|
|
|
|
ভূমিক্ষয় রুখতে চটের চাদর লাগাবে রেল |
অনমিত্র সেনগুপ্ত • নয়াদিল্লি |
রুগ্ণ পাটশিল্পকে বাঁচাতে এগিয়ে এল রেল মন্ত্রক।
রেললাইনের দু’ধারের জমিতে ভূমিক্ষয় রোধ করতে চটের চাদর ‘জুট জিও-সিন্থেটিক’ ব্যবহারে সবুজ সঙ্কেত দিল রেল। জলাভূমি রয়েছে এমন এলাকায়, সমতল থেকে উঁচু লাইনের ক্ষেত্রে ভূমিক্ষয়ের ফলে নড়ে যায় দু’ধারের বোল্ডার। এখন তা রুখতে ব্যবহার করা হয় লোহার তারজালি। তার পরিবর্তে ওই পাটজাত চাদর পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করতে চাইছে মন্ত্রক। আগামিকাল ডানকুনি এলাকায় ওই কাজের উদ্বোধন করবেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। পাইলট প্রকল্প হিসাবে বালিঘাট থেকে ডানকুনি ও বালটিকুড়ি থেকে ডানকুনি পর্যন্ত লাইনে ওই নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। মন্ত্রক জানিয়েছে, পাটের চাদর সস্তা ও পরিবেশবান্ধব। আর রেল তা ব্যবহার করলে রুগ্ণ পাটশিল্পের হাল ফেরানো সম্ভব হবে। ভারত সরকারের জুট কর্পোরেশনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নতুন ওই প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল মন্ত্রক। পাট শিল্পকে বাঁচাতে পাট থেকে তৈরি ‘জুট জিওটেক্সটাইলস’ (জেজিটি) বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বস্ত্র মন্ত্রক। সড়ক নির্মাণ থেকে শুরু করে পাহাড় ও নদী উপকূলে ভূমিক্ষয় রোখার মতো কাজে জেজিটি ব্যবহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রকের কাছেই আবেদন জানায় তারা। বস্ত্র মন্ত্রকের বক্তব্য, বাংলাদেশ সফল ভাবে জেজিটি প্রযুক্তি প্রয়োগে সক্ষম হয়েছে। সুতরাং এ দেশেও তা করা সম্ভব। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে ওই প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাফল্য পেয়েছে।
রেল জানিয়েছে, ভূমিক্ষয় রেলের একটি বড় সমস্যা। মন্ত্রকের এক কর্তা জানিয়েছেন, ট্রেন চলার সময়ে রেললাইনের উপর প্রায় ২৫ টন ভার এসে পড়ে। ট্রেনের ওই ওজন সোজা গিয়ে পড়ে জমিতে। এক দিকে নিয়মিত ভাবে ওই চাপ এবং অন্য দিকে জলাভূমি এলাকায় থাকা লাইন সংলগ্ন জমিতে ক্রমাগত জল চুঁইয়ে এসে নিরন্তর ভূমিক্ষয় ঘটিয়ে থাকে। ফলে, অনেক সময়েই স্থানচ্যুত হয় লাইনের দু’ধারের বোল্ডার। বহু জায়গায় লাইন আচমকা বসে গিয়ে দুর্ঘটনার ঘটার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। রেল কর্তারা জানিয়েছেন, ‘জিও সিন্থেটিক’ ব্যবহার করলে জল চুঁইয়ে আসতে পরে। কিন্তু মাটি ধুয়ে যেতে পারবে না। ফলে ভূমিক্ষয় অনেক কম হবে। লাইন মেরামতির সংখ্যা আগের চেয়ে এক-চতুর্থাংশ কমে যাবে। তা ছাড়া বর্তমানে তারজালি ব্যবহার করে বোল্ডার ধরে রাখতে যে খরচ হয়, পাটের ব্যবহারে তা অর্ধেকে নেমে আসবে বলেই মনে করছে মন্ত্রক।
ডানকুনি প্রকল্প সাফল্য পেলে গোটা দেশেই জেজিটি প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রক। এর ফলে রুগ্ণ হয়ে পড়া পাটশিল্পও নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সকলেই।
আগামিকাল ডানকুনিতে ওই নতুন প্রযুক্তির উদ্বোধন করার পাশাপাশি ওই এলাকায় নির্মীয়মাণ দু’টি রেল কারখানাও ঘুরে দেখবেন অধীরবাবু। |
|
|
|
|
|