ছবি: সিজার মাস্ট ডাই
দেশ: ইতালি
পরিচালক: পাওলো ও ভিত্তোরিয়ো তাভিয়ানি
সাল: ২০১২
এক দেশের মধ্যে সে আর এক দেশ। পাথুরে দেওয়ালে ঘেরা, লোহার গরাদে পোরা। দিন-রাত, ঘণ্টা-মিনিট, জীবন, কাটে সেলবন্দি হয়ে। ভারী, নিরেট লোহার দরজা, গায়ে ঢাউস তালা। রাখতেই হয়, বাসিন্দারা যে মার্কামারা ক্রিমিনাল সব! নৃশংস খুনি। জঘন্য ধর্ষক। ধুরন্ধর মাফিয়া-গুরু। ড্রাগ ডিলার। এক এক জনের পনেরো, সতেরো, উনিশ বছর কারাদণ্ড, বেশ ক’জনের যাবজ্জীবন। পঁচিশ থেকে পঞ্চাশ-ষাটের পুরুষ সব, হাতের গুলি, কবজি, শক্ত চোয়াল, শীতল চাউনি দেখলে বোঝা যায়, রেবিবিয়া নামের এই জেলখানাটা কেন দেশের এক্সট্রিম হাই-সিকিয়োরিটি জেলগুলোর একটা!
এমনই পাথরচাপা চার দেওয়ালের মধ্যে যদি হঠাৎ ঢুকে পড়েন শেক্সপিয়র, জুলিয়াস সিজার-এর মতো আস্ত একখান রাজনৈতিক নাটক নিয়ে, আর অলক্ষে ঘুরতে থাকে মুভি ক্যামেরার রিল, কী হয়? ম্যাজিক? মিরাক্ল? প্লে উইদিন আ ফিল্ম? হয়তো এই সবই, প্লাস আরও কিছু। যিশুর জন্মেরও চুয়াল্লিশ বছর আগের এক হাড়-হিম রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আরও এক বার অভিনীত তথা আচরিত হয় ২০১২-র ইতালির এই জেলখানার ভেতরে, ওই ‘বাজে লোক’গুলোর জীবনে। যারা কোনও দিন অভিনয় কী বস্তু জানেনি-দেখেনি, তাদেরই ছুরিবোমাপিস্তল-ধরা হাতে পরিচালক-জুড়ি তুলে দেন চারশো বছরেরও বেশি পুরনো শেক্সপিয়র-এর স্ক্রিপ্ট। কাঁচা খিস্তি-মারা মুখে তিরতির কাঁপে ফ্রি ভার্স। কাস্টিং ডিরেক্টরের নেওয়া অডিশন থেকে একে একে উঠে আসে বিষণ্ণ সিজার, উদগ্র ক্যাসিয়াস, অস্থির ব্রুটাস, স্থিতধী মার্ক অ্যান্টনি। অন্যান্য চরিত্র মিলে শুরু হয় এক অপরাধ-আখ্যানের নাট্য-কাম-চলচ্চিত্রায়ন।
গোটা সিনেমাটা একটা জার্নি। পরিচালক দুজনের পক্ষে মস্ত চ্যালেঞ্জিং, জানা কথাই। এই লোকটার সঙ্গে ওর ঝামেলা, ওর ওপর তার দাউদাউ রাগ। ঠিক এমনটাই ছিল না সিজারের দরবার ‘ক্যাপিটল’-এ? বন্ধুতা আর বৈরিতা, বেইমানি আর বেরাদরির লুকোচুরি? এখানেও তাই। যার যার সেল-এ স্ক্রিপ্ট নিয়ে বসে ডায়ালগ আওড়ায় এক একটা মানুষ, আর ক্যামেরা খুব কাছ থেকে ধরে ওদের মুখ, চোখ, গোটা শরীরের মানচিত্র। রিয়েল লাইফ দাগি অপরাধীদের রিল লাইফ-চরিত্রের গুচ্ছ শেড ধরতে, এই ছবির বেশির ভাগটাই সাদা-কালো। সেই ফ্রেমেই কত রং ফোটে! জিঘাংসার লাল, ঈর্ষার সবুজ, কাপুরুষতার কালো। গোড়ায় মহড়া চলে সেল-এ, জেলের অপরিসর করিডরে, জানলাহীন বিরাট উঁচু হলঘরে, পরে জেলের ছোট্ট অডিটোরিয়ামের মঞ্চে, চড়া এইচ এম আই আলোর তলায়। জেলের মধ্যে পরা কলারতোলা টি-শার্টের বদলে গায়ে ওঠে শেক্সপিয়রীয় ভাবনার রোমান কস্টিউম। পাশাপাশি ক্যামেরা-চোখে ধরা পড়ে অডিটোরিয়ামে দর্শকদের বসার চেয়ারগুলো সারাইয়ের কাজ, জেলবন্দিদের দিয়েই। দেখা যায়, এক সারি আসন মেরামত করে হা-ক্লান্ত এক কয়েদি কী নিরুচ্চার প্যাশনে হাত বোলাচ্ছেন একটা চেয়ারের কুশনে। হয়তো সেখানে এসে বসবেন সুন্দরী, তন্বী কোনও। কী নরম মমতায় জীবনের কত না-পাওয়াকে ছুঁয়ে যান ছবি-করিয়েরা!
তার পর এক দিন, সেই দিনটা আসে। বিশাল লোহার গেট দু’পাশে টেনে খুলে দেয় রক্ষী, বাইরের দুনিয়া হু-হু করে ঢুকে পড়ে আঁধার-জগতের বাসিন্দাদের করা নাটক দেখতে। পরদাও সাদা-কালো থেকে হঠাৎ রঙিন। যে মুখগুলো এত দিন, এত ক্ষণ ধরা ছিল ক্লোজ আপ আর মিড শট-এর চৌখুপিতে, তারাই এ বার লং শটে স্টেজ দাপায়। একের পর এক দৃশ্য সরে সরে যায় থিয়েটার আর সিনেমার হাত ধরাধরিতে। চটক ভাঙে, যখন নাটক-শেষে দর্শকদের স্ট্যান্ডিং ওভেশন আর সহর্ষ করতালির আবহে অভিনেতারা সবাই আনন্দে মুষ্টিবদ্ধ দু’হাত ওপরে তুলে ঝাঁকায়, খুশিতে লাফায়, জড়িয়ে ধরে এ ওকে। আমরা পেরেছি, আমরাও পেরেছি রেবিবিয়া জেল-এর ‘ওরা’ যেন বার বার বলে, নিজেদেরই।
বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ ছবির পুরস্কার হাতে নিয়ে এ ছবির পরিচালক পাওলো তাভিয়ানি বলেছিলেন, ‘এই ডকু-ড্রামা যখন রিলিজ করবে, আশা করি দর্শকরা নিজেদেরকে আর চারপাশের সবাইকেও মনে করিয়ে দেবেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত কুখ্যাত এক জন অপরাধীও আদতে এক জন মানুষ, বাকি জীবনটাও কিন্তু সে মানুষই থাকে।’ সেটাই শেষ কথা। যেমন দেখি ছবির শেষেও, যখন কড়া প্রহরায় সিজার-অ্যান্টনি-ব্রুটাসরা ফিরে যান যার যার সেল-এ, ক্লান্ত ক্যাসিয়াস ছোট্ট কফিমেকারটা নিয়ে কফি বানাতে বসেন। ঘৃণ্য অপরাধী? না নিঃসহায় ভঙ্গুর মানুষ? প্রশ্নটা জেগে থাকে।


জীবনধারাই বদলে ফেলতে চলেছে এই আশ্চর্য আবিষ্কার। আগেই অবশ্য এই ‘সেক্স-রোবট’ আবিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু বাজারে ছাড়ার অনুমতি মিলছিল না। এই রোবট এখন থাকতে পারে আপনার ঘরে, ঠিক রোবট নয়, রোবটের ছাঁচ। বলা যায়, পুরুষ বা নারীর একটি ‘কাঠামো’। এ বার, রাস্তায় চলতে, কলেজে, অফিসে, সেমিনারে, নাইট ক্লাবে, যে কোনও জায়গায়, যে কোনও সময়ে কাউকে দেখে যদি হৃদয় ব্যাকুল হয়, তা হলে, নেক্সট স্টেপ হল, কোনও ক্রমে সেই মানুষটির থেকে, তাঁর পূর্ণ সম্মতি অনুসারে ‘সেক্সুয়াল পাসওয়ার্ড’টি জেনে নেওয়া। এর পর, নিজের ঘরে ফিরে, কোনও একান্ত মুহূর্তে ওই সঙ্গী-কাঠামোটির কপালের ছোট্ট স্ক্রিনে পাসওয়ার্ডটি দিলেই, প্রণয়ী মানুষটির ঘরের কাঠামোটিতে বিপ বিপ করে সংকেত যাবে। তিনি রাজি হয়ে প্রস্তাবে সাড়া দিলে, কাঠামোর মধ্যে ফুটে উঠবে ‘অ্যাক্সেস গ্রান্টেড’। ব্যস, সঙ্গে সঙ্গে কাঠামোটির শরীর হয়ে উঠবে হুবহু প্রণয়ীরই শরীরের রূপ এবং এই দুজন ‘ফিজিও-ভার্চুয়াল’ ভাবে মিলিত হতে পারবেন। অনুভূতি নাকি বাস্তবের সমান সুখকর। শুধু তাই নয়, কোনও শারীরিক ত্রুটি থাকলে, সেটাও উন্নত বিজ্ঞান সংগমকালে মেরামত করে দেবে। কিছু রক্ষণশীল সংগঠন এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছেন বটে, কিন্তু তা ধোপে টিকবে না বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা। মানবাধিকার কমিশন বলছেন, পরস্পরের সম্মতিক্রমে যৌনতার বিরুদ্ধে এই যুগে যে কোনও কথাই মূর্খামি। তার উপর এখানে তো সত্যিকারের মিলনটা হচ্ছে রোবটের সঙ্গে, প্রযুক্তি তাকে অন্য মানুষের শারীর-মানসিক গঠনের হুবহু আদলে ঢাললেও, একে ঠিকঠাক পরকীয়া বলাই যাবে না। তা ছাড়া, এই আবিষ্কার দম্পতি বা অনুগত প্রেমিক-প্রেমিকারও মুশকিল-আসান। কেরিয়ার আর প্রণয়ের শত্রু হতে পারবে না। প্রেমিকা ভিয়েতনামে চাকরি নিয়ে চলে গেলেও প্রেমিক ভাগলপুরে থেকেই তাঁর স্পর্শসুখ অনুভব করবেন।

কলিযুগের মহাভারতের
দশটা ভ্যাবচ্যাক দৃশ্য



শকুনি স্পট ফিক্সিং-এর জন্য গ্রেফতার

দ্রৌপদী দ্যূতসভায় এলেন বিকিনি পরে। দুঃশাসন
শাড়ি টেনে রিহার্সাল দিয়েছেন, এখন পুরো ধাঁ!

যুধিষ্ঠির ‘অশ্বত্থামা হত’ বলতেই,
দ্রোণের লাই ডিটেক্টর-এ বিপ বিপ

অভিমন্যু চক্রব্যূহ থেকে দিব্যি বেরিয়ে এলেন জিপিএস দেখে

‘সুইসাইড অ্যাটেম্প্ট’-এর
জন্য ভীষ্মের নামে ওয়ারেন্ট

কুন্তী রাজপ্রাসাদ কিনলেন। ‘ইএমআই
কে দেবে মা?’ ‘পাঁচ ভাই ভাগ করে নিয়ো’


একলব্য প্লাস্টিক সার্জারি করে বুড়ো
আঙুল জুড়লেন। তার পর অলিম্পিকে
তিরন্দাজিতে গোল্ড, অর্জুনকে ক্যাঁচকলা


কর্ণ কুরুক্ষেত্রে এলেন স্কি করতে করতে।
চাকাই নেই, তার চাকা-বসা!

অত ক্ষণ হাঁ করে থাকতে টায়ার্ড লাগে,
তাই কৃষ্ণ বললেন, ‘বিশ্বরূপ’টা ইউটিউব-এ দেখে নে

১০

মহাপ্রস্থানের লাস্ট পয়েন্টে পৌঁছে যুধিষ্ঠির দেখেন, পড়ে-যাওয়া লোকরা ক্রেনে চড়ে আগেই হাজির!



এক যে ছিল শেয়াল
তার বাপ দিচ্ছে দেয়াল
দেয়ালের ও-দিকে বিশ্ব
অ্যাক্কেরে অস্পৃশ্য

• মানুষ পাখির মতো উড়তে শিখল, মাছের মতো সাঁতরাতে শিখল, কিন্তু বিভেদ ভুলে ভাইয়ের মতো থাকতে শিখল না।
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র

• সবচেয়ে বড় বিভেদমূলক কাজ সহ-মানুষদের ঘৃণা করা নয়, তাদের প্রতি উদাসীন থাকা।
জর্জ বার্নার্ড শ

• এটা আমার কাছে রহস্য: মানুষ কী করে অন্য মানুষকে অপমান করে নিজেকে মহৎ ভাবে।
মহাত্মা গাঁধী

• এক জন মেয়েকে ভালবাসা মানে অন্য মেয়েদের প্রতি বিভেদমূলক আচরণ।
টমাস ফিলার

• এক রাজার দুই রানী দুও আর সুও। রাজবাড়িতে সুওরানীর বড় আদর, বড় যত্ন। ...সাতমহল বাড়িতে থাকেন। সাতশো দাসী তাঁর সেবা করে, পা ধোয়ায়, আলতা পরায়, চুল বাঁধে। ...সাত সিন্দুকে-ভরা সাত-রাজার-ধন মানিকের গহনা, সেই গহনা অঙ্গে পরেন। সুওরানী রাজার প্রাণ!
আর দুওরানী বড়রানী, তাঁর বড় অনাদর, অযত্ন। রাজা বিষ নয়নে দেখেন। একখানি ঘর দিয়েছেন ভাঙাচোরা, এক দাসী দিয়েছেন বোবা-কালা। পরতে দিয়েছেন জীর্ণ শাড়ি, শুতে দিয়েছেন ছেঁড়া কাঁথা।
ক্ষীরের পুতুল, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর

• প্রঃ বিভেদ কি থাকবেই?
গর্গরেফ: হ্যাঁ, ওটা মানুষের মধ্যে এমন বোনা আছে, আনলার্ন করা যাবে না, অন্তত সমষ্টিগত লেভেলে। বাচ্চাও বাইরের লোককে খেলনা দেয় না। তাই অন্য আচার-আচরণের মানুষের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা শক্ত। তবে, জড়াজড়ি করতে হবে না, ভদ্রতা করলেই মিটে যায়।
প্রঃ কখনও ঘোচে না?
গর্গরেফ: হ্যাঁ, সকলের প্রতি কেউ সমান নিষ্ঠুর অত্যাচার চালালেই ‘কমন’ ক্রোধে বিভেদ ঘুচে যায়।



অথবা pdf করে পাঠান এই মেল-ঠিকানায়:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.