বসুবাড়ির দেবী বন্দনা
(শিবপুর, হাওড়া) |
১৮৪০ সালে হাওড়ার আমতার কাছে সিংটি শিবপুর গ্রামে শুরু হয় বসুবাড়ির পুজো যা বর্তমানে রামকৃষ্ণপুরের বসুবাড়ির পুজো বলে পরিচিত। পারিবারিক এই পুজো শুরু করেন ঈশানচন্দ্র বসু। বর্তমানে তাঁর পঞ্চম প্রজন্ম গৌতম সাধন বসু সেই পরম্পরা বজায় রেখেছেন।
|
|
• মূর্তির বৈশিষ্ট্য— মহালয়ার দিন মায়ের মূর্তিতে চক্ষু দান করা হয়। বসু বাড়ির মায়ের মূর্তি সাবেক একচালা ডাকের সাজের। এখনও বাজার থেকে কেনা চালচিত্র ব্যবহার করা হয় না। তার বদলে শিল্পীর আঁকা চালচিত্র শোভা পায় মায়ের ঠাকুরদালানে। সিংহের রং এখানে রূপোলী। এবং মায়ের সব অস্ত্রই রূপোর।
• পুজোর বৈশিষ্ট্য— এ বাড়ির পুজো হয় শাক্ত মতে। নন্দোত্সবের দিন কাঠামোয় প্রথম মাটি লাগে, আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনা হয় বসুবাড়ির মায়ের মূর্তি গড়ার কাজ। বহু বছর আগে এ বাড়ির পুজোতেও পশু বলির প্রথা চালু ছিল। তবে ১৯৪২ –এ গাঁধীজির ডাকা অহিংস আন্দোলনে সামিল হওয়ায় সে বছর থেকেই এই প্রথা বন্ধ হয় যায়। বসুবাড়ির পুজোতে কুমারী পুজোর প্রথা চালু আছে। নবমীর দিন এই কুমারী পুজোর কুমারী নির্বাচন করেন পুজোর দায়িত্বে থাকা পুরোহিত। |
|
• ভোগের তালিকা— ফল প্রসাদ, নারকেল নাড়ু, নানাবিধ মিষ্টি সহযোগে দেবীর ভোগের আয়োজন করা হয়।
দশমীতে মায়ের মূর্তি বিসর্জনের পর কাঠামো তুলে আনা হয় বসুবাড়ির ঠাকুরদালানে। এ পুজোর টানেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পরিবারের সদস্যরা হাজার ব্যাস্ততা সত্ত্বেও আজও এক সূত্রে বাঁধা রয়েছেন। একজোটে পুজোর দিনগুলি তাঁরা কাটান হৈহুল্লোর আর স্মৃতিচারনায়।
• দিকনির্দেশ— হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে খানিক এগোলেই হেরিটেজ অ্যাকাডেমি স্কুল। স্কুলের ঠিক উল্টো দিকেই দেখা মিলবে রামকৃষ্ণপুরের বিখ্যাত বসুবাড়ির।
|
প্রতিবেদন: সুদীপ দে
ছবি: ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায় |