন মেলা’। আর তাই, প্রতিষ্ঠানও এ বার লিটল ম্যাগাজিন মেলায়। তবে বাণিজ্যিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, সরকারি ও আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান। মোট ৪০০ লিটল ম্যাগাজিনের স্টলের সঙ্গে থাকছে বিশ্বভারতী, ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট, সাহিত্য অকাদেমি, বসুমতী, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষত্‌, রাজ্য পুস্তক পর্ষত্‌ও। পাশাপাশি স্মারক বক্তৃতা, পুরস্কার, কবিতাপাঠ, আলোচনা। ১১ জানুয়ারি পাঁচ দিনের উত্‌সব উদ্বোধন করবেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এ দিকে স্কটল্যান্ডের মানুষ জন গ্রিয়ারসনকে (১৮৯৮-১৯৭২) সারা দুনিয়া চেনে তথ্যচিত্রের জনক হিসেবে। ফি-বছর গ্রিয়ারসন ট্রাস্ট সেরা তথ্যচিত্রগুলিকে ব্রিটিশ ডকুমেন্টারি পুরস্কারে সম্মানিত করে। সেই সব ছবি ‘দ্য গ্রিয়ারসন ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ, ১০-১২ জানুয়ারি নন্দন-এ। উদ্বোধনে ‘চিটাগঙ’-খ্যাত বেদব্রত পাইন, বিকেল ৩ টেয়। উদ্যোগে নন্দন ও ব্রিটিশ কাউন্সিল।

প্রয়াস
১৯২৫-এ গুরুসদয় দত্ত তাঁর প্রয়াত স্ত্রীর কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য তৈরি করেন সরোজনলিনী দত্ত মেমোরিয়াল অ্যাসোসিয়েশন। শিশু ও মহিলাদের উন্নতিতে আজও সক্রিয় সংস্থাটি। কাজ চলছে মহিলা সমিতি, শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, ছাত্রী নিবাস, বৃ্দ্ধাবাস ইত্যাদি নানা বিভাগে। ৯-১১ জানুয়ারি সংস্থার বার্ষিক উত্‌সব বালিগঞ্জ স্টেশন রোডের কার্যালয়ে। থাকবে বিভিন্ন হস্তশিল্প প্রদর্শনী। উদ্বোধনে পদ্মিনী নারায়ণন। এ দিকে নিজেদের জায়গা নিজেরাই গুছিয়ে নিতে পারবে এই লক্ষ্যে কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রয়াসম। সল্টলেক ও সংলগ্ন এলাকায় কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে তৈরি হয়েছে ছোট ছোট দল। তারাই এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, দূষণ ইত্যাদি নিয়ে কাজ করছে কয়েক বছর ধরে। সমীক্ষা, রিপোর্টিং, আলোকচিত্র তোলা ইত্যাদি এই কাজের অঙ্গ। ওদের কাজকে ‘প্রণাম’ জানাতেই সম্প্রতি সল্টলেকের পূর্বশ্রী প্রেক্ষাগৃহে দেওয়া হল ‘এলাকা উত্‌কর্ষ পুরস্কার’।

নৌকা সংগ্রহশালা
নদীকেন্দ্রিক বঙ্গে নৌকাকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল শিল্প, লোককথা, গান, লোকাচার আরও কত কী। রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের উদ্যোগে তা সংরক্ষণের চেষ্টা শুরু হয়েছে। গবেষণার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে পুরনো নৌকার প্রতিরূপ। ৮ জানুয়ারি দুপুরে কাঁকুড়গাছির অম্বেডকর ভবনে উদ্বোধন হবে এ শহরের প্রথম নৌকা সংগ্রহশালা। ‘বঙ্গের শিল্প: জনগোষ্ঠীগত ঐতিহ্যের পুনর্মূল্যায়ন ২০১৪’ কর্মসূচির অন্তর্গত এই অনুষ্ঠানে প্রকাশ পাবে অ্যালবাম অব দ্য হেরিটেজ বোটস অব বেঙ্গল। অনুষ্ঠান চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। থাকছে কর্মশালা। প্রদর্শনী চলবে ১২-৭টা প্রতি দিন।

গবেষণার বাইরে
অকালে চলে গেলেন সাহা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স-এর অধ্যাপক অভীকান্তি দত্তমজুমদার। ছ’মাসের অক্লান্ত চেষ্টা শেষ হল ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে। অভী বলতেন, আমাদের খাদ্য-শৃঙ্খলে বিষ ঢুকেছে বলেই পঞ্জাবে এত মানুষের ক্যান্সার। সেই মারণরোগই কেড়ে নিল তাঁকে। অভী নিজেকে ব্যাপ্ত করেছিলেন নিজস্ব গবেষণার বাইরে, সমাজের নানা স্তরে। কৃষিক্ষেত্রে জিন প্রযুক্তি, বিপন্ন ভূ-জীববৈচিত্র, কেমিক্যাল হাবের দূষণ, বাজার অর্থনীতির আগ্রাসন এ সবই ছিল তাঁর গবেষণার বিষয়। প্রতিবাদে পথে নেমেছেন বারে বারে। অভী নেই, কিন্তু তিনি জাগিয়ে গেলেন বহু মানুষকে।
‘সে চলে গেলেও হঠাত্‌ শিউলি ফুলের গন্ধে তারই সকাল
স্মরণের টানে সামান্য এক মুহূর্ত হবে অনন্ত কাল।’
১০ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে তিনটেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শতবার্ষিকী হলে তাঁর স্মরণসভা।

সংবাদ-চিত্র
১৮৭ বছর আগের কথা। ২ জানুয়ারি কলকাতার টাউন হলে প্রতিষ্ঠিত হল বেঙ্গল ফোটোগ্রাফিক সোসাইটি। বলা বাহুল্য, শ্বেত-উদ্যোগে। শ্বেতচর্ম-অধ্যুষিত সেই সংস্থার সম্পাদক কিন্তু এক বাঙালি-- রাজেন্দ্রলাল মিত্র। হ্যাঁ, সেই পুরাবিদ্‌ রাজেন্দ্রলাল, এশিয়াটিক সোসাইটির প্রথম ভারতীয় সভাপতি।
তবে রাজেন্দ্রলালকে অচিরেই পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। সংস্থা প্রতিষ্ঠার দিনটিতে প্রতি বছর ‘বেঙ্গল ফোটোগ্রাফি ডে’ উদ্যাপন করে সি গুহ স্টুডিয়োর উত্তরসূরি বই-চিত্র। এ বারেও সে দিন বই-চিত্র সভাঘরে উদ্বোধন হল চিত্র-সাংবাদিকতার উপর এক প্রদর্শনী। ছিল এ বিষয়ে নানা বিশিষ্টজনের আলোচনা। আছে অতি দুর্লভ কিছু আলোকচিত্র, সঙ্গে তারই একটি, ১৯৫৯-এর খাদ্য আন্দোলন, শম্ভু বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা। ১১ জানুয়ারি সমাপ্তি অনুষ্ঠানে সন্ধে ৬টায় থাকছে ভ্রমণ ও সাধারণ আলোকচিত্র বিষয়ে স্লাইড শো। প্রদর্শনী রোজ (রবিবার বাদে) ৩টে-সাড়ে ৭টা।

প্রবাসী
অনেককে শোকে ও শূন্যতায় ভাসিয়ে নিশীথ গঙ্গোপাধ্যায় চলে গেলেন ৪ ডিসেম্বর। অকৃতদার নিশীথের নিকটজনেরা ২২ ডিসেম্বর তাঁর কলকাতার পূর্ণদাস রোডের বাড়িতে ‘ভরা থাক স্মৃতিসুধায়: নানাজনের নিশীথ’ শীর্ষক এক স্মরণসভার আয়োজন করেন। কথা, গান, স্মৃতিচারণের শেষে ছিল উপনিষদ থেকে পাঠ। বর্ণময় জীবনের প্রথম বত্রিশ বছর ভবানীপুরে ও তার পর প্রায় বাহান্ন বছর লন্ডনে থেকেও নিশীথ ছিলেন আপাদমস্তক বাঙালি। বাংলা ও বাঙালির জন্য সদা তত্‌পর। তিনি যেমন বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির ভালবাসার জন ছিলেন, অপর দিকে অনেক নবীন প্রতিভাকে বিদেশে প্রতিষ্ঠা পেতে সব রকম সাহায্য ও প্রেরণা জুগিয়েছেন।

ভারতীদি
প্রেসিডেন্সি কলেজে ১৯৬০-এর দশকে যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা নিশ্চয় অসাধারণ মেধাবি এই ছাত্রীকে মনে রেখেছেন। যাঁরা সত্তরের দশক থেকে বেথুন কলেজে দর্শন বিভাগে পড়াশুনো করেছেন, তাঁরাও তাঁদের শিক্ষিকা ‘ভারতীদি’কে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। প্রেসিডেন্সি-র অধ্যাপক স্বর্গীয় দেবীপ্রসাদ সেনের জ্যেষ্ঠা কন্যা ভারতী দাশগুপ্ত (সেন) ৯ ডিসেম্বর প্রয়াত হলেন। সাম্মানিক ও এম এ (দর্শন), দু’টিতেই প্রথম বিভাগে প্রথম হন। শেষ দিন পর্যন্ত নিরভিমান ও প্রচারবিমুখ এই মানুষটিকে শ্রদ্ধা জানাতে ১১ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ১২টায় বেথুন কলেজ প্রাঙ্গণে এক স্মরণসভা আয়োজিত হয়েছে।

জলবেশ্যা
এক সঙ্গে ১০-১২টা নৌকো। তাতেই খাওয়াদাওয়া, মাছ আর সাপ ধরা, খেলা দেখানো। নৌকোতেই জীবন বেদেনিদের। সামনাসামনি সাপের খেলা দেখালে আড়ালে চলে দেহব্যবসা। তাই ওরা ‘জলবেশ্যা’। উগ্র সাজপোশাক, আর ব্যবহারে চটুলতা। আলাদা গ্রাম থাকলেও এই বেদেনিদের দেখা মেলে বাংলাদেশের সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এদের জীবন নিয়ে আল মাহমুদ লিখেছিলেন ছোটগল্প ‘জলবেশ্যা’। সেই গল্পের সূত্রে মুকুল রায়চৌধুরী (সঙ্গের ছবি) বানিয়েছেন চলচ্চিত্র ‘টান’। মুকুল বিজ্ঞাপন জগতের সঙ্গে বহু দিন জড়িত। কাজের সূত্রে বাংলাদেশে ছিলেন। সেখানেই বেদেনিদের জীবন কাছ থেকে দেখে ছবি তৈরির ভাবনা মাথায় আসে। মুকুল জানালেন, আল মাহমুদের গল্পের ভিত্তিতে তৈরি হলেও ছবির মূল গল্প তাঁরই। বিদেশি কোম্পানির হয়ে ওপার বাংলায় প্রকৃতির ছবি তুলতে যায় সাজু। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে সাজু পড়ে মাফিয়াদের খপ্পরে। বেদেনিরা সাজুকে নিয়ে চলে যায়। এ দিকে সাজুর খোঁজ না পেয়ে তার বন্ধু লিজা পাড়ি দেয় সেখানে। বন্ধুকে খুঁজতে গিয়ে লিজার চোখ দিয়েই উঠে আসে বেদেনি তথা জলবেশ্যাদের জীবন। ছবির প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ হলেও শু্যটিং হয়েছে এ পারের সুন্দরবনেই। ছবিতে বাংলাদেশের জুয়েল মামুদের লেখা গানে সুর দিয়েছেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। অভিনয়ে সুমান্ত চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা, দেবদূত, পামেলা। ৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে ‘টান’।

 
সমাজকর্মী
ছয়টি ঋতুর ফুলে ফলে জীবনের ডালা ভরে নেওয়াতেই ছিল তাঁর আনন্দ। ৯১ বছরের সেই বর্ণময় জীবন থেমে গেল ৪ ডিসেম্বর মধ্যরাতে, শিলঙে। চলে গেলেন অঞ্জলি লাহিড়ী। আত্মঅবলোপী এক জীবনশৈলী নির্মাণ করে নিয়েছিলেন তিনি নিজের গরজে। সুন্দরীমোহন দাসের নাতনি অঞ্জলি প্রেমানন্দ-সুবর্ণপ্রভা দাসের মেয়ে। কাকা যোগানন্দ দাস। বাড়ির পরিবেশে মিলেমিশে ছিল ব্রাহ্ম ভাবাদর্শ, স্বাদেশিকতার বীজমন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ। সাম্যবাদের ডাকে অঞ্জলি জড়িয়েছিলেন কমিউনিস্ট পার্টিতে। ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলার দায়িত্ব নিয়ে ছুটে বেড়ান অসম শ্রীহট্ট ময়মনসিংহে। গোটা অসম, বিশেষত আজকের মেঘালয় তাঁকে এক ডাকে চিনত তেজি নেত্রী হিসেবে। করেছেন কৃষকসভা ও গণনাট্যের কাজ । নাটক লিখেছেন। নির্মলেন্দু চৌধুরী, শান্তা সেন, খালেদ চৌধুরীর সঙ্গে গানও গেয়েছেন। ’৪৮-এ কারাবাস। তিহার জেল থেকে বেরিয়ে বিয়ে করেন আইনজ্ঞ নীরেন্দ্রনাথ লাহিড়ীকে। প্রথাগত শিক্ষা না থাকলেও তাক লাগিয়ে দেয় তাঁর তৈরি শিল্পসামগ্রী আর বনসাই। ’৫৯-এ ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গা বা ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি অক্লান্ত ভাবে কাজ করেছেন শরণার্থী শিবিরে। বাংলাদেশ সরকার তাঁকে মুক্তিযুদ্ধ সহায়তা সম্মানে ভূষিত করেন। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা স্মৃতি ও কথা ১৯৭১ বেরিয়েছিল ঢাকা থেকে। অসমের মহিলা কথাকার বইটির জন্য পেয়েছেন লীলা রায় পুরস্কার। ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ছটায় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে আয়োজিত হয়েছে অঞ্জলি লাহিড়ীর স্মৃতিসভা।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.