বিধায়কের পদ ছেড়েই তৃণমূলে যেতে চান অজয়
ংগ্রেস ছাড়ছেন, প্রায় নিশ্চিত। তবে নৈতিকতার বিচারে অরুণাভ ঘোষ, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই হাঁটতে চান অজয় দে। বিধায়কের পদে ইস্তফা দিয়েই তৃণমূলে যেতে চাইছেন শান্তিপুরের অজয়বাবু।
কবে তিনি কংগ্রেস ছাড়বেন, তা নিয়ে অজয়বাবু মন্তব্য করছেন না। তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামীরা জানান, কংগ্রেস-ত্যাগের বিষয়ে তিনি প্রায় মনস্থ করেই ফেলেছেন। রাজনৈতিক শিষ্টাচার মেনেই পদক্ষেপ করবেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় শুক্রবার বলেন, “আমার সঙ্গে অজয়বাবুর চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। তবে দু-তিন দিনের মধ্যেই অজয়বাবুদের আমাদের দলে নেওয়ার ব্যাপারটা চূড়ান্ত হয়ে যাবে।” আগামী সপ্তাহের গোড়ায় অজয়বাবু কংগ্রেস ছাড়তে পারেন বলে তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন।
তৃণমূলে এলে অজয়বাবুকে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যও করা হতে পারে বলে তৃণমূল অন্দরের খবর। এর আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসায় মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকেও মন্ত্রী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পুনর্নির্বাচনে হুমায়ুন হারায় মন্ত্রী থাকতে পারেননি। অজয়বাবুকেও দল ছাড়ার পরে মন্ত্রী থাকতে গেলে ফের বিধায়ক পদে নির্বাচিত হতে হবে। নৈতিকতার নিরিখে তিনি বিধায়ক পদ ছেড়েই দল বদলের কথা ভাবছেন। তবে কংগ্রেস পরিষদীয় দল সূত্রের বক্তব্য, বিধায়ক-পদ না-ছেড়ে তৃণমূলে গেলে দলত্যাগ-বিরোধী আইনে আটকাবেন তিনি। কংগ্রেস স্পিকারকে চিঠি দিলে বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যাবে। যেমন হয়েছিল সোমেন মিত্র বা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই ‘অসম্মান’ চান না বলেই নিজেই ইস্তফা দিয়ে যেতে চান অজয়বাবু।
শান্তিপুর থেকে ১৯৯১-এ প্রথম জেতার পর থেকে পাঁচ বারের বিধায়ক অজয়বাবু। শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান ’৯০ থেকে। তিনি দল ছাড়ার সঙ্গে শান্তিপুর পুরসভার দখলও রাজ্যের শাসক দলের হাতে চলে আসবে বলে তৃণমূল নেতাদের একাংশের ধারণা। শান্তিপুরের ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে এখন ২২টিই কংগ্রেসের। অজয়বাবুর সঙ্গে এঁদের বড় অংশই কংগ্রেস ছেড়ে তাঁদের দলে আসবেন বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি।
অজয়বাবুর ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, মূলত এলাকায় উন্নয়নের কাজের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং দলীয় কর্মীদের নিরাপত্তার কারণেই কংগ্রেস ছাড়ার কথা ভেবেছেন তিনি। সবিস্তার মন্তব্য করতে চাননি নদিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর সিংহ। তাঁর কথায়, “অজয়বাবু প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি। যা বলার, প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বই বলবেন।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “আমার কাছে নিশ্চিত কোনও খবর নেই। অজয়ের সঙ্গে সোমবার আলোচনায় বসার কথা।” কংগ্রেসের অজয়-বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাদের অভিযোগ, “রানাঘাট, কুপার্স ও কৃষ্ণনগর পুরসভা কংগ্রেসের হাত থেকে তৃণমূল যে ভাবে টাকা ও প্রশাসনের সাহায্যে দখল করেছে, শান্তিপুরেও তা-ই করতে চলেছে! তবে নদিয়াবাসী তো নেতাদের মতো কংগ্রেসের উপর থেকে তাঁদের সমর্থনের সরিয়ে নেবেন না! কংগ্রেসও এখানে শেষ হয়ে যাবে না!”
তৃণমূল সূত্রের ইঙ্গিত, অজয়বাবুই শুধু নন, তৃণমূলের নিশানায় বাঁকুড়া, বীরভূমের দুই কংগ্রেস বিধায়কও আছেন। লোকসভা ভোটের আগে দলে ভাঙন রোধে কী করণীয়, তা নিয়ে চিন্তায় প্রদেশ নেতৃত্বের বড় অংশ। প্রদীপবাবু বিষয়টি দিল্লিকে জানিয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি মানস ভুঁইয়া মনে করেন, “দল ভাঙানোর যে অসুস্থ, অনৈতিক রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গে চালু হয়েছে, সব দলেরই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত! তা না হলে ভবিষ্যৎ ভয়ঙ্কর!”
ভাঙন রুখতে দিল্লি বা কারও কোনও টোটকা কাজে লাগবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে কংগ্রেসের অন্দরেই। আপাতত অজয়বাবুরা দল ছাড়লেই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে বিধানসভায় কংগ্রেসের প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পাওয়ার দাবি!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.