সিকি শতাব্দী পর ফিরছে ‘গোপাল-রাখাল’
প্রথম অভিনয়
আমাকে প্রায় জোর করেই অভিনয়ে নিয়ে আসে ঋতু।’ আকস্মিক প্রয়াত ঋতুপর্ণ ঘোষের ব্যোমকেশ বক্সীকে নিয়ে শেষ ছবি ‘সত্যান্বেষী’তে কালীগতি-র চরিত্রে নিজের অভিনয়ের কথা বলছিলেন শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়। চলচ্চিত্রে এই প্রথম অভিনয় শিবাজীর। যাদবপুরে তুলনামূলক সাহিত্য পড়িয়েছেন, এখন সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস-এ। ঋতুপর্ণ গত বছর অগস্ট থেকে নানা বিষয়ে পাঠ নিতে যেতেন তাঁর কাছে, তখন থেকেই বন্ধুত্বের শুরু। ‘মাঝেমাঝেই বলত আমাকে দিয়ে অভিনয় করাবে, আমি কান দিতাম না। একদিন ফিল্ম ইউনিটের দলবল নিয়ে এসে জবরদস্তি রাজি করাল, জোরটা অবশ্য ভালবাসারই।’ শিবাজীর কথায় স্পষ্ট হল যে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চোরাবালি’র মূল কাহিনিটুকু বজায় রেখে ঋতুপর্ণ নিজস্ব ভাবনায় বুনেছিলেন ছবিটিকে, তাই গল্প থেকে সরে এসে ছবিতে এক নিরাশ্রয় দরিদ্র ব্রাহ্মণ কালীগতি, যার ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে (সঙ্গে বাঁ দিকে সেই মেক-আপে শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি)। ‘চোরাবালিটা এখানে কালীগতির মনের ভূগোল, অবচেতন, মেটাফর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অভিনয়ের সময় কখনও কোনও অস্বস্তি হয়নি, এত সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল পরিবেশ।’ সেই আউটডোর শুটিংয়ের (সঙ্গে নীচে তারই ছবি) স্মৃতিচারণ থেকে শিবাজী চলে আসেন তাঁর আসন্ন বই প্রকাশে। ১ অক্টোবর সন্ধে ৬টায় ভারতীয় সংগ্রহশালার আশুতোষ জন্মশতবার্ষিকী হলে প্রকাশ পাবে তাঁর গোপাল-রাখাল দ্বন্দ্বসমাস/ উপনিবেশবাদ ও বাংলা শিশুসাহিত্য-এর (কারিগর) ‘পুনর্বিবেচিত ও পরিবর্ধিত’ সংস্করণ।
পঁচিশ বছর পর ‘ফিরে-পড়া এবং তাকে নব-কলেবরে সাজানো’-র মধ্যেও, ‘উনিশ শতকের আটের দশকে যে তাত্ত্বিক-সামাজিক-রাজনৈতিক-মতাদর্শের আলোহাওয়ায় গোপাল-রাখাল দ্বন্দ্বসমাস বিকচিত হয়েছিল, তার স্মৃতিছাপ যতটা পেরেছি বজায় রাখবার চেষ্টা করেছি।’ জানিয়েছেন শিবাজী তাঁর ভূমিকা’য়। শঙ্খ ঘোষ ‘স্নেহভাজন শিবাজীকে নিয়ে আর তাঁর পথিকৃৎ এই বইখানিকে নিয়ে... বিস্ময়মুগ্ধতার প্রকাশ হিসেবেই’ এই সংস্করণের ‘মুখবন্ধ’ লিখেছেন, সেটি থাকছে তাঁর হস্তাক্ষরেই। তিনি-সহ মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় স্বপন চক্রবর্তী সুমন মুখোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন অনুষ্ঠানে। পাওয়া যাবে একটি বিশেষ স্বাক্ষরিত সংস্করণও। পাশাপাশি শিবাজী একটি গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের সম্পাদনাও করেছেন অরিন্দম চক্রবর্তীর সঙ্গে যুগ্ম ভাবে: মহাভারত নাউ: ন্যারেশন, এসথেটিকস, এথিকস। অক্টোবর-নভেম্বরেই সেটি প্রকাশ করছে রাটলেজ ইন্ডিয়া। বর্তমানের প্রেক্ষিতে নতুন করে মহাভারতের মূল্যায়ন এই বইয়ে।

সঙ্গের আলোকচিত্র ও প্রচ্ছদ: সোমনাথ ঘোষ।

মনের কথা
কলকাতা তথা বাংলা ভাষা যা পারল না, গোয়ার বাসিন্দা সুধীর কক্কর তা করে দেখালেন। এই মনোবিশেষজ্ঞের হাত থেকেই বেরোল রবিকবির মনস্তাত্ত্বিক জীবন: ইয়ং টেগোর: দ্য মেকিংস অব আ জিনিয়াস (পেঙ্গুইন ভাইকিং)। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় থেকে প্রশান্তকুমার পাল অনেকেই রবীন্দ্রজীবন লিখেছেন, শঙ্খ ঘোষ বারংবার রবীন্দ্রসাহিত্যে আপনি-তুমির চলাচল বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কী ভাবে গড়ে উঠল রবীন্দ্রনাথের মন? নতুন বউঠান কাদম্বরী দেবীর মৃত্যু কী ভাবে ছায়া ফেলেছিল তাঁর সৃষ্টিকর্মে? জীবনস্মৃতিতেই বা অনেক কথার স্পষ্ট প্রকাশ ঘটল না কেন? হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং অধ্যাপক সেই সব বিশ্লেষণ হাজির করেছেন তাঁর নতুন বইয়ে। সম্প্রতি টলি ক্লাবে, লেখককে সঙ্গে নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক কৃষ্ণা সেন আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করলেন সেই বই। এ শহরে ২৫ বৈশাখ রাস্তা আটকে প্যান্ডেল করে রবীন্দ্র-উৎসব হয়, ট্রাফিক সিগনালে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজে, পত্রপত্রিকার বিশেষ সংখ্যায় কয়েক কেজি রবীন্দ্রচিন্তা উৎপন্ন হয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ফাঁকটি পূরণ করে কাজের কাজটি করে দিলেন সুধীরই!


লোককবি
ছোটবেলায় পথে চলতে চলতে পল্লিগীতি গাইতেন। কৈশোরে নড়াইলের জমিদারের যাত্রাদলে গান গেয়ে নজর কাড়েন। তিনিই ‘ওরে আমার সোনার ময়না পাখি রে/তুই কোন ফাঁকে পালিয়ে গেলি আমায় দিয়ে ফাঁকি রে’ এমন অজস্র লোকসঙ্গীতের অমর স্রষ্টা। বিজয়কৃষ্ণ অধিকারী (১৩০৯-’৯২ বঙ্গাব্দ) সুপরিচিত বিজয় সরকার নামেই। যশোহরে জন্ম, কবিয়াল মনোহর সরকার ও রাজেন্দ্রনাথ সরকারের শিষ্য ছিলেন। পরে নিজেই কবিগানের দল গড়েন। ১৯৩৭-এ সুনীতিকুমার, সুকুমার সেন, জসিমুদ্দিন, নজরুল-এর উপস্থিতিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর কবিগানের আসর বসে। বাংলাদেশ সরকার তাঁকে মরণোত্তর একুশে পদক দিয়েছে। ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেল পাঁচটায় লোককবি বিজয় সরকার স্মারক সমিতি ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের যৌথ উদ্যোগে পরিষৎ ভবনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বক্তা ঢাকা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।

বেওয়ারিশ
নন্দীগ্রামে, ২০১০-এ, দু’টি মেয়ে আত্মহত্যা করে এক সঙ্গে। সুইসাইড নোটে জানা যায়, তারা ভালবাসত পরস্পরকে। ‘সাফো ফর ইকুয়ালিটি’র সদস্যরা খবর পেয়ে পৌঁছন নন্দীগ্রামে। কথা বলেন প্রতিবেশী, মা-বাবার সঙ্গে। ঘটনার অভিঘাতে সকলেই বিমূঢ়, শোকসন্তপ্ত। কিন্তু পরে শোনা যায়, যে সময় সাফো টিম কথা বলছিল ওঁদের সঙ্গে, সে সময়ই মেয়ে দুটির দেহ পড়ে ছিল মর্গে, কারণ বাড়ির কেউই ওদের ফিরিয়ে নিতে চাননি। শেষে পুলিশই বেওয়ারিশ হিসেবে তা দাহ করে। ‘এবং বেওয়ারিশ’ তথ্যচিত্রটি এই নিয়েই, আর এটা পেরিয়েও, কারণ পরিচালক দেবলীনা খুঁজে দেখতে চান সমকামী মানুষদের প্রতি ঘটে চলা অবিরত হিংসাকে, যার জেরে, বাঁচার পথ না পেয়ে, মানুষ আত্মহননের পথ বেছে নিলেও তার শেষ হয় না, মৃত্যুর পরেও তার দেহকে গ্রহণ না করায় জারি থাকে অবমাননার কাঁটা। এই তথ্যচিত্রে, সুইসাইড নোটটি পড়েন চার জন অ-বিষমকামী মানুষ, কেউ সমকামী, কেউ রূপান্তরকামী। খুলে যায় তাঁদের লাঞ্ছনার আখ্যান। ছবিটির আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হল কানাডায়। এ বার ম্যাক্সমুলার ভবনে ছবিটি দেখা যাবে ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায়।

ডোভার লেন
সেপ্টেম্বর মাসটা নিছক পুজোর অপেক্ষায় কাটিয়ে দিতে ওঁরা চান না। ‘ওঁরা’ বলতে দি ডোভার লেন মিউজিক কনফারেন্স-এর আয়োজকরা। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে দু’দিনের নৃত্য উৎসব নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁদের। এ বারেও জি ডি বিড়লা সভাগারে ২৬-২৭ তারিখ সেই অনুষ্ঠান, রোজ সন্ধ্যা ৬টায়। শিল্পীরা: কলামণ্ডলম মুরলী ও বেঙ্কিট (কথাকলি), অমিতা দত্ত ও সম্প্রদায় (কত্থক), বিম্বাবতী দেবী ও সম্প্রদায় (মণিপুরি), নন্দিনী ঘোষাল ও অলকপর্ণা গুহ (ওড়িশি ও কত্থক), ম্যাঙ্গালোরের রাধিকা শেট্টি (ভরতনাট্যম) এবং গত বারের মেধা সন্ধান প্রতিযোগিতার প্রথম স্থানাধিকারীরা। উদ্বোধনে অমিতা দত্ত। এ দিকে দেখতে দেখতে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর চব্বিশ বছর অতিক্রান্ত হল। ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুদিনে নেহরু চিলড্রেন্স মিউজিয়ম-এ ‘আজও হেমন্ত’ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে শতাব্দী ব্যালে ট্রুপ। আলোচনায় অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবীর মজুমদার। গানে হৈমন্তী শুক্লা, সৈকত মিত্র। নাচে রাজকন্যা বসু।

গঙ্গানন্দিনী
মেয়েদের মেধা বিকাশের কেন্দ্র ‘নন্দিনী’র জন্ম বাংলাদেশে। বাংলা ভাষায় নিরন্তর সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা ও নানা সেবামূলক কাজের জন্যেই জন্ম এ-সংস্থার। ধীরে ধীরে ভারতেরও বিভিন্ন রাজ্যে সংস্থার শাখা তৈরি হয়েছে, স্থান-সংশ্লিষ্ট নদীগুলির (নারী চরিত্রের সঙ্গে নদীর বহতা শক্তিকে মিলিয়ে) নাম জুড়ে গিয়েছে সংস্থাটির নামের সঙ্গে কোথাও কোয়েনা-নন্দিনী, কোথাও তিস্তা-নন্দিনী, কলকাতায় গঙ্গানন্দিনী। এই গঙ্গানন্দিনীর সম্পাদক ঋতা বসুর পরিচালনায় প্রবাসী-অনাবাসী নন্দিনীদের মিলনসভা ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টে থেকে গ্যালারি গোল্ড-এ। সভামুখ্য কবি কৃষ্ণা বসু এবং প্রধান অতিথি কুষ্টিয়ার কবি-সমাজসেবী ও ‘বাংলাদেশ বার্তা’ দৈনিকপত্রের সম্পাদক-প্রকাশক আবদুর রশীদ চৌধুরী।

থার্ড থিয়েটার
গ্রামীণ যাত্রাপালা বা শহুরে প্রসেনিয়াম থিয়েটার, দুটি থেকেই সরে এসে থার্ড থিয়েটার তৈরি করেন বাদল সরকার। রচনা-প্রযোজনা তো বটেই, বড় বাড়ির সামনের চত্বর থেকে খেলার মাঠ অবধি সব কিছুকেই মঞ্চ মেনে, দর্শক-অভিনেতাদের একই তলে এনে নাটক করতেন তিনি। এই নিয়েই ‘থার্ড থিয়েটার’ নামে কয়েক বছর আগে ছবি করেন অমশান কুমার। বাদলবাবুর দীর্ঘ কথোপকথন এবং শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ধরণী ঘোষের সাক্ষাৎকার-সহ এ-ছবি দেশবিদেশের নানা ফেস্টিভ্যালে দেখানো হয়েছে। এই প্রথম দেখা যাবে কলকাতায়, ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায় নন্দন-এ। এর উদ্যোক্তা ফোরাম ফর ফিল্ম স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যালায়েড আর্টস আবার পাঁচ মহাদেশের ছবি নিয়ে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রোৎসবও শুরু করছে জ্ঞান মঞ্চে (২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর)। উদ্বোধন করবেন শতরূপা সান্যাল, প্রধান অতিথি গৌরব পাণ্ডে। এ দিকে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ-এর উদ্যোগে ফরাসি চলচ্চিত্রোৎসব ২৩-২৫ সেপ্টেম্বর নন্দন-এ। সহায়তায় আলিয়ঁস ফ্রঁস্যাজ।

অজিতেশ-স্মরণ
তিরিশ বছর আগে এক শরতে পুজোর মধ্যেই বিদায় নিয়েছিলেন, এত কাল পরে এখনও স্মৃতিতে অবিরত ঘাই মারেন তিনি। অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৯৩৩-’৮৩) সৃষ্টিকে নতুন প্রজন্মের দর্শকের সঙ্গে পরিচয় করাতে তাঁর আশি বছর পূর্তির জন্মদিনটি (৩০ সেপ্টেম্বর) পালন করবে গল্ফগ্রিন সাঁঝবেলা, ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৬টায় জীবনানন্দ সভাঘরে। ঠিক এক বছর আগে এই দিনেই নাট্যগোষ্ঠীটির জন্ম। স্মৃতিচারণে বিভাস চক্রবর্তী, অজিতেশ-রচিত নাটক পাঠ ও নাট্যগানে সাঁঝবেলা। পরিকল্পনা ও পরিচালনায় সন্ধ্যা দে। অন্য দিকে আকাশবাণী’তেও এ বার অজিতেশ-অভিনীত নানা নাটক নিয়ে কানে শোনার নাট্যোৎসব: ‘অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় নাট্য-সপ্তাহ’, ২৪-৩০ সেপ্টেম্বর প্রতি দিন দুপুর ২টোয় এফএম রেনবো-য়।

নকশি কাঁথা
প্রায় এক যুগ আগে প্রথম প্রকাশিত হয় বাংলার লোক-ঐতিহ্যের এক অসামান্য সম্ভার: বাংলার নকশি কাঁথা (শীলা বসাক, আনন্দ)। ছিল আসল নকশি কাঁথায় মোড়া বিশেষ সংস্করণও। এ বার সদ্য-প্রকাশিত দ্বিতীয় মুদ্রণেও রয়েছে সীমিত শোভন সংস্করণ, শান্তিনিকেতন সূর্যাবর্তের বিশিষ্ট সূচিশিল্পী মমতা মহাপাত্রের নকশি কাঁথা তার অঙ্গে। সুভো ঠাকুর একদা তাঁর শিল্পকর্মের সচিত্র সংকলনগ্রন্থ বাঁধিয়েছিলেন শীতলপাটি দিয়ে, আজ তা সুদুর্লভ। বাংলার নকশি কাঁথা তার চিত্রসংগ্রহ আর বিবরণের জন্য যেমন আদরণীয়, বহুবর্ণিল কাঁথায় বাঁধানো এই শোভন সংস্করণও তেমনই সংগ্রাহকের সম্পদ।

বিবেকানন্দ-উৎসব
মধ্য হাওড়ার কাসুন্দিয়ার কিছু যুবক স্বামী শিবানন্দের অনুপ্রেরণায় ১৯১৬-য় রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ আশ্রমের সূচনা করেন। আশ্রমের সব সামাজিক সাংস্কৃতিক এবং সেবামূলক কাজ রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের ভাবাদর্শে পরিচালিত। অনাথ ভাণ্ডার ও দাতব্য চিকিৎসালয় থেকে দুঃস্থরা নিয়মিত সাহায্য পান। স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশতজন্মবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে এই আশ্রম ২১-২৯ সেপ্টেম্বর নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। স্বামীজি বিষয়ক কবিতা পাঠ, স্বামীজির প্রিয় সঙ্গীত, বিবিধ আলোচনায় থাকবেন বিশিষ্টজন। আছে বিশেষ প্রদর্শনীও।

ফড়িং
ফড়িং থাকে উত্তরবঙ্গে। সবে ক্লাস সেভেন। কিন্তু তার ছোট্ট মন জুড়ে নানা টানাপড়েন। প্রাণের বন্ধু লাল্টু থাকলেও ভীষণ একা সে। একদিন ওদের স্কুলে আসেন দোয়েল ম্যাডাম। তিনিই ফড়িং-এর একাকীত্বের হদিশ পান। শুরু হয় ফড়িং-এর অন্য জীবন। হঠাৎ একদিন দোয়েল হারিয়ে যান তার জীবন থেকে। আবার একা পথ চলা। তবে এই ফড়িং সম্পূর্ণ করতে পারে বৃত্ত। সিনেমার ফড়িং আদতে সোদপুরের আকাশ অধিকারী (সঙ্গের ছবিতে বাঁ দিকে)। দিদার ইচ্ছেতেই নাটক শেখা, হঠাৎ-ই ফড়িং-এর জন্য ডাক। ‘ভাবতেই পারিনি। অবাক হয়ে গিয়েছিলাম, ভালও লেগেছিল’। অকপট আকাশ। ‘লাট্টু’ সৌরভ বসাককে (ডান দিকে) খেলার মাঠ থেকে আনা হয় অডিশনে। ‘কী ব্যাপার, আমাকে আনা হয়েছে কেন?’ কোমরে হাত দিয়ে সৌরভের মারকুটে ভঙ্গিই বলে দিয়েছিল, সে-ই ‘লাট্টু’। দুই নবাগতকে সামলাতে ইউনিট হিমশিম। কখনও সামনের দাঁত ভেঙে হাজির আকাশ! আবার গরমের জন্য শ্যুটিং-এর দিন সকালেই চুল কেটে উপস্থিত সৌরভ! একটা শটে তিনটে বোলতার কামড়! ‘উত্তরবঙ্গে নদীর কনকনে ঠান্ডা জল দেখে প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম।’ বলছিল আকাশ। এ সব পেরিয়ে শহর জুড়ে এখন ‘ফড়িং’-‘লাট্টু’র পোস্টার। ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরীর নতুন ছবি ‘ফড়িং’ আসছে ২৭ সেপ্টেম্বর।

প্রগতির পথিক
মনে পড়ে ধলা কুকুর শামলা কান ‘বিম্’কে? কিংবা সার্কাসের ‘পোতিয়া’কে? সত্তর-আশির দশকে বাঙালি শিশু-কিশোরের পড়ার জগতে অনেকটা জুড়েই ছিল রাশিয়ার প্রগতি ও রাদুগা প্রকাশনের বাংলা বই: টেলিস্কোপ কি বলে, মানুষ কি ক’রে বড় হ’লো, দুই ইয়ারের যত কাণ্ড কিংবা গোগোল, তুর্গেনিভের নানা লেখা। যিনি অক্লান্ত পরিশ্রমে রুশ ভাষা থেকে এ সব বই অনুবাদ করেছিলেন, তিনি অরুণ সোম। ১৯৩৮-এ ঢাকা পাইকপাড়ায় জন্ম। ’৪৮-এ এ বাংলায়। ’৬৫-তে রুশ ভাষার প্রশিক্ষণ নিতে রাশিয়া যান। ’৭৪-এ ননী ভৌমিকের অনুরোধে অনুবাদক হিসেবে রাশিয়ায় প্রগতি প্রকাশনে যোগ দেন। প্রায় ৫০টি বই অনুবাদ করেছেন। সঙ্গে ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন’ ও ‘সোভিয়েত নারী’ পত্রিকার বাংলা বিভাগের সম্পাদনা। জানালেন, ফি-বছর দেশে আসতেন। তাঁর অনূদিত চরিত্রদের নিয়ে ছোটদের উন্মাদনা তাঁকে উৎসাহিত করত। ’৯১-এ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সম্পূর্ণ কর্মহীন হয়ে পড়েন। দোভাষীর কাজ, টিউশন এমনকী বেয়ারার কাজও করেছেন। ’৯৫-এ দেশে ফিরেও কোনও চাকরি পাননি। পরে সাহিত্য অকাদেমির অনুরোধে আবার নতুন করে অনুবাদ শুরু, প্রকাশিত হয়েছে দস্তয়েভস্কির অপরাধ ও শাস্তি এবং তলস্তয়ের যুদ্ধ ও শান্তি। দস্তয়েভস্কির কারামাজভ ভাইয়েরা এবং ইডিয়ট প্রকাশের পথে। অনুবাদ চলছে গোগোলের মৃত আত্মা-র। ২০০৬-এ লীলা রায় স্মারক পুরস্কার পান। এখন গড়িয়া পদ্মশ্রীর ‘সোমস্ নুক’ বাড়িতে সস্ত্রীক থাকেন অরুণ সোম। ২০ সেপ্টেম্বর তাঁর পঁচাত্তর বছর পূর্ণ হল। ‘অহর্নিশ’ পত্রিকা তাঁদের আগামী সংখ্যায় ওঁকে শ্রদ্ধা জানানোর পরিকল্পনা করেছে।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.