প্রাক-পলাশি কলকাতার দুর্লভ স্মৃতিচিহ্ন
ব্ল্যাক প্যাগোডা
লকাতার দাপুটে জমিদারের দাপুটে কীর্তি। শহরে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জমানা তখনও চার দশক পেরোয়নি, সাহেব জমিদারের অধীনে ‘ব্ল্যাক ডেপুটি’ই হর্তাকর্তাবিধাতা। লাগামছাড়া ক্ষমতার সঙ্গে আমদানিও বিপুল। হলওয়েল অনেক চেষ্টা করেও তাঁর গায়ে আঁচড় কাটতে পারেননি, সাহেবদের নাকের ডগায় আজীবন ছড়ি ঘুরিয়েছেন গোবিন্দরাম মিত্র। ১৭৩০-এ চিতপুর রোডের উপর কুমোরটুলিতে বানালেন এক মন্দির, যার মূল চূড়ার উচ্চতা ছিল আজকের শহিদ মিনারের থেকেও বেশি। ১৭৩৭-এর ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে সে মন্দির খুব ক্ষতিগ্রস্ত হলেও একেবারে ভেঙে পড়েনি। আশ্চর্যের বিষয়, তৈরির পর একশো বছর পেরিয়েও এই ‘ব্ল্যাক প্যাগোডা’ সে কালের কলকাতার অন্যতম প্রধান দ্রষ্টব্য ছিল, অন্তত বিদেশিদের চোখে। টমাস ড্যানিয়েল (১৭৮৭, সঙ্গে ডান দিকের ছবি) থেকে বালথাজার সলভিন্স, জেমস বেইলি ফ্রেজার, টমাস প্রিন্সেপ হয়ে চার্লস ড’য়লি (১৮৩০) পর্যন্ত বিখ্যাত শিল্পীরা এর ছবি এঁকেছেন, এমনকী ফোটোগ্রাফির আদিযুগে ফ্রেডরিক ফিবিগ এর ছবিও তুলেছিলেন (১৮৫১)।
মূল মন্দির ভাঙতে ভাঙতে কোথায় পৌঁছল, তার খানিকটা ইতিহাস ধরা রয়েছে এই সব ছবি আর আলোকচিত্রে।
কিন্তু অনেকেই খোঁজ রাখেন না, ২৮৩ বছর পেরিয়েও গোবিন্দরামের মন্দির আজও আংশিক ভাবে টিকে আছে (বাঁ দিকে শুভাশিস ভট্টাচার্যের তোলা ছবি)। ড্যানিয়েলের ছবির মধ্যমণি, মূল পঞ্চরত্নটি হারিয়ে গিয়েছে উনিশ শতকের গোড়াতেই। সামনের নবরত্ন আর প্রবেশপথের দোচালাটি নতুন নতুন সংযোজনের মধ্যে কোনও রকমে বোঝা যায়। তাদেরও জীর্ণ অবস্থা। প্রথম শ্রেণির এই ঐতিহ্যবাহী পুরাকীর্তিটি বিজ্ঞানসম্মত ভাবে সংস্কারের উদ্যোগ কোনও দিনই হয়নি। কোথাও কোনও ফলক নেই যা এর অতীত ইতিহাসের আভাস দিতে পারে। স্থাপত্যরীতির দিক থেকে বাংলায় এই মন্দির কতটা ব্যতিক্রমী ছিল, তা দেখিয়েছেন তারাপদ সাঁতরা তাঁর কলকাতার মন্দির-মসজিদ (আনন্দ) বইয়ে। প্রাক-পলাশি কলকাতার এই স্থাপত্যটি আজও ঐতিহ্য-সংরক্ষকদের কাছে তেমন গুরুত্ব পায়নি, এটা খুবই দুঃখের।

জন্মদিনে
‘ঋত্বিক আইজেনস্টাইনের কাছ থেকে গণ্ডি পেরিয়ে হাত বাড়ানোর এই বাসনা উত্তরাধিকার হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর এই গ্রহণ করা শ্রদ্ধায় অন্ধ অনুকরণের প্রথাসিদ্ধ নয়... তিনি গ্রহণ করেছিলেন ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার বিষয়টা— যার রূপ দেখা যায় ওরাওঁদের নাচে, বাউলদের লেখায়, বাংলাদেশের জেলেদের মুখের বুলিতে।’— কুমার সাহানির লেখা ঋত্বিককুমার ঘটক সম্পর্কে। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে সারা দুনিয়ার মানুষ আজও তাঁদের স্মৃতিতে ধার্য করে রেখেছেন ঋত্বিককে, কিন্তু আমরা? পূজার ছলে তাঁকে প্রায় ভুলেই থাকি। আজ ৪ নভেম্বর তাঁর জন্মদিন (জ. ১৯২৫), অন্তত নন্দন আর ঋত্বিক মেমোরিয়াল ট্রাস্ট তা পালন করবে। সন্ধে ৬টায় ঋত্বিকপুত্রকন্যা ঋতবান-সংহিতা-সহ উপস্থিত থাকবেন রঞ্জিৎ মল্লিক, হরনাথ চক্রবর্তী, যাদব মণ্ডল, এবং সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। দেখানো হবে ঋত্বিকের স্বল্পদৈর্ঘ্যের দু’টি ছবি ‘রামকিঙ্কর’ (১৯৭৫) ও ‘দুর্বার গতি পদ্মা’ (১৯৭১)।

যুগলবন্দি
মন্দাক্রান্তা সেনের ‘পরমা’ কবিতার প্রথম লাইনই— ‘আমি এক বৃক্ষ-নারী’। এই বৃক্ষ-নারীকেই ছবির বিষয় করে তুলেছেন দ্বিজেন গুপ্ত (সঙ্গের ছবি)। ২১ জন বিশিষ্ট কবির কবিতাকে কেন্দ্র করে দ্বিজেনের একক প্রদর্শনী ‘যুগলবন্দি’, অ্যাকাডেমি’র নর্থ গ্যালারিতে, ৬-১১ নভেম্বর। ৬ নভেম্বর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উদ্বোধন করবেন রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ও গণেশ হালুই। কবিতা আর চিত্রকলার হাতমেলানোই দ্বিজেনের মুখ্য বিষয়, এ নিয়ে তাঁর ছবির ক্যাটালগ-এ লিখেছেনও কিউরেটর সুশোভন অধিকারী (কলাভবন, শান্তিনিকেতন)। কবিতাগুলি অনুবাদ করেছেন নিত্যপ্রিয় ঘোষ, মঞ্জুষ দাশগুপ্ত, মন্দাক্রান্তা সেন।

বাগবাজার
উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণের আশীর্বাদধন্য ব্যক্তি ও কালস্পর্শে উন্মোচিত পীঠস্থান বাগবাজার। এক সময় বাগবাজার ছিল সুতানুটি গ্রামের অন্তর্ভুক্ত। বাগবাজারেই সুতো ও নুটির ব্যবসা হওয়ায় নাম ছিল সুতানুটি। শ্রীরামকৃষ্ণ ও সারদা মা’র পদস্পর্শে বাগবাজার ধন্য। থাকতেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম একে কতখানি চেনে? সেই ভাবনা থেকেই ১৫ অগস্ট প্রকাশিত হল বাগবাজারের একটি মুখপত্র ‘কেয়ার অব বাগবাজার’। প্রকাশ পেয়েছে অক্টোবর সংখ্যাও। কেমন ছিল ঊনবিংশ বা বিংশ শতাব্দীর বাগবাজার, সেখানকার মানুষের চালচলন, জীবনযাত্রা, সেখানকার ইতিহাস, সঙ্গে এখনকার খবর সবই উঠে আসছে এই মুখপত্রে।

পরম্পরা
বাবা বিমল বসু পেয়েছিলেন শৈলজারঞ্জন মজুমদারের সান্নিধ্য। বাবার কাছেই গান শেখায় হাতেখড়ি ঋদ্ধিমান বসুর। পরে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নেন পণ্ডিত দীননাথ মিশ্রের তত্ত্বাবধানে। ১০ নভেম্বর বিড়লা অ্যাকাডেমি প্রেক্ষাগৃহে ‘কথা ও সুর’ এর নিবেদন ‘সঙ্গীত পরম্পরা’। প্রথম পর্বে থাকবে প্রবীণ বিমল বসুর সঙ্গে নবীন ঋদ্ধিমানের একগুচ্ছ প্রেমাশ্রিত রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘তুমি কিছু দিয়ে যাও’। দ্বিতীয় পর্বে লঘু শাস্ত্রীয় সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ঋদ্ধিমান। থাকবে ঠুমরি, দাদরা, গজল ও ভজন।

গানে ক্রিকেট
‘ঘুরছে ব্যাটে বল বল বল’, ‘উই অল মিস ইউ সচিন’... সচিন তেন্ডুলকরের শেষ খেলার উপলক্ষে তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়ে গিয়েছে একে একে এগারোটা গান। সাতটি বাংলা গান লিখেছেন উৎপল দাস, চারটি হিন্দি রাকেশ ত্রিপাঠী। সবকটিরই সুর পিলু ভট্টাচার্যের। গানগুলি নিয়ে তৈরি হয়েছে অ্যালবাম ‘উই মিস ইউ সচিন’। রবিবার সিএবি-তে আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হল তারই। সচিনের শেষ টেস্ট ম্যাচেও গানগুলি গাইবেন অ্যালবামের শিল্পীরা, জানালেন পিলু। ফুটবল বাংলা গানে এলেও ক্রিকেট বেশি আসেনি। সে দিক থেকে এটি অভিনব বই কী।

বিশ্বভরা গান
“আমার মনে হয়, দিনের জগৎটা য়ুরোপীয় সংগীত, সুরে বেসুরে খণ্ডে অংশে মিলে একটা গতিশীল প্রকাণ্ড হার্মনির জটলা— আর রাত্রের জগৎটা আমাদের ভারতবর্ষীয় সংগীত,...। দুটোই আমাদের বিচলিত করে, অথচ দুটোই পরস্পরবিরোধী।” ১৮৯৪-এ ১০ অগস্ট ছিন্নপত্রের একটি চিঠিতে লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কিশোর বয়সেই তাঁর মনে জায়গা করে নিয়েছিল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। সেই ঐতিহ্য নিয়েই পাড়ি দেন বিলেতে। বিদেশ থেকে এনেছেন বিশ্বসঙ্গীতের মণিমুক্তো। তাঁর সৃষ্টিতে মিশে গিয়েছে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিশাল ভুবন। রবিঠাকুরের বিশ্বভরা গানকে ছুঁয়ে দেখতে ইনার সার্কেল ফিল্মস্-এর নিবেদন ‘বিশ্বভরা গান’। দেবজ্যোতি মিশ্রের শিল্পভাবনা ও পরিচালনায় গেয়েছেন শ্রাবণী সেন, লোপামুদ্রা মিত্র প্রমুখ। ভাষ্যপাঠে ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি প্রকাশিত হল ক্রসওয়ার্ডে।

নতুন ছবি
পল কক্স ক্যানসার থেকে উঠে ফের ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন ছবি করায়, এ দেশেই শু্যটিং শুরু করবেন ডিসেম্বর থেকে। শীত জাঁকিয়ে বসার আগে এই হিম-হিম হেমন্তে সে উপলক্ষে তাঁর ‘হিউম্যান টাচ’ ছবিটি দেখাচ্ছে সিনে সেন্ট্রাল। ১১ নভেম্বর শুরু হচ্ছে তাদের আন্তর্জাতিক ফিল্মোৎসব ‘ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম অব নিউ সিনেমা’, আসন্ন কলকাতা চলচ্চিত্রোৎসবের অংশ হিসেবে। মেট্রো সিনেমায় প্রতি দিন তিনটি শো-এ মোট ছ’টি ছবি দেখানো হবে ১৮ অবধি। লাতিন আমেরিকার একগুচ্ছ ছবি-সহ ইউরোপ এশিয়া থেকে ২৫টি দেশের ৮০-রও বেশি ছবি এ-উৎসবে। উদ্বোধনী ছবি ইরানের খোসরো মাসৌমি’র ‘বিয়ার’। ও দিন সন্ধ্যায় ‘সত্যজিৎ রায় লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট’ পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে মাধবী মুখোপাধ্যায়ের হাতে। রয়েছে ইজরায়েলের চলচ্চিত্রকার আমোস গিতাই-এর রেট্রো। ফ্রান্স-নিবাসী এই পরিচালক প্যালেস্তাইনের ওপর আক্রমণ বা অধিগ্রহণের ব্যাপারে স্বদেশ সম্পর্কে সমালোচক, অতএব সরকারেরও চক্ষুশূল। তাঁর রেট্রো-য় এমনই একটি ছবি ‘এসথার’-এর স্থিরচিত্র সঙ্গে।

সাঁওতাল-উৎসব
আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতির শিকড় ছড়িয়ে আছে দেশের জনজাতিদের জীবন আর জীবিকার মধ্যে। জীবনযাপনের প্রাত্যহিক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে প্রয়োজনীয় যা-কিছু, তাদের তা অনায়াসলভ্য প্রকৃতির মধ্যে, সেই সহজ-সরলের সম্মেলনের মধ্যে সন্ধ্যায় আবার সহজেই ‘দুন্দুভি বেজে ওঠে ডিম ডিম রবে।’ অথচ সেই মানুষগুলো যেন অনেক দূর গ্রহের। নৃতাত্ত্বিক আর কিছু শখের উৎসুক ছাড়া তাদের খবর কে-বা রাখে। সম্প্রতি শান্তিনিকেতন লাগোয়া দারোন্দা গ্রামে সাঁওতাল জনজাতির কলাশিক্ষা ও সংস্কৃতি নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করেছিল ভারতীয় মানববিজ্ঞান সর্বেক্ষণ। এ বার ৭ নভেম্বর বিকেল ৫টায় বিভাস চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে, পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রের সল্টলেক প্রাঙ্গণে, মানববিজ্ঞান সর্বেক্ষণ-এর পূর্বাঞ্চল শাখার সহযোগিতায় শুরু হবে ‘সাঁওতাল উৎসব’। সাঁওতাল নাটক, নৃত্য, সংগীত ছাড়াও এক প্রদর্শনীতে দেখা যাবে হাতের কাজ। থাকছে সাঁওতালি খাবারের স্বাদগ্রহণের ব্যবস্থাও। ৯ নভেম্বর পর্যন্ত রোজ ৫-৮টা।

প্রয়াণ
পারিবারিক শ্রীরামকৃষ্ণ পরিমণ্ডলের মধ্যেই বড় হওয়ায় আদ্যন্ত ছিলেন ঠাকুরের ভাবাদর্শে প্রাণিত। তিনি শ্রীম অর্থাৎ মহেন্দ্রনাথ গুপ্তের পৌত্র অরুণ গুপ্ত ও শিবরানি দেবীর চতুর্থ পুত্র গৌতম গুপ্ত। ১৯৭৬-এ শ্যামপুকুর বাটি পরিদর্শন করে ওই বাড়ির জীর্ণ দশা দেখে ব্যথিত হন। শ’ওয়ালেশ কোম্পানির চাকরি থেকে অগ্রিম অবসর নিয়ে, ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন শ্যামপুকুর বাটি উদ্ধার ও সংস্কারের কাজ। কয়েক বছর আগেই নতুন সাজে সেজেছে ঠাকুরের স্মৃতিধন্য শ্যামপুকুর বাটি। বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষ এর দায়িত্ব নিয়েছেন। কিছু দিন ধরে এটি মিশনের একটি শাখা হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। স্বপ্ন সার্থক হওয়ায় আনন্দিত ছিলেন গৌতম গুপ্ত। তিনি নিজেও সব সময়েই শ্যামপুকুর বাটিকে জনপ্রিয় করার জন্য নানা কাজে সচেষ্ট ছিলেন। সম্প্রতি এই গৃহী সেবক মাত্র ৬৯ বছর বয়সে হঠাৎই চলে গেলেন।

গণ্ডি পেরিয়ে
অনেকেরই খাবার জুটত না। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে পারতেন না ওঁরা। বছর পনেরো আগে গুজরাতের আনন্দ জেলার সেই সব পরিবারের পাশে দাঁড়ান স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ ও সুপ্রজননবিদ নয়না পটেল। পরিবারের মহিলাদের গর্ভ ভাড়া দেওয়ায় উৎসাহ দেন নয়না। যার পোশাকি নাম সারোগেসি। সন্তানের জন্ম দিতে অপারগ বিদেশের নানা প্রান্তের দম্পতিরা আসতেন নয়নার ক্লিনিকে। তাঁদের সাহায্য করতেই নয়না দ্বারস্থ হন ওই সব গরিব পরিবারের। বিনিময়ে আর্থিক সাহায্য পায় পুরো পরিবার। ৫০০-র বেশি সারোগেট বেবি জন্মেছে নয়নার ক্লিনিকে। ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পর ক্লিনিকেই রেখে দেওয়া হয় মহিলাদের, সেখানেই পরিচর্যা। শেখানো হয় হাতের কাজ, যাতে পরে তাঁরা স্বাবলম্বী হতে পারেন। প্রথম দিকে একে দেহ ব্যবসা বলে মনে করেছিলেন অঞ্চলের লোকজন। সন্দেহ নিরসনে নয়না তাঁর ক্লিনিকে শুধুই মহিলা কর্মী নিয়োগ করেন। এখন মা মেয়েকে বা শাশুড়ি পুত্রবধূকে নিয়ে আসেন। কলকাতায় সুপ্রজননবিদ ডাক্তার গৌতম খাস্তগীর জানালেন, এখনও এখানে সারোগেসি করালে তা লুকিয়ে রাখা হয়। নয়নার মতে, এতে তো এক জন মহিলা অন্য এক মহিলাকে মা হতে সাহায্য করছেন মাত্র। সম্প্রতি একটি বেসরকারি আইভিএফ ক্লিনিকের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় কলকাতায় এসেছিলেন নয়না পটেল। বললেন, এখানকার গরিব মেয়েদের স্বাবলম্বী করতে সারোগেসিতে সরকারের উৎসাহ দেওয়া উচিত।

সলিল-সংগ্রহ
মৃত্যুর পরে কেটে গিয়েছে এক যুগ। তবু আজও বাঙালির সঙ্গীতচর্চায় বেঁচে আছেন সলিল চৌধুরী। মঞ্চে, সিডি-ক্যাসেটে যেমন নতুন করে রেকর্ড হচ্ছে তাঁর গান, তেমনই বেশ কিছু ওয়েবসাইটেও তাঁকে নিয়ে নিরন্তর চর্চা চলেছে। গণসঙ্গীত, আধুনিক বাংলা গান, বাংলা সিনেমার গান, অন্য ভাষার ছবিতে গান, সিনেমার আবহসঙ্গীত, টিভি সিরিয়ালের সঙ্গীত— কথা আর সুরে গানের জগতে সলিল ছড়িয়ে আছেন বহুমুখে। কিন্তু পাশাপাশি তাঁর কলমের অন্য ফসলগুলি হারিয়েই গিয়েছে প্রায়। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘একটি নিজস্ব ক্ষোভ আমার আছে। ‘নতুন সাহিত্য’ পত্রিকায় ‘ড্রেসিং টেবিল’ নামে দাঙ্গা-বিরোধী ও মানবতাবাদী সেই অসাধারণ গল্পটির লেখক সলিল চৌধুরীকে বাংলা কথা-সাহিত্য হারিয়েছে।... সলিল চৌধুরী সম্পূর্ণ কথা-সাহিত্যিক হয়ে উঠলে হয়তো সাম্প্রদায়িক ঐক্য, গণসংগ্রাম আর শান্তির গানের এই সম্ভার থেকে আমরা অনেকখানি বঞ্চিত হতাম। তবু আশা রাখবো, বাংলা সাহিত্যকেও তিনি একেবারে ভুলে যাবেন না।’ ‘সুরসৃষ্টি সম্পর্কে’, ‘আধুনিক ভারতীয় সংগীতে বিবর্তন’-এর মতো প্রবন্ধ, জীবন উজ্জীবন-এর মতো আত্মজীবনী লিখেছেন গানের এই কিংবদন্তি। এ বার তাঁর গান-সহ সমগ্র রচনা খণ্ডে খণ্ডে প্রকাশিত হচ্ছে দে’জ পাবলিশিং থেকে। শুধু গানের কথাই নয়, গানের প্রথম প্রকাশ, শিল্পী, রেকর্ড বা অ্যালবামের তথ্যও থাকছে। গান ও গান-বিষয়ক প্রবন্ধ নিয়ে প্রথম খণ্ডটি প্রকাশিত হবে ১৯ নভেম্বর, সলিল চৌধুরীর ৮৮তম জন্মদিনে কলামন্দিরে। এর সংকলক ও সম্পাদক সবিতা চৌধুরী, অন্তরা চৌধুরী ও রণবীর নিয়োগী। ভূমিকা লিখে দিয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে থাকবেন সলিল চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ প্রবীণ ও নবীন শিল্পীরা।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.