|
|
|
|
পাশে থেকেও শপথে নেই, আপ নিয়ে ধন্দে কংগ্রেস
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২৮ ডিসেম্বর |
সমর্থন না দিয়েও বিজেপি আজ হাজির রইল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের শপথ অনুষ্ঠানে। অথচ সমর্থন দিয়েও দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রীর শপথ বয়কট করল কংগ্রেস। আর এই বয়কট করা নিয়েই কংগ্রেসের মধ্যেই শুরু হয়েছে বিবাদ।
অরবিন্দকে সমর্থন করাটা উচিত পদক্ষেপ হল কি না, তা নিয়ে কার্যত দ্বিধাবিভক্ত কংগ্রেস। দিল্লিতে নয়া সরকারের শপথ অনুষ্ঠান বয়কটের প্রশ্নে দেখা গেল কংগ্রেসের সব নেতাই একজোট। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হর্ষবর্ধন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের তরফে শীলা দীক্ষিত তো দূর অস্ত্, দলের মাঝারি বা ছোটখাটো কোনও নেতাও এ দিন রামলীলা ময়দানে যাননি। এ নিয়ে কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “সমর্থন দেওয়া ঠিক কি না, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু সমর্থন দেওয়ার পরেও শপথে না যাওয়াটা মোটেই সৌজন্যের পরিচয় নয়।” কংগ্রেসের অনেকেই আবার মনে করছেন, এমনিতেই কেজরিওয়ালকে সমর্থন করা একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তার উপর আম আদমি পার্টির সঙ্গে আর ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে কাজ নেই।
দলের অন্দরের বিবাদ যাতে বাইরে না আসে, তার জন্য একযোগে শপথে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের। দিল্লিতে দলের সভাপতি অরবিন্দ সিংহ লাভলি সাফাই দিয়েছেন, আজই কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস। সে কারণে শীলা দীক্ষিত-সহ সব নেতা ব্যস্ত ছিলেন। যদিও এ যুক্তিটি তেমন জোরালো নয়। কারণ, ২৪ আকবর রোডে দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের মূল অনুষ্ঠানটি এ দিন শেষ হয়ে গিয়েছিল কেজরিওয়ালের শপথ গ্রহণের অনেক আগেই। সনিয়া গাঁধী-সহ দলের সব শীর্ষ নেতাই সেখানে হাজির ছিলেন।
সমর্থন দিয়েও শপথে না যাওয়ার পিছনে দলের অন্দরের মতবিরোধই একমাত্র কারণ নয়। বিজেপি ও অন্য বিরোধী শক্তিগুলি যে ভাবে আপ-কংগ্রেস সম্পর্ক নিয়ে চাপ বাড়িয়ে যাচ্ছে, তাতেও অস্বস্তি বাড়ছে কংগ্রেসে। বিজেপি ও অন্য বিরোধীরা গোড়া থেকেই অভিযোগ তুলছে, কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির মধ্যে গোপন আঁতাত রয়েছে। আজ আরও এক ধাপ এগিয়ে বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি নিতিন গডকড়ী অভিযোগ করেন যে, দিল্লির এক হোটেলে এক শিল্পপতির মাধ্যমে এই দুই দলের সমঝোতা হয়েছে।
এর ২৪ ঘণ্টা আগে গত কাল এক স্টিং অপারেশনে জানা গিয়েছিল, কংগ্রেসের ৮ জন বিধায়কের মধ্যে ৫ জনই কেজরিওয়ালকে সমর্থনের ঘোর বিরোধী। কংগ্রেসের দিল্লি শাখার সভাপতি লাভলি অবশ্য জানিয়েছেন, এমন কোনও মতবিরোধের কথা তাঁর জানা নেই। তবে লাভলি যা-ই বলুন কেজরিওয়াল জানেন, সমর্থন দেওয়া নিয়ে প্রবল টানাপোড়েন আছে কংগ্রেসে। তাই শপথ নিয়েই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, শেষ পর্যন্ত আস্থা ভোটে সমর্থন পাওয়া না-ও যেতে পারে। তবে সরকারের স্থায়িত্ব নয়, কাজ নিয়েই ভাবছেন তাঁরা।
কংগ্রেসের মতিগতি দেখে কেজরিওয়াল যে কিছুটা হলেও উদ্বিগ্ন, অন্য এক ভাবেও তার আঁচ মেলে এ দিন। রামলীলা ময়দানে কংগ্রেসের কাউকে না দেখে বিজেপি নেতা হর্ষবর্ধনকে কাছে টানার চেষ্টা করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “আমি হর্ষবর্ধনকে অনেক দিন ধরে চিনি। উনি খুব ভাল মানুষ। তাঁর দলের ব্যাপারে অবশ্য বলতে পারব না।” আম আদমি পার্টি সূত্রেও ইঙ্গিত মেলে, কংগ্রেস সমর্থনের কথা বললেও যে ভাবে তাঁদের কিছু নেতা বেসুরো গাইছেন, তাতেই বিজেপি-র সঙ্গেও সখ্যতা বজায় রাখার কৌশল নিয়ে চলতে চাইছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। যদিও আজ বেলা গড়াতেই গডকড়ীর বিস্ফোরক অভিযোগ কেজরিওয়ালকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। গডকড়ী বলেন, “নরেন্দ্র মোদীকে ঠেকানোর জন্য কংগ্রেস আম আদমি পার্টিকে ব্যবহার করছে। এক শিল্পপতির মাধ্যমে দুই দলের আঁতাত হয়েছে।” এর জবাবে কেজরিওয়ালের বক্তব্য, “এমন কোনও বৈঠক কোনও দলের সঙ্গেই হয়নি। আস্থা ভোটে যদি সমর্থন পাওয়া যায়, তা হলে সরকার গড়ব। না পেলে ফের জনতার কাছে যাব নতুন নির্বাচনে।” |
|
|
|
|
|