টাটকা খবর |
পথে প্রতিবাদ, টানাপোড়েন শেষে
সত্কার মধ্যমগ্রামের কিশোরীর
নিজস্ব সংবাদদাতা |
|
|
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর বুধবার বিকেল ৫টা নাগাদ অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হল মধ্যমগ্রামের ধর্ষিতা কিশোরীর। মঙ্গলবার প্রায় সারা রাত নিমতলা শ্মশানে শববাহী গাড়ির ভেতরেই ছিল তার মরদেহ। ওই দিন মধ্যরাতে অল্প সময়ের জন্য বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলেও ভোরের দিকে ফের অন্ত্যেষ্টির জন্য নিমতলায় দেহ নিয়ে আসা হয়। কিন্তু নানা কারণে সে কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। বেলা বাড়তেই তার দেহ নিয়ে রাজ্য দফতরে যান সিটু নেতৃত্ব। সেখানে দীর্ঘ ক্ষণ শায়িত থাকে দেহ। বিকেল সওয়া ৪টে নাগাদ ফের নিমতলার উদ্দেশে রওনা হয় মৃতদেহ-সহ শোকমিছিল। সেখানেই বিকেল ৫টা নাগাদ তার অন্ত্যেষ্টি হয়।
ওই কিশোরীর মৃত্যু ঘিরে তার পরিবারের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ দিন দুপুরে কিশোরীর বাবাকে নিয়ে সিটু নেতৃত্ব রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর কাছে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পরই অন্ত্যেষ্টির তোড়জোড় শুরু হয়। |
|
বুধবার বিকেলে শেষযাত্রায় নিমতলার পথে মধ্যমগ্রামের কিশোরী। |
গোটা ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু সরকার এই ক্ষেত্রে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। অভিযুক্তরা সবাই গ্রেফতার হয়েছে, এমনকী তাদের বিচারও চলছে। কিন্তু গোটা দেশের সামনে বাংলাকে হেয় করতে বামপন্থী-সহ কিছু মানুষ অপপ্রচার করছেন।” মুকুল রায়ের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, “প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে সরকারই দেহ নিয়ে রাজনীতি করতে চেয়েছে। রাস্তা থেকে পুলিশ দিয়ে মরদেহ তুলে নিয়ে যাওয়ার কী দরকার ছিল?”
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, “ওই কিশোরীর মৃত্যু নিয়ে আমরা সিবিআই তদন্ত দাবি করছি।” এমনিতেই বিভিন্ন দাবিতে বৃহস্পতিবার কংগ্রেস বিধায়কেরা গাঁধী মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসবেন। প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, সিঙ্গুরের তাপসী মালিক হত্যা কাণ্ডের সময় কংগ্রেসের তরফ থেকে সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করা হয়েছিল। মধ্যমগ্রামের ওই ধর্ষিতা কিশোরীর এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে।
বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এ দিন বলেন, “ধর্ষিতা কিশোরীর মরদেহ মাঝরাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া দাহ করতে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া সত্কার করতে না পেরে শ্মশানেই রাতে দেহ ফেলে রাখা হয়। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা অতীতে কখনও ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।”
এই ঘটনায় এক দিকে যেমন বামেরা পথে নেমেছে, তেমনই বিশিষ্ট জনেদের তরফে কলেজ স্কোয়ার থেকে এ দিনের মিছিলে দেখা গিয়েছে অপর্ণা সেন-সহ অনেককেই। |
|
ধর্ষিতা কিশোরীর মৃত্যুর প্রতিবাদে কলেজ স্কোয়ারে বিদ্বজ্জনদের মিছিল। |
মঙ্গলবার আরজিকর হাসপাতালে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ অগ্নিদগ্ধ ওই তরুণীর মৃত্যু হয়। রাতে তার দেহ পিস হাভ্ন-এ রাখার কথা ছিল। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃতদেহ-সহ শববাহী গাড়িটি টালা ব্রিজ থেকে নিমতলা শ্মশানে নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেট না থাকার কারণে অন্ত্যেষ্টি সম্ভব হয়নি। রাত আড়াইটে পর্যন্ত শ্মশান চত্বরে দেহ গাড়িতেই পড়ে থাকে। শববাহী গাড়ি ঘিরে রাখে বিশাল পুলিশ বাহিনী। সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি ভিড় জমান সাধারণ মানুষও। এয়ারপোর্টের কাছে যে বাড়িতে ওই কিশোরীর পরিবার থাকে রাত আড়াইটের পর পুলিশ সেখানে মৃতদেহ নিয়ে যায়। ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ ফের কিশোরীর বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে নিমতলা শ্মশানে আসে পুলিশ। কিন্তু কিশোরীর বাবা পুলিশকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ না জানিয়ে কোনও ভাবেই তিনি মেয়ের সৎকার করবেন না। |
|
শববাহী ম্যাটাডর আটকে দিল পুলিশ। |
এই টানাপোড়েনের মধ্যেই এ দিন সকালে নিমতলায় এসে পৌঁছন সিটু নেতা শ্যামল চক্রবর্তী। আসেন সিপিএম নেতা সুধাংশু শীল, রবীন দেব-সহ এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই-এর প্রচুর কর্মী-সমর্থক। কিশোরীর দেহ নিয়ে অন্য কোথাও যাওয়ার উদ্দেশে শববাহী গাড়িটিতে পরিবারের লোকের সঙ্গে শ্যামলবাবু-সহ কয়েক জন উঠে পড়েন। কিন্তু ওই গাড়ির চালককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শ্যামলবাবু অভিযোগ করেন, “পুলিশ পশুর মতো আচরণ করছে। ওই চালককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
কিন্তু দেহ কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে সে বিষয়ে কিছু না জানিয়ে এর পর সেটি একটি ম্যাটাডর ভ্যানে তোলা হয়। তবে পুলিশ ব্যারিকেড করে ওই ম্যাটাডর আটকে দেয়। এর পরই বাম নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে। ব্যরিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠি চালায় বলেও অভিযোগ। কিশোরীর বাবাও পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁর অভিযোগ, ট্যাক্সি চালাতে না দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে বিহারে চলে যাওয়ার জন্য হুমকিও দিয়েছে পুলিশ। সেখানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আলাপ আলোচনা শুরু হয়। সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ ওই ম্যাটাডরে করেই শ্যামলবাবুর নেতৃত্বে সিটুর রাজ্য দফতরে কিশোরীর দেহ নিয়ে যাওয়া হয়।
শ্যামল চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ওই কিশোরীর বাবাকে নিয়ে এক প্রতিনিধি দল এ দিন দুপুরে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে। তাঁর কাছে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়। কিশোরীর বাবা রাজ্যপালকে গোটা ঘটনার আনুপূর্বিক বিবরণ দেন। রাজভবন থেকে ওই দলটি বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ ফেরার পর সিটুর রাজ্য দফতর থেকে কিশোরীর দেহ অন্ত্যেষ্টির জন্য ফের নিয়ে যাওয়া হয় নিমতলা শ্মশানে। |
|
নিমতলা শ্মশানে সিটু নেতা শ্যামল চক্রবর্তী। |
গত ২৫ অক্টোবর মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা বছর ষোলোর ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে এলাকারই কিছু দুষ্কৃতী। এ বিষয়ে মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ জানানো হয়। ২৭ তারিখে বারাসত জেলা হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার পর ভ্যানরিকশায় চেপে বাবা-মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে তাকে ওই দুষ্কৃতীদের এক জন ছোট্টু তালুকদার তুলে নিয়ে গিয়ে ফের ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়। শুরু হয় বিচারও। এরই মধ্যে মধ্যমগ্রাম ছেড়ে ওই কিশোরী সপরিবার উঠে আসে এয়ারপোর্টের কাছে একটি বাড়িতে। সেখানেই গত ২৩ ডিসেম্বর অগ্নিদগ্ধ হয় সে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মঙ্গলবার মারা যায় সে।
|
ছবি: সুদীপ আচার্য এবং সুদীপ্ত ভৌমিক। |
পালিত হচ্ছে কল্পতরু উৎসব
নিজস্ব সংবাদদাতা |
বুধবার প্রচুর ভক্ত সমাগমের মধ্য দিয়ে কাশীপুর উদ্যানবাটী এবং দক্ষিণেশ্বরে পালিত হচ্ছে কল্পতরু উৎসব। ভোর থেকেই ভিড় শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তা আরও বাড়ে। ভিড় সামলাতে দু’জায়গাতেই প্রচুর নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়। |
|
বুধবার দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইন বালি ব্রিজের উপরেও। ছবি: দেবস্মিতা চক্রবর্তী। |
ভোর চারটেয় কাশীপুর উদ্যানবাটীতে মঙ্গলারতির মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হয়। সারা দিন ধরেই চলবে বিশেষ পুজো, হোম এবং আরতি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভক্তিগীতি, ভজন, ধর্মসভা, নাচ, গান অনুষ্ঠিত হবে। তিন দিক থেকে মন্দির চত্বরে ঢোকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৮৮৬ সালের এই দিনে রোগজর্জর রামকৃষ্ণদেব কাশীপুর বাগানবাড়িতে ভক্তদের কাছে কল্পতরু রূপে ধরা দেন। সকলকে আশীর্বাদ করে বলেন, ‘তোমাদের চৈতন্য হোক’। সে ঘটনার ১২৮ বছর পরও ভক্তরা এখানে আসেন চৈতন্য এবং শান্তির খোঁজে।
অন্য দিকে, দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরে ভোরবেলাতেই বিশেষ পুজোর মাধ্যমে কল্পতরু উৎসব শুরু হয়। সারাদিন ধরেই চলবে পূজা-অর্চনা। রামকৃষ্ণদেব মন্দিরেও এ দিন বিশেষ পুজো ও ভোগের আয়োজন করা হয়েছে। ভোরবেলা থেকেই ভক্তদের বিশাল লাইন মন্দির চত্বরের বাঁশের ব্যারিকেড কয়েক পাক ঘুরে পৌঁছেছে কালী মন্দিরে। খুলে দেওয়া হয় ৩টি গেট। দর্শনার্থীদের লাইন দীর্ঘ হতে হতে বালি ব্রিজ পেরিয়ে বালি খাল পর্যন্ত পৌঁছয়। উৎসব উপলক্ষে পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে শিয়ালদহ-ডানকুনির মধ্যে এ দিন দু’জোড়া বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
|
নেপালে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হাওড়ার ৭ পর্যটকের
নিজস্ব প্রতিবেদন |
পোখরা থেকে কাঠমান্ডু যাওয়ার পথে নদীতে গাড়ি পড়ে মৃত্যু হয়েছে একই পরিবারের ৭ ভারতীয় পর্যটকের। মৃতেরা সকলেই হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতে নেপালের তানাহুন জেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। মৃতেরা হলেন বিনয়কুমার তিওয়ারি (৫৮), কমলাবতী তিওয়ারি (৫৫), নীলম ত্রিপাঠী (৩৮), পুনম ত্রিপাঠী (৩৫), নেহা ত্রিপাঠী (২০), হেমন্ত ত্রিপাঠী (১৫), এবং শ্রেয়সী ত্রিপাঠী (৫)। গত ২৫ ডিসেম্বর তাঁরা নেপালে বেড়াতে গিয়েছিলেন।
ওই দিন পোখরা থেকে ১০ জন পর্যটক নিয়ে কাঠমান্ডু যাচ্ছিল গাড়িটি। পথে তানাহুন জেলার বন্দিপুর গ্রামের কাছে রাত ১১টা নাগাদ গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ৩০০ মিটার নীচে মারসিয়াংডি নদীতে পড়ে যায়। উদ্ধারের পর যাত্রীদের উদয়পুরের লক্ষ্মী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওই ৭ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। ময়নাতদন্তের জন্য দেহগুলি ওই হাসপাতালেই রাখা হয়েছে। চালক-সহ বাকি ৪ জনের চিকিৎসা চলছে বলে সূত্রের খবর। আহত ৩ জনের নাম রবীন তিওয়ারি, সত্যেন্দ্র দুবে এবং হানি দুবে।
ওই পরিবারের ছেলে নবনীত তিওয়ারি এ দিন হাওড়ায় বলেন, “ময়নাতদন্তের পর দেহগুলি যাতে শীঘ্রই দেশে ফিরিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি। তাঁরা সাড়া দিয়েছেন।” রাজ্য সরকারের তরফে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বিষয়টি নিয়ে নেপাল সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
|
পিকনিকে গিয়ে দুর্ঘটনা, মৃত ৭
নিজস্ব প্রতিবেদন |
খবরটা পাওয়ার পর থেকেই উদ্বেগ ছড়িয়েছিল। বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তবু একটা ক্ষীণ আশা ছিল, সবার দেহ তো মেলেনি। এক জনও কি বাঁচবে না?
নতুন বছরের প্রথম দিনেই এল সেই দুঃসংবাদ। চার বন্ধুর কেউই বেঁচে নেই! পিকনিকে গিয়ে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটির গাংদোয়া জলাধারে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। বছরের শেষ দিনে গাংদোয়া জলাধারের পাড়ে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা, আট জন যুবক। বিকেলে চার জন পাড়ে বেঁধে রাখা একটি নৌকা নিয়ে জলাধারে নেমে পড়েন। খানিকটা গিয়ে নৌকা উল্টে যায়। তলিয়ে যান চার জনই। কিছু ক্ষণ পরে শৌভিক সিংহ মজুমদার (২৬) নামে এক যুবকের দেহ ভেসে ওঠে। অন্ধকার নেমে আসায় বাকিদের খোঁজ করতে পারেনি পুলিশ।
বুধবার ভোর ৫টা নাগাদ ফের উদ্ধারকাজ শুরু হয়। দু’টি বোটে বাঁকুড়ার জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা জলাধারে নামেন। ঘণ্টা তিনেক পরে ডুবে যাওয়া নৌকাটির হদিস মেলে। তার মিনিট ৪৫ পরে একে একে রাজু মান্না (২৭), উৎপল মণ্ডল (২৬) ও রিন্টু সেনের (২৮) দেহ তোলা হয়। রাজু, উৎপলদের সঙ্গে আসা সঞ্জীব কুণ্ডুর দাবি, “আমরা ফেরার তোড়জোড় করছিলাম। কয়েক জন মাঝি পর্যটকদের জলাধারে নৌকাভ্রমণে নিয়ে যাচ্ছিল। আমার চার বন্ধুও সে ভাবেই মাঝি নিয়ে গিয়েছিল। দুর্ঘটনার পরে মাঝি সাঁতার কেটে পাড়ে উঠে পালিয়ে গিয়েছে।” বাঁকুড়ার জেলশাসক বিজয় ভারতী অবশ্য বলেন, “আমি রিপোর্ট পেয়েছি, ওই চার যুবক পাড়ে বাঁধা একটি নৌকা নিজেরাই জলাধারে নিয়ে গিয়েছিলেন। কোনও মাঝি ছিলেন না। নৌকার হালও খারাপ ছিল।”
|
তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস জয় বাংলার
নিজস্ব সংবাদদাতা |
রঞ্জি ট্রফির গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস জয় তুলে নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল কার্যত নিশ্চিত করে ফেলল বাংলা। এবং লক্ষ্মীরতন শুক্লরা জিতলেন চার রানে! বাংলার অফস্পিনার সৌরাশিস লাহিড়ী একাই তুললেন সাত-সাতটা উইকেট!
ম্যাচের তৃতীয় দিনের শুরুতে জয়ের সমীকরণটা বেশ জটিলই ছিল বাংলার কাছে। তুলতে হবে বিপক্ষের ন’টা উইকেট, কিন্তু কোনও ভাবে বিরাশির বেশি রান দেওয়া যাবে না। আতঙ্কের সবচেয়ে বড় কারণ ছিলেন হাফসেঞ্চুরি করে ক্রিজে জমে যাওয়া দীনেশ কার্তিক। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে পরপর উইকেট পড়তে থাকে তামিলনাড়ুর। ১৮৫ তাড়া করতে গিয়ে একটা সময় ১৫৮-৯ হয়ে যায় তামিলনাড়ু! ওই সময় পর্যন্ত সৌরাশিসের স্পিন বুঝতেই পারছিলেন না ডব্লিউ ভি রামনের ছাত্ররা। ৩৩ ওভার বল করে মাত্র ৬২ রান দিয়ে সাত উইকেট তুলে নেন সৌরাশিস। তবে ন’উইকেট ফেলে দেওয়ার পরেও একটা সময় টেনশন তৈরি হয় উইকেট না পড়ায়। শেষ পর্যন্ত তামিলনাড়ু যখন জয় থেকে পাঁচ রান দূরে, ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় বাংলাকে কাঙ্খিত জয় এনে দেন। কিন্তু তার পরেও বাংলা কোয়ার্টার ফাইনাল চলে গিয়েছে, এখনই বলা যাবে না। নির্ভর করছে বরোজা বনাম রাজস্থান ম্যাচে কী হয় তার উপর। একমাত্র বরোদা যদি ম্যাচ থেকে ছ’পয়েন্ট তুলতে পারে, তবেই বাংলার কোয়ার্টার ফাইনাল যাওয়া আটকাবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি যা, সেই সম্ভাবনা কম। |
তুষারপাতে বিপর্যস্ত কাশ্মীর, বাতিল ট্রেন
সংবাদ সংস্থা
|
নতুন বছরের শুরুতেই প্রবল শৈত্যপ্রবাহে ও তুষারপাতে জবুথবু কাশ্মীর। টানা দু’দিন দেশের অন্য প্রান্তের সঙ্গে কাশ্মীরের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। মঙ্গলবার থেকে চলা তুষারপাতের কারণে শ্রীনগর-জম্মুর জাতীয় সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। রাজ্য পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, জওহর টানেলের আশপাশে গাড়ি চলাচল রীতিমতো বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকার ফলে প্রায় তেরোশো গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে নাগ্রোটা, বানিহাল, উধমপুর, রামবান, জওহর টানেল প্রভৃতি এলাকায়। বন্ধ রয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের অন্য রাস্তাগুলিও। রাস্তাগুলি থেকে বরফ সরানো শুরু হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করাই এখন প্রশাসনের একমাত্র লক্ষ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, একবার জাতীয় সড়কে গাড়ি চলাচল শুরু হলে আটকে থাকা গাড়িগুলিকেই আগে ছাড়া হবে। টানা দু’দিন ধরে চলা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে শ্রীনগর বিমানবন্দরে রানওয়ে পিচ্ছিল হয়ে পড়েছে। বন্ধ রয়েছে বিমান ওঠানামা। |
|
|
বরফ সরানোর কাজ চলছে শ্রীনগরের রাস্তায়। |
জাতীয় সড়কে আটকে থাকা ট্রাকের সারি। |
|
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে শ্রীনগরে পারদ নেমেছে হিমাঙ্কের ১.৩ ডিগ্রি নীচে। মঙ্গলবার রাতের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। পহেলগাঁওয়ের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৪.৬ ডিগ্রি নীচে। লে’তে শুকনো আবহাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা রয়েছে হিমাঙ্কের ৭.২ ডিগ্রি নীচে। অন্য দিকে, তুষারপাতের কারণে রাজ্যে বিদ্যুত্ পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে। বিদ্যুত্হীন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা।
নতুন বছরের শুরুতেই অবশ্য প্রবল ঠান্ডার হাত থেকে আংশিক রেহাই মিলেছে দিল্লিবাসীর। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রয়েছে ১০.৪ ডিগ্রির আশেপাশে। স্বাভাবিকের তুলনায় তিন ডিগ্রি বেশি। মেঘলা ও কুয়াশা ঢাকা আকাশ দিয়ে দিনের শুরু হলেও আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর আস্তে আস্তে আকাশ পরিষ্কার হবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করবে ১৮ ডিগ্রির আশেপাশে।
উত্তর ভারতে প্রবল কুয়াশার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রেল পরিষেবা। দৃশ্যমাণতা কম থাকায় বাতিল হয়েছে ঝাড়খণ্ড এক্সপ্রেস, উজ্জয়িনী এক্সপ্রেস এবং হাওড়া জনতা এক্সপ্রেস-সহ মোট ৭টি ট্রেন। দেরিতে চলছে দিল্লিগামী ভাগলপুর গরিবরথ এক্সপ্রেস, মহাবোধি এক্সপ্রেস-সহ ৬টি ট্রেন। |
ছবি: রয়টার্স ও পিটিআই। |
অগস্তের সঙ্গে হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি বাতিল
সংবাদ সংস্থা
|
শেষ পর্যন্ত অ্যাংলো-ইতালীয় সংস্থা অগস্ত ওয়েস্টল্যান্ড থেকে ভিভিআইপি-দের জন্য হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি বাতিল করল ভারত সরকার। বুধবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি-র বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। |
|
ছবি: এএফপি। |
২০১০-এ অগস্ত ওয়েস্টল্যান্ডের থেকে ৩৬০০ কোটি টাকার বিনিময়ে ভিভিআইপি-দের জন্য ১২টি হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি হয়েছিল। এর মধ্যে তিনটি হেলিকপ্টার এসেও গিয়েছে। কিন্তু এই চুক্তিকে কেন্দ্র করে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বায়ুসেনার প্রাক্তন প্রধান এস পি ত্যাগী এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত। সিবিআই এই অভিযোগের তদন্ত করছে। |
ঢাকায় অবরোধ অব্যাহত
সংবাদ সংস্থা |
আওয়ামি লিগ ও বিএনপি-র মহাসচিব পর্যায়ে বৈঠক হওয়া সত্ত্বেও কোনও সমাধান হল না দু’পক্ষের। ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি, তাই বুধবার বছরের প্রথম দিন থেকেই শুরু হল অবরোধ। এ দিন সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি-র নেতৃত্বাধীন ১৮টি দল অবরোধ করে। সকাল থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়া করা হয়। বিরোধীনেত্রী খালেদা জিয়ার বাড়ির চারপাশেও মোতায়েন করা হয় পুলিশ। যদিও এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনও বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি। দূরপাল্লার বাস চলাচল না করলেও শহরের প্রায় সব রাস্তাতেই পরিবহণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।
|
একদিনের ক্রিকেটে দ্রুততম শতরানের নতুন রেকর্ড
সংবাদ সংস্থা |
বুধবার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম শতরানের নতুন রেকর্ড করলেন নিউজিল্যান্ডের বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান কোরি অ্যান্ডারসন। এত দিন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৩৭ বলে দ্রুততম শতরানের রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের শাহিদ আফ্রিদির। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। এ ঘটনার ১৭ বছর পর এ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে মাত্র ৩৬ বলেই শতরান করেন অ্যান্ডারসন। ৪৭ বলে ১৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে ১৪টি ছয় এবং ছ’টি চার। এই ম্যাচেই জেসি রাইডার ৪৬ বলে ১০৪ রান করেছেন। যেটি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ষষ্ঠ দ্রুততম সেঞ্চুরি। অ্যান্ডারসন এবং রাইডারের ব্যাটের উপর ভরসা করেই এই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ২১ ওভারে ২৮৩ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৫৩ রানে হারিয়েছে। |
|