|
|
|
|
বিনোদন |
দেশি-জাপানি সংস্কৃতির আদানপ্রদান
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
|
|
এ রাজ্যে দোল উৎসব, দুর্গা পুজো, রাখি বন্ধনের উৎসব, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা পদ্ধতির মতো বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হলেন ইয়ুমি তামোরি, সাতোসি মাওয়াতারির মতো হিরোসিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়া। রবিবার শিলিগুড়ির প্রধাননগরের একটি হোটেলের কনফারেন্স হলে জাপান এবং এ দেশের একদল ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ওই অনুষ্ঠান হল। দুই দেশের ওই ছাত্রছাত্রীরা একে অপরের সংস্কৃতি, কৃষ্টির সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে পরিচিত হলেন। জাপানের হিরোসিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়ারা তাতে অংশ নিতে এসেছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার কাজে যুক্ত তাইকাই তাকাহাসি এ দেশের কচিকাঁচাদের বিজ্ঞান প্রশিক্ষণ পদ্ধতি নিতে কাজ করছেন। কেয়ার অব নিডি চিলড্রেন রাইটফুলি নার্চারড (কনসর্ন)-এর সহযোগিতায় দুই দেশের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ‘টি স্মাইলিং প্রজেক্ট’ নামে ওই কর্মসূচির আয়োজন করেছেন তাঁরা। তাইকাই তাকাহাসি বলেন, “এই নিয়ে তৃতীয়বার এ ধরনের কর্মসূচি করছি আমরা। এতে ছাত্রছাত্রীরা একে অপরের দেশের সংস্কৃতি, শিক্ষা পদ্ধতি বুঝতে পারবে। দুই দেশের মেলবন্ধন গড়ে উঠবে। যা ভবিষ্যতে অনেক সামাজিক সমস্যা মেটাতে সহায়ক হবে বলে আমরা আশাবাদী।” ‘টি স্মাইলিং প্রজেক্ট’-এ এই দেশে শিশু শিক্ষার উপর বিভিন্ন কর্মসূচি নেন তারা। ইতিমধ্যেই দু’ বার দার্জিলিঙে এ-ওয়ান এডুকেশনাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সহযোগিতায় বাচ্চাদের নিয়ে কর্মসূচি হয়েছে। |
|
জাপানের হিরোসিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল পড়ুয়ার
সঙ্গে
স্থানীয় স্কুল পড়ুয়ারা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
এ দেশের শিক্ষা সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি তাঁদের পড়াশোনা, সংস্কৃতি, উৎসব অনুষ্ঠানের পরিচয়ও তুলে ধরেন ইয়ুমি, সাতোসিরা। ভিডিও ফুটেজে দেখানো হয় দুই দেশের বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠান, বিভিন্ন ঋতুর ছবি। জাপানের পড়ুয়ারা জানান, তাঁদের দেশে মূলত চারটি ঋতু। গ্রীষ্ম, শরৎ, শীত, বসন্ত। জুন মাসে সামান্য বর্ষা হয়। বাক্য লিখতে তাঁরা তিন ধরনের অক্ষর ব্যবহার করে। ‘কাঞ্জি’, ‘কাতাকানা’ এবং ‘হিরাগানা’। ‘ডাংগিরি’, ‘নেপটুটা’, ‘জিয়ং’ তাদের বিভিন্ন উৎসবের নাম। গরমের মরসুমে তাদের বাজি পোড়ানোর উৎসব ‘হানাবি’। এ সব জেনে খুশি শুভায়ণ সেনগুপ্ত, হরিবালা ছেত্রী, তানিয়া চৌধুরীর মতো শিলিগুড়ির বিভিন্ন স্কুল, কলেজের পড়ুয়ারা। আনন্দিতা চক্রবর্তী, মঞ্জু স্বর্ণকাররা ইয়ুতা সুজকি, সাতোসিদের হাতে রাখি পড়িয়ে দেয়। কপালে আবির দিয়ে বুঝিয়ে দেয় কোনটা রাখি বন্ধন, আর কোনটা দোলের উৎসব। এ ভাবেই দুই দেশের ছাত্রছাত্রীরা একে অপরের শিক্ষা, সংস্কৃতি, রীতি জেনে ভাব বিনিময় করল। সেই মতো এ দিন শিলিগুড়ি বয়েজ হাই স্কুল, মর্গারেট স্কুল, টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ অব পাবলিক স্কুল, শিলিগুড়ি কলেজ, দার্জিলিং গভর্নমেন্ট কলেজ, সেন্ট যোসেফ স্কুলের অন্তত ৩০ জন ছাত্রছাত্রী ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। শিলিগুড়ি বয়েজ হাই স্কুলের ছাত্র শুভায়ন বলে, “ওদের রীতি, পড়াশোনার পদ্ধতি জানলাম। ওরা হাইস্কুলে পড়াশোনা শেষ করার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তাদের ক্লাস নেওয়া এ সবের সঙ্গে আমাদের শিক্ষা পদ্ধতিরও মিল রয়েছে।” শিলিগুড়ি কলেজের এক ছাত্রী হরিবালা জানান, ওদের আচার ব্যবহার তাঁর বেশ ভাল লেগেছে। ওদের উৎসব, অনুষ্ঠানগুলি একেবারেই অন্য রকম। মনোবিদ্যার ছাত্র ইয়ুতা সুজুকি জানালেন, পুরনো গাড়ি নিয়ে রেস হচ্ছে ডাংগিরি। নেপটুটা হল, মূর্তি নিয়ে মিছিল করা। দেবদেবীদের নিয়ে উৎসব হল জিয়ং। |
|
|
|
|
|