|
|
|
|
|
|
|
শতবর্ষে বিশেষ প্রদর্শনী |
‘সন্দেশী মেলা’ |
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘সন্দেশ’-এর হাত ধরে বাংলার ছেলেমেয়েদের পৃথিবীটা হঠাৎ বদলে গিয়েছিল। সচিত্র মাসিকপত্র বাংলায় তার আগেও প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু ‘সন্দেশ’ রঙিন হাফটোন ছবি, অলংকরণ, ছাপার মান, লেখার গুণ সব মিলিয়ে একেবারে অন্য মাত্রা নিয়ে এল। মাত্র আড়াই বছর (১৯১৩-’১৫) ‘সন্দেশ’ সম্পাদনা করতে পেরেছিলেন উপেন্দ্রকিশোর, তার পর দায়িত্ব নেন পুত্র সুকুমার। তিনিও চলে গেলেন ১৯২৩-এ। প্রথম পর্যায়ে ১৯২৬ পর্যন্ত, দ্বিতীয় বার ১৯৩১-’৩৫ চলেছিল ‘সন্দেশ’। ১৯৬১ সালে সুকুমার-পুত্র সত্যজিৎ আর সুভাষ মুখোপাধ্যায় উদ্যোগী হলেন নতুন করে ‘সন্দেশ’ প্রকাশে। নামটির মালিকানা তখন পরবর্তীর বিখ্যাত পুরাবিদ্ তারাপদ সাঁতরার কাছে, একটি বামপন্থী পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে। সেই ‘সন্দেশ’ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তারাপদবাবুও ওঁদের প্রস্তাবে আপত্তি করেননি। ‘সন্দেশ’ ফিরে এল তার স্বভূমিতে। সেই থেকে লীলা মজুমদার নলিনী দাশ বিজয়া রায় সুজয় সোম হয়ে সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায়ের সম্পাদনায় আজও প্রকাশিত হচ্ছে ‘সন্দেশ’। |
|
এ বার ‘সন্দেশ’-এর শতবর্ষ, উপেন্দ্রকিশোরের সার্ধশতজন্মবর্ষেই। বিভিন্ন সময় কেমন দেখতে ছিল ‘সন্দেশ’, সেটাই খুঁজেছেন পরিমল রায় আর কাজী অনির্বাণ। প্রথম দিকের প্রচ্ছদ দুর্লভ, গ্রন্থাগারে প্রচ্ছদ আর বিজ্ঞাপন ছিঁড়ে বাঁধানোই রীতি। ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে মিলেছে হারানো সম্পদ। নানা শিল্পীর আঁকা ‘সন্দেশ’-এর প্রচ্ছদ জোগাড় করেছেন ওঁরা (সঙ্গে উপেন্দ্রকিশোর ও সত্যজিতের আঁকা প্রচ্ছদ)। সুকুমার সাহিত্য সমবায় সমিতি লিমিটেড-এর নিবেদনে, সন্দীপ রায়ের পরিচালনায় ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি নন্দন ২-এ ‘নানান ছাঁচের সন্দেশী মেলা’-য় থাকছে সেই সব দুর্লভ দ্রষ্টব্য (২-৮টা)। সাড়ে চারটেয় উদ্বোধন করবেন নবনীতা দেবসেন। ছবি আর খবরে ঠাসা একটি পুস্তিকাও থাকবে। ‘‘সন্দেশ’ নিয়ে এমন বিশদ বিস্তৃত প্রদর্শনী এর আগে কখনও হয়েছে বলে তো মনে পড়ে না”, জানালেন সন্দীপ। এখানে দেখানো হবে সত্যজিতের দু’টি ছোট ছবি: ‘টু’ ও ‘সুকুমার রায়’।
|
নিজ হাতে |
|
স্বামী বিবেকানন্দের রচনার সঙ্গে আত্মীয়তা থাকলেও হস্তলিপির সঙ্গে আম-বাঙালি খুব পরিচিত নয়। রবীন্দ্রনাথের মতো বিবেকানন্দের রচনার পাণ্ডুলিপি গবেষকরা সহজে দেখতে পান না। এ বার তা অনেকটাই সম্ভব হল রামকৃষ্ণ মঠ (রামকৃষ্ণ মিউজিয়াম), বেলুড় মঠের উদ্যোগে। আ বোকে অব স্বামী বিবেকানন্দজ রাইটিংস (অদ্বৈত আশ্রম, ৫০০.০০) নামের এক সুমুদ্রিত বিপুলায়তন সংকলন গ্রন্থে বিবেকানন্দের বাংলা ও ইংরেজি রচনার বিভিন্ন পাণ্ডুলিপি সযত্নে প্রতিমুদ্রিত হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ রচনা নয়, নানা লেখা টুকরো টুকরো করে বিন্যস্ত। তবুও তো অনেক। গবেষকদের নানা কৌতূহলের নিরসন হবে।
|
ছকের বাইরে |
চেনা ছকটাকে উল্টে দিয়ে জেলা থেকে শুরু হয়েছে এ বারের সরকারি নাট্যমেলা। মালদহ, নদিয়া, বর্ধমান অনেক জেলা ঘুরে শেষে কলকাতায় এল পশ্চিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমি-র ত্রয়োদশ নাট্যমেলা। ২৯ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি রবীন্দ্রসদন, মুক্তমঞ্চ, হাওড়া শরৎ সদন, মিনার্ভা আর শিশির মঞ্চে কলকাতার আর জেলার দলের নানা নাটক। এর পরে এ মেলা যাবে আসানসোল। সংস্কৃতির কেন্দ্র তকমাটা এ বার তবে ঘুচেই গেল কলকাতার! আসা-যাওয়ার পথের ধারে সত্যিই তবে দিন বদলায় মহানগরীর।
|
সিনেমাপ্রাণ |
‘এখনকার বাংলা ছবি কেমন হচ্ছে?’ টালিগঞ্জের বাড়িতে বিছানায় আধশোয়া চুরানব্বই বছরের বৃদ্ধ মানুষটি জিজ্ঞেস করছিলেন। ষাট-সত্তর-আশির দশকে একের পর এক হিট ছবির পরিচালক, বাঙালির মনে গেঁথে আছে অগ্নীশ্বর, নিশিপদ্ম, ধন্যি মেয়ে, মৌচাক-এর মতো চলচ্চিত্র। অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়-এর ছবি মানেই সাহিত্যনির্ভর আখ্যান, দারুণ কাস্টিং, সুর-কথা-হিউমার-অভিনয়ের অনন্য চতুরঙ্গ। শান্তিনিকেতনে সাহিত্যপাঠ রবীন্দ্রনাথের কাছে, নাটকে অভিনয় করেছেন সুচিত্রা মিত্রের সঙ্গে, মঞ্চসজ্জায় রামকিঙ্কর বেজ। লেখক বনফুল তাঁর নিজের বড়দা, ছবির জগতে আসা তাঁরই উৎসাহে। অরবিন্দের হাতে নিউ থিয়েটার্স নতুন প্রাণ পেয়েছিল। উত্তমকুমারকে প্রথাগত নায়ক থেকে চরিত্রাভিনেতা করে তুলেছিলেন, আবার শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, মিঠুন চক্রবর্তী তাঁর ছবিতেই প্রথম নায়ক, জয়া ভাদুড়ি (বচ্চন) থেকে দেবশ্রী রায় নায়িকার ভূমিকায়। সিনেমাপ্রাণ মানুষটিকে নিয়ে তথ্যচিত্র ‘অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কিছুক্ষণ’ বানিয়েছেন সম্মিলনী মহাবিদ্যালয়ের ফিল্ম স্টাডিজ-এর অধ্যাপক সুব্রত রায়। সম্প্রতি দেখানো হল প্রেস ক্লাবে।
|
স্মারক বক্তৃতা |
গ্রাম-গবেষণার পুরোধা ব্যক্তিত্ব সুধীরকুমার মিত্র স্মরণীয় হয়ে আছেন তাঁর তিন খণ্ডে লেখা হুগলি জেলার ইতিহাস ও বঙ্গসমাজ-সহ নানা বইয়ের জন্য। ২০০৯ সালে তাঁর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে সম্প্রতি এই বইটির নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৯৩-এ তাঁর প্রয়াণের পর থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ‘সুধীরকুমার মিত্র স্মারক বক্তৃতা’। তপন রায়চৌধুরী, প্রতাপচন্দ্র চন্দ্র, নিমাইসাধন বসু, রমাকান্ত চক্রবর্তী, সব্যসাচী ভট্টাচার্য, রজতকান্ত রায়ের মতো বিশিষ্টরা এর আগে বলেছেন ইতিহাসের নানা বিষয়ে। ৫ জানুয়ারি সুধীরকুমার মিত্রের ১০৫তম জন্মদিন, সেই উপলক্ষে ‘কলকাতা সংস্কৃতি কেন্দ্র’-এর আয়োজনে ৪ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় অবনীন্দ্র সভাগৃহে দশম বক্তৃতা। বিষয়: ‘আঞ্চলিক ইতিহাসে লোকসংস্কৃতির প্রাসঙ্গিকতা’, বক্তা সুধীর চক্রবর্তী।
|
রসবেত্তা |
তিনটি ইমন, তিনটি কেদার, তিনটি বেহাগ, তিনটি বাহার: সব মিলিয়ে একটি সিডি— ‘ইমনে কেদারায় বেহাগে বাহারে’ (রাগা মিউজিক)। ইন্দিরা সংগীত শিক্ষায়তনের প্রবীণ রবীন্দ্রসংগীত শিক্ষক প্রসূন দাশগুপ্তের গাওয়া বারোটি গানের একটি সিডি এ ভাবেই সাজানো। প্রতিটি বিভাগে প্রথম গানটি পাক্কা রাগাশ্রয়ী। পরের দু’টি গানে রবীন্দ্রনাথ খেলেন তাঁর নিজস্ব অনুরাগের মধুর রসের খেলা। যেমন, ‘পূর্ণ-আনন্দ পূর্ণমঙ্গলরূপে’ শুধুই নিটোল ইমন। তার পরেই ‘চলে এসো ঘরে, পরবাসী’ আর ‘কেন যে মন ভোলে’। রাগে লাগে নতুন রং, তা বাণীরূপকে নিয়ে যায় অন্য এক অমরাবতীতে। রাগ শিখে রাগ ভুলতে ভুলতে গান লিখেছি— এ কথা বলে রবীন্দ্রনাথ ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছিলেন, তারই যেন নিদর্শন এটি। বিশুদ্ধতা-সন্ধানী শিক্ষকের মনোযোগ আর রসসন্ধানী শিল্পীর মিলন ঘটেছে এই সিডিতে।
|
বারোমাস |
বড়দিনে বেরোচ্ছে ‘বারোমাস’। জাঁকিয়ে শীত পড়ার মুখে জমকালো চিন্তার সমাহার। প্রথমেই ‘এক্ষণ’ বিভাগে এই মুহূর্তে যে সব চিন্তা নাড়িয়ে দিচ্ছে তা নিয়েই একগুচ্ছ রচনা, জানালেন সম্পাদক অশোক সেন। বাংলাদেশ বা দার্জিলিঙের হাল-হকিকত, শিক্ষার ভাঙাগড়া, বেঁচে-থাকার সমষ্টিগত চেতনা, আর মণীন্দ্র গুপ্তের ‘চিন্তাসিঁড়ি’। অমিয় দেব, শেফালী মৈত্র, আশীষ লাহিড়ী, অনুরাধা রায়, সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরীন ভট্টাচার্যর প্রবন্ধাদির সঙ্গে স্থবির দাশগুপ্তর ‘সফল বার্ধক্যের সন্ধানে’, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অন্য ভাবে দেখা ‘আঠারো-উনিশ শতকের ভারতবর্ষ’ ও ‘ভদ্রলোক প্রসঙ্গে’ দীপেশ চক্রবর্তীর রচনা পাঠককে ভাবাবে। গ্রাম-সংসদ, সিঙ্গুরের জমি, উন্নয়নের তর্ক ও তত্ত্ব নিয়ে স্বাতী ভট্টাচার্য অমিতাভ গুপ্ত দীপংকর দাশগুপ্ত মৈত্রীশ ঘটকের রচনা। সিনেমা-থিয়েটার-সিরিয়াল নিয়ে লিখেছেন মৈনাক বিশ্বাস, দেবাশিস মজুমদার, পৌলমী দাস চট্টোপাধ্যায়। রবীন্দ্রনাথ নিয়ে সোমেশ্বর ভৌমিক ও অনাবিষ্কৃত সত্যপ্রিয় ঘোষকে নিয়ে রুশতী সেন। সুধীর চক্রবর্তী ও শ্যামলকুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বিশেষ রচনা’র সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের আলোচনা, গল্প ও কবিতা।
|
শ্রদ্ধার্ঘ্য |
|
দুর্লভ মুহূর্ত! সত্যজিৎ আর হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায় দু’জনেই মাইক্রোফোনের সামনে। রেডিয়ো-নাটকের রেকর্ডিং চলছে, ‘বাক্স রহস্য’, সত্যজিতের লেখা, তাঁরই নাট্যরূপ, পরিচালনা সন্দীপ রায়ের। ‘অ্যাড মেকার্স-এ কাজ চলছিল, যদ্দূর মনে পড়ছে, আশির দশকের শুরু। আমার পরিচালনায় হাতেখড়ি ওই রেডিয়ো-নাটকেই,’ বলছিলেন সন্দীপ। ছবিতে সৌমিত্র, কামু, সিদ্ধার্থকেও দেখা যাচ্ছে। আগামী ৫ জানুয়ারি (২০১৪) সত্যজিতের অতি পছন্দের অভিনেতা হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণের প্রথম বছর পূর্ণ হবে (জ. ১৯২৬), দিনটিকে স্মরণ করতে ৫-৭ জানুয়ারি নন্দন আর সমলয়-এর যৌথ শ্রদ্ধার্ঘ্য। প্রথম দিন সন্দীপ রায়, গৌতম ঘোষের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন মুম্বইয়ের অনুরাগ বসু, বাংলাদেশের গোলাম কুদ্দুস। থাকবেন মাধবী, সৌমিত্র থাকতে না পারলেও তাঁর লেখা পড়া হবে, সত্যজিতের ‘কাপুরুষ’ দেখানো হবে সে সন্ধ্যায়। পরের দু’দিন শাখাপ্রশাখা, ফটিকচাঁদ, ক্রান্তিকাল, কড়ি দিয়ে কিনলাম। পাশাপাশি একটি প্রদর্শনীও চলবে হারাধনবাবুর নিজের ও অভিনীত ছবির স্থিরচিত্র নিয়ে, সঙ্গে তাঁর অভিনীত চরিত্রের ব্যবহৃত উপকরণাদিও থাকবে। নানা বিশিষ্ট জনের লেখালেখি নিয়ে একটি পুস্তিকাও প্রকাশ করা হচ্ছে, জানালেন তাঁর পুত্র প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরল এই ছবিটি তুলেছিলেন হীরক সেন।
|
ছোটদের উৎসব |
|
একটা বৃত্তের মধ্যে ইংরেজি ক্যাপিটালে ‘এ’ অক্ষরটা লেখা থাকে না বটে, কিন্তু ফিল্ম বাফ-রা জানেন কলকাতার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ছোটদের প্রবেশ একরকম নিষিদ্ধই। নেহাত করুণা করে খানিকটা ছিটিয়ে দেওয়ার মতো ‘চিলড্রেন’স স্ক্রিনিং’ নাম দিয়ে কয়েকটা সিনেমা শিশির মঞ্চে, ব্যস চলচ্চিত্র উৎসবে ছোটদের প্রবেশ ওইটুকুই। চিত্রটা এমনই ছিল বছর দুয়েক আগেও। কিন্তু ক্রমেই জমে উঠছে তিনটে নন্দন, রবীন্দ্রসদন, শিশির মঞ্চ, অহীন্দ্র মঞ্চ, স্টার আর রবীন্দ্রতীর্থ— ছোটদের সিনেমার উৎসবে। চার্লি চ্যাপলিন আর নারায়ণ দেবনাথকে শ্রদ্ধা জানানো, ঋতুপর্ণ ঘোষকে স্মরণ, লুই ক্যারল, গ্রিম ব্রাদার্স আর শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প থেকে সিনেমা। কাকাবাবু রেট্রোস্পেক্টিভ, এভারেস্ট বিজয়ের ষাট বছর, সমকালীন ডাচ সিনেমা, জীবনীমূলক সিনেমা— ছোটদের জন্য পুরোদস্তুর একটা সিনেমার উৎসব। উদ্বোধনী ছবি ছিল মরাঠি ‘শ্বাস’। ছোটরাই সেখানে ‘ডেলিগেট’। উৎসব উপলক্ষে প্রতিটি সিনেমার গল্প, ছবি আর তথ্য দিয়ে সাজানো ঝাঁ-চকচকে বইও প্রকাশিত হয়েছে। শিশু কিশোর অ্যাকাডেমি-র আয়োজনে এই অন্য রকম উৎসব চলছে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
|
কবির সম্মান |
প্রতিটি পুরস্কার পকেটে ঢোকার আগে
উঁকি দিয়ে বলে যায়
তুমি ভালো হয়ে চলো
আমিও ভালো হয়ে চলব।’ সাম্প্রতিকতম বই মেয়েদের টয়লেটে কী করছিলাম-এর ‘পুরস্কার’ কবিতায় লিখছেন সুবোধ সরকার। সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পাওয়ার পরে আপনিও ভাল হয়ে চলবেন? তা হলে অমন সোজাসাপ্টা তির বেঁধাবে কে? “কোনও পুরস্কার আমার হাত থেকে তির কেড়ে নিতে পারবে না। আমার কাজটা আমি করে যাব। সুবোধ সরকার দুষ্টু-ই থাকবে,” সহাস্য উত্তর কবির। আনন্দ পাবলিশার্সের দ্বৈপায়ন হ্রদের ধারে কবিতাগ্রন্থের জন্য এ বছরের সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেলেন সুবোধ। আদতে সিটি কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক, এ পর্যন্ত লিখেছেন ২৬টি কবিতার বই। সাহিত্য অকাদেমির ইংরেজি পত্রিকা ‘ইন্ডিয়ান লিটারেচার’ সম্পাদনা করেছেন কয়েক বছর। ১৯৮৮ সালে তাঁর সম্পাদনায়, মল্লিকা সেনগুপ্তের সহ-সম্পাদনায় প্রকাশ পেয়েছিল ‘ভাষানগর’ পত্রিকা: ‘অভিজ্ঞ প্রৌঢ়ের চেয়ে হঠকারী তরুণের প্রতি... চাঁদের মাটির চেয়ে এই মৃত্তিকার প্রতি রইল আমাদের অলজ্জ পক্ষপাত’। ‘ভাষানগর’ ধারাবাহিক ভাবে বাংলা কবিতার সঙ্গে ভারতের অন্য ভাষার কবিতার সংযোগ গড়েছে। পত্রিকার পঁচিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাই দেশের নানা প্রান্তে বছরভর অনুষ্ঠান। প্রথমটি হয়ে গেল বুদ্ধগয়ায়, ২০-২১ ডিসেম্বর। পরে এ শহর তো বটেই, দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ, বেনারস ও গুয়াহাটিতে হবে একাধিক অনুষ্ঠান।
|
|
|
|
|
শিল্পী |
জলরঙে আলোর ছবি আঁকতেন তিনি। স্বচ্ছ জলরঙে আলো খেলা করে যেত তাঁর ছবিতে। আর সেই জলরঙের কাজের জন্যই স্মরণীয় হয়ে থাকবেন শ্যামল সেন। সম্প্রতি রাজা বসন্ত রায় রোডের বাড়িতে প্রয়াত হলেন এই শিল্পী। ১৯৩৪-এ এ শহরেই জন্ম। প্রথাগত শিল্পশিক্ষা প্রায়োগিক শিল্পে। পরে ক্রমশ পেন্টিংয়ের দিকে ঝুঁকেছিলেন। ৭৯ বছর বয়সেও মৃত্যুর আগে পর্যন্ত শিল্পজগতে সক্রিয় ছিলেন শ্যামল। ছবি আঁকতেন, মাঝে মাঝে প্রদর্শনী করতেন। তরুণ শিল্পীদের তুলে ধরার জন্য নিজের বাড়িতেই তৈরি করেছিলেন গ্যালারি ৭৯। গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন শ্যামল সেন। গণেশ পাইন, গণেশ হালুই, শুচিব্রত দেবের সমসাময়িক শিল্পীর শিল্পজীবন শুরু হয়েছিল পেন্টিং দিয়ে নয়, অলংকরণ দিয়ে। পাশাপাশি কমার্শিয়াল আর্টের অন্য দিকেও মন দিয়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন বিজ্ঞাপন সংস্থা ‘শ্যামল সেন ডিজাইন গ্রুপ’। পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকার জন্য গল্প-উপন্যাসের অলংকরণ করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘দেশ’ পত্রিকার পুজোসংখ্যায় প্রকাশিত ধনঞ্জয় বৈরাগীর ‘কালো হরিণ চোখ’, প্রফুল্ল রায়ের ‘সিপি’, সুশীল রায়ের ‘কামিনীকাঞ্চন’-এর মতো গল্প। মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশনে শিল্প-শিক্ষকতা করেছেন বেশ কিছু দিন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব প্রিন্টিং টেকনোলজিতেও পড়াতেন। আর ছিল আজীবনের ভালবাসা, থিয়েটার। ‘বহুরূপী’-তে কয়েকটি নাটকের মঞ্চসজ্জাও করেছেন তিনি। |
|
|
|
|
|
|