গেরুয়া ঝড়ে ধরাশায়ী কংগ্রেস, চমক ‘আপ’
নিজস্ব প্রতিবেদন |
চার রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচন থেকে আসন্ন লোকসভা ভোটের রসদ তুলে নিল বিজেপি! ঠিক ততটাই ধাক্কা খেল কংগ্রেস। আর রাজধানী দিল্লিতে সাড়া জাগিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ‘আম আদমি পার্টি’র (আপ)!
চার রাজ্যের মধ্যে চারটিতেই এই মুহূর্তে সরকার গড়ার দিকে এগিয়ে বিজেপি। রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে তাদের সরকার আসছে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে। দিল্লিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে কয়েকটি আসন এখনও কম থাকলেও ত্রিমুখী লড়াইয়ে এক নম্বর দল বিজেপি-ই। দিল্লির ৭০টি আসনের মধ্যে বিজেপি এগিয়ে ৩৩টিতে, আপ ২৭টিতে। কংগ্রেস নেমে গিয়েছে একেবারে তৃতীয় স্থানে! কোনও দলের সঙ্গেই তাঁরা জোট করবেন না বলে কেজরিওয়াল জানিয়ে দেওয়ায় দিল্লির চিত্র এখনও পরিষ্কার নয়। অন্য দিকে, ছত্তীসগঢ়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে কংগ্রেস এবং বিজেপি-র। তবে রমন সিংহের দলই সামান্য এগিয়ে। |
জয়ের পর মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। ছবি: এএফপি। |
তিন রাজ্যে কংগ্রেস-বিরোধিতার হাওয়া টের পাওয়া গিয়েছে রবিবার সকালে ভোট-বাক্স খুলতেই। বেলা বাড়তেই তাই বিজেপি-র মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে নরেন্দ্র মোদীকে কৃতিত্ব দেওয়ার। মোদীর গুজরাতের পাশের রাজ্য রাজস্থানে কংগ্রেসকে শোচনীয় ভাবে পর্যুদস্ত করার নেপথ্যে দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর ম্যাজিক কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বসুন্ধরা রাজে। মোদী আবার পাল্টা অভিনন্দন জানিয়েছেন বসুন্ধরাকে। মোদীর অভিনন্দন-বার্তা পৌঁছেছে শিবরাজ সিংহ চৌহানের কাছেও। তৃতীয় বারের জন্য মধ্যপ্রদেশের ক্ষমতায় ফিরে যিনি মধ্যপ্রদেশের জনতাকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন! এমনকী, দিল্লিতেও অধিকাংশ মানুষের সমর্থন তাঁরা পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিজেপি-র সভাপতি রাজনাথ সিংহ। অন্য দিকে, কংগ্রেস শিবিরে এখন ধাক্কা সামলানোর পালা! কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী বলেছেন, “বিনয়ের সঙ্গে মানুষের রায় মেনে নিচ্ছি। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।” মূল্যবৃদ্ধির মাসুল তাঁদের দিতে হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। কোথায় তাঁদের ভুল হল, সে সব খুঁজে বার করতে এখন আত্মসমীক্ষার সময় এ কথাও মেনে নিয়েছেন সনিয়া। মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীকে (যিনি এ বারের প্রচারে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন) বলতে হয়েছে, “আগামী দিনে আরও অনেক পরিশ্রম করতে হবে আমাদের।” তবে ভোটের এই ফল উত্তরপ্রদেশের পরে ফের আরও এক বার রাহুলের প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল কি না, এই অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে কংগ্রেস নেতাদের! রাজস্থানের সচিন পায়লট বা মধ্যপ্রদেশের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া মেনে নিয়েছেন, দেওয়ালের লিখন এখন পরিষ্কার! কোথাও কংগ্রেসের ভুল হচ্ছে! |
দিল্লিতে দলীয় কার্যালয়ের বাইরে ‘আপ’ সমর্থকদের উল্লাস। ছবি: এএফপি। |
টানা ১৫ বছর কংগ্রেসের সরকারকে সমর্থন করার জন্য দিল্লিবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন শীলা দীক্ষিত। নয়াদিল্লি কেন্দ্রে তিনি নিজেও হেরেছেন কেজরিওয়ালের কাছে। আর প্রত্যেকটি কেন্দ্রের জন্য আলাদা ইস্তাহার তৈরি করে লড়তে নেমে কংগ্রেস এবং বিজেপি, দু’পক্ষেরই হাল খারাপ করে দিয়েছে আপ। তবে বিজেপি-র একাংশ বলছে, দিল্লির হাওয়া ছিল কংগ্রেস-বিরোধীই। তার ফায়দা আপ এতটা তুলে না নিলে সহজে সরকার হত বিজেপি-রই। |
এক নজরে... |
• শীলা দীক্ষিতকে পরাস্ত করে ২৫ হাজার ৮৬৪ ভোটে জয়ী হলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
• ১৫ বছর পর দিল্লির ‘মসনদ’ হাতছাড়া কংগ্রেসের। হারের দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শীলা দীক্ষিত।
• রাজস্থানে হার স্বীকার করলেন অশোক গহলৌত।
• মানুষ আমাদের আশীর্বাদ দিয়েছেন। তাঁদের আশা আমরা পূরণ করবই। চার রাজ্যেই সরকার গড়বে বিজেপি।—রাজনাথ সিংহ
• মধ্যপ্রদেশের নির্বাচনী ফলে আমি অভিভূত। এই জয় মধ্যপ্রদেশের মানুষের জয়—শিবরাজ সিংহ চৌহান।
•
রাজস্থানে বিজেপির জয়ের পিছনে রয়েছে মোদী ‘ফ্যাক্টর’। এই জয় রাজস্থানবাসী ও কর্মী-সমর্থকদের উত্সর্গ করলাম—বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া।
• বিজেপির এই ফলে খুশি, আত্মতুষ্ট নই।—মুক্তার আব্বাস নকভি।
• কংগ্রেসকে আর চায় না দেশ। চার রাজ্যের ফলই তার প্রমাণ।—নিতিন গডকড়ী।
• মানুষের এই রায়কে সম্মান জানাই। নির্বাচনে কংগ্রেসের এই ফল বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে।—শীলা দীক্ষিত।
• বিরোধীদের জয়ের অভিনন্দন জানাই। মানুষের রায়কে সম্মান জানাই। হারের কারণ বিশ্লেষণ করা হবে।—সনিয়া গাঁধী
• বিরোধীদের এই জয়ে শুভেচ্ছা জানাই। শীলা দীক্ষিত ভাল কাজ করেছেন। হারের কারণ পর্যালোচনা করা হবে। আম আদমি পার্টির কাছ থেকে শিক্ষা নেব—রাহুল গাঁধী • আম আদমি পার্টি-র এই ফলে আমি খুশি— অণ্ণা হজারে।
• কংগ্রেস ও বিজেপি কাউকেই সমর্থন নয়। কারও সমর্থন নেবে না আপ— অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
|
|
‘স্টেইন গান’-এ বিধ্বস্ত ভারত |
ডারবানে কোনও দিন এক দিনের ম্যাচ না জেতার রেকর্ড অক্ষুন্ন রাখল ভারত। মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে গেল ধোনিবাহিনী। সৌজন্যে ডেল স্টেইন অ্যান্ড কোং। শুধু স্টেইন নন, সোতসোবে এবং মর্কেলের পেসে এক্কেবারে ধরাশায়ী ভারতের সাধের ব্যাটিং লাইন আপ। রবিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ওয়ান ডে-তে টসে জিতে ফিল্ডিং-এর সিদ্ধান্ত নিল ভারত। ব্যাট করতে নেমে ডি কক ও হাসিম আমলার ব্যক্তিগত শতরানে ভর করে প্রথম ইনিংস শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ২৮০/৬। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন সামি। অপর দু’টো উইকেট নেন অশ্বিন ও জাডেজা। ৩৬ ওভারের মাথায় ডি ককের উইকেটটি তুলে নিয়ে কক-আমলা জুটিতে চিড় ধরান অশ্বিন। এর পরেই হাসিম আমলাকে ব্যক্তিগত শতরানে আউট করেন শামি। তারপর থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যটিংয়ে কিছুটা ধস নামতে শুরু করে। অল্প রানেই ফিরে যান ডুমিনি ও কালিস।
ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং শিখর ধবন মাঠে নামেন। গোলাপি-সবুজ ঝরের মুখে কার্যত শূন্য রানেই মাঠ ছাড়তে হয় ধবনকে। ব্যক্তিগত ১৯ রানে মাঠ ছাড়েন রোহিত শর্মা। কোহলি মাঠের বাইরে হুঙ্কার ছাড়লেও মাঠের মধ্যে কিন্তু শেষ হাসি হাসলেন সোতসোবে। শূণ্য রানেই মাঠ ছাড়তে হয় কোহলিকে। এক সময়ে মনে হয়েছিল ভারত হয়তো ১০০-র গণ্ডিও পেরোতে পারবে না। রায়না, ধোনি ও জাডেজার জন্য শেষ পর্যন্ত ৩৫.১ ওভারে ১৪৬ রান তুলতে পেরেছে আইসিসি-র বিচারে এক নম্বর দল ভারত।
|
দক্ষিণ আফ্রিকা |
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ২৮০/৬
ওভার: ৪৯
ডি কক ১০৬, সামি ৪৮/৩ |
ভারত |
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ১৪৬
ওভার: ৩৫.১
রায়না ৩৬, সোতসোবে ২৫/৪ |
|
নিউটাউনে দুর্ঘটনা, মৃত ১
নিজস্ব সংবাদদাতা |
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে একটি মোটরবাইককে ও পরে একটি স্কুটারকে ধাক্কা মারল একটি গাড়ি। এই ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা গেলেন মোটরবাইকের আরোহী। স্কুটার চালক গুরুতর জখম। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকেল চারটে নাগাদ নিউটাউন থানা এলাকার যাত্রাগাছি মোড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম আহমেদ রহমান খান (৩০)। আহত যুবকের নাম মিলন মিত্র (২৭)। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন বিকেল চারটে নাগাদ এয়ারপোর্ট থেকে সল্টলেকমুখী একটি গাড়ি নিউটাউন রোডে যাত্রাগাছি মোড়ের কাছে প্রথমে একটি গাড়ি প্রচন্ড গতিতে প্রথমে মোটরবাইককে পেছন থেকে ধাক্কা মারে। তারপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে ধাক্কা মারে একটি স্কুটারকে। মোটরবাইকের আরোহী আহমেদ রহমান খান ছিটকে পড়েন রাস্তা থেকে অনেকটা দূরে। স্কুটার আরোহী মিলনবাবুও রাস্তায় ছিটকে পড়েন।
গাড়ির চালক শৈবাল চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, শৈবালবাবুর বাড়ি সল্টলেকের ডি এল ব্লকে। তিনি একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। |