|
|
|
|
|
|
|
দুর্গা: নানা রূপে |
পুজো আসছে |
দুর্গাপুজোর আর বিশেষ দেরি নেই। আগে বলা হত, ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে। এখন থিমপুজোর বাজারে ঢাকিরা প্রান্তিক, ভূমিকম্প বন্যা ট্রেন দুর্ঘটনা টাইটানিক কেদারনাথ ইত্যাদি জম্পেশ থিম পৌঁছে গেলেই বোঝা যায় পুজো এসেছে। পুজোর গান, পুজোর সাহিত্যের সে রমরমা নেই, তবু পুজো নিয়ে ভাবনাচিন্তা তো আর ফুরিয়ে যায়নি। লীনা চাকী খুঁজে এনেছেন নানা পুরনো লেখা, পাশাপাশি নবীন-প্রবীণদের নতুন লেখাও। দুর্গার বিবর্তন, দুর্গাপুজোর দিনবদল, থিমপুজো, পুজোর স্মৃতি, চালচিত্র, বাংলার চিত্রকলায় দুর্গা, বনেদি বাড়ির পুজো, জলসা, শারদ-সাহিত্য, গান, প্রতিমাশিল্পী, গ্রামের পুজো, বিষ্ণুপুরের পটের দুর্গা-- কত কী দু’মলাটে (দুর্গা, সম্পা: লীনা চাকী, দে’জ)। আশি বছর আগে রমাপ্রসাদ চন্দ লিখেছিলেন, “লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক এবং গণেশের সহিত বাপের বাড়িতে আসিয়া মহিষাসুর বধ-- ব্যাপারটা অভিনয়ের মতো দেখায়।” এই অভিনয় উদ্যাপনই তো বাঙালির সব থেকে বড় উত্সব। অনেক দুর্লভ রঙিন ছবিতে সেজে, সেই উত্সবের নস্টালজিয়া নিয়ে দুর্গা প্রকাশিত হচ্ছে এই সপ্তাহেই। সঙ্গে তারই প্রচ্ছদ। |
|
বছর কয়েক আগে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষত্ থেকে দীপঙ্কর ঘোষের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় দুর্গা/ বাংলার ঐতিহ্যে। নানা শিল্পমাধ্যমে, বাংলার নানা প্রান্তের দুর্গার রঙিন ছবির সে ছিল এক অসামান্য অ্যালবাম। এ বারে শিল্পীদের চোখে দুর্গার রূপ নিয়ে আর একটি বই হাতে এল: গৌতম বাগচী সম্পাদিত আমার দুর্গা (আরজিবি পাবলিশার্স)। রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশ কর্মকার, রবীন মণ্ডল থেকে ভবতোষ সুতার, বহু শিল্পীর কল্পনায় দুর্গা-- চমত্কার রঙিন আর্টপ্লেটে (সঙ্গে বাঁ দিকে তা থেকেই সুব্রত চৌধুরীর ছবি ‘দুর্গা’)। চলছে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এ এই সব ছবির প্রদর্শনীও। অন্য দিকে, শুধু শিল্পরূপ নয়, নবকুমার ভট্টাচার্য পুজোর বাস্তবটাও ভোলেননি, পশ্চিমবঙ্গ বৈদিক অ্যাকাডেমি থেকে ঠিক সময় মতো প্রকাশ করেছেন দুটি অত্যন্ত জরুরি বই দুর্গাপুজোর নিয়মকানুন ও দুর্গাপুজোর জোগাড়। হাতের কাছে এমন বই থাকলে আর চিন্তা কী?
|
সবার সঙ্গে |
এ যেন বাস্তবের ‘তারে জমিন পর’! বন্ধুরা যখন ক্লাস করে, ক্লাস টু’র রোহন সিঁড়িতে বসে থাকে। আসলে ও ডিসলেক্সিয়ায় ভুগত। কিছু অক্ষর উল্টো দেখত, আবার বোর্ডের কিছু অংশ দেখতে পেত না। ‘নিকুম্ভ স্যার’-এর মতোই কয়েক জন শিক্ষক ওকে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনেন। এই অন্য রকম বাচ্চাদের জন্যই এক নামকরা স্কুল ছেড়ে ওঁরা ২০১১-য় গড়ে তোলেন ব্লুমিং ডেল অ্যাকাডেমি। যেখানে সবার সঙ্গে ক্লাস করে ৪০ জন ‘স্পেশাল চাইল্ড’। স্কুলের অধ্যক্ষা প্রদীপ্তা কানুনগো বললেন, ‘রোহনকে এমন ভাবে বসানো হয় যাতে বোর্ড দেখতে পায়। ডিসলেক্সিয়াও কারেকশন হওয়ায় ও অনেক ভাল কাজ করছে।’ সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত ক্লাস ওয়ানের শিবাংশুও বোর্ড দেখতে পায় না। ডান দিক অসাড়। ল্যাপটপেই পড়াশুনো। মা পৌঁছে দেন ক্লাসে। কিন্তু সবেতেই ও থাকে, অন্যদের মতোই। অটিজমে আক্রান্ত বছর আটেকের সাম্য অল্পেই মেজাজ দেখিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মারপিট করত। অথচ দারুণ মেধাবী। ওকেও বিশেষ পদ্ধতিতে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ওদের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা আছেন, সাহায্য করে সহপাঠীরাও। অনেক সময় মায়েদেরও নিয়ে আসা হয়। সম্প্রতি মারিয়া মন্তেসরির ১৪৩-তম জন্মদিনে স্কুলে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল সকলেই (সঙ্গের ছবি)।
|
রাধুদা |
মানুষটি বেঁচে থাকলে বলতেন, ‘আমাকে নিয়ে আবার লেখা কেন! আমি তো অজিতদার ছায়ামাত্র। যা বলেছেন, করেছি। যা শিখিয়েছেন, শিখেছি।’ অজিতদা মানে অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছায়াসঙ্গী রাধারমণ তপাদার। সবার প্রিয় ‘রাধুদা’। জন্ম ১৯৩৫-এ। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনো। পেশায় ডাকহরকরা। কিন্তু অন্তরে থিয়েটার। প্রথম অভিনয় অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায়। ষাটের দশকের প্রথমে গুরুর হাত ধরে এলেন নান্দীকারে। মূলত মঞ্চের কাজ করতেন। পরে অজিতেশের হাত ধরেই নান্দীমুখ। বহু সিনেমায় শিল্প নির্দেশক ছিলেন। পেয়েছেন বিএফজে পুরস্কার। অভিনয় করেছেন ‘নানা রঙের দিন’-এ একটি ছোট কিন্তু স্মরণীয় ভূমিকায়। রাধুদা-র স্মরণীয় কাজ নান্দীকারের ‘সওদাগরের নৌকো’ পরিচালনা। অজিতেশের মৃত্যুর বহু পরে ভাই সুনীতেশ গড়ে তোলেন ‘অজিতেশ নাট্য অকাদেমি’। উদ্দেশ্য অজিতেশের পুরনো নাটক অভিনয়। রাধারমণ তুলে এনেছিলেন ‘মঞ্জরী আমের মঞ্জরী’, ‘তিন পয়সার পালা’, এবং ‘লাল রঙের দিন’। সম্প্রতি চলে গেলেন এই শিল্পী।
|
তিন কন্যা |
আগেই প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর রবীন্দ্র-ছোটগল্প পাঠের অডিয়ো বুক। এ বার রবীন্দ্রনাথের তিনটি ছোটগল্প ‘সুয়োরানির সাধ’, ‘দালিয়া’ ও ‘শাস্তি’-র পাঠ নিয়ে আইসিসিআর-এ এক অনুষ্ঠান ‘তিন কন্যা’ করলেন ভারতী রায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ-উপাচার্য ভারতী তুলে ধরতে চেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথের নারী ভাবনা। শুধু পাঠই নয়, তাঁর পরিকল্পনায় গান, নাচ ও আবৃত্তিতে ‘তিন কন্যা’ হয়ে উঠেছিল গল্প থেকে আলেখ্য। অন্য দিকে ২২ সেপ্টেম্বর জি ডি বিড়লা সভাঘরে অনুষ্ঠিত হবে ‘গান’, আয়োজনে ‘শিল্পী মন’। কালীনারায়ণ গুপ্ত ব্রহ্মসঙ্গীতে এনেছিলেন ভাটিয়ালি সুর, আবার কেশবচন্দ্র সেন তাতে আনেন কীর্তনের ধারা। সেই সব স্বল্পশ্রুত ব্রহ্মসঙ্গীতই শোনাবেন দক্ষিণীর প্রাক্তনী স্রবন্তী ও অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে আছে অন্যান্য গান।
|
বাহনের বায়না |
আলসে সিংহ। নারদের কোলে চেপে কৈলাসে এসেছিল, দুধভাত খেয়ে, ঘুমিয়ে, দিন কাটাত আরামে। সে হয়ে গেল মা-দুর্গার বাহন। দুর্গার পরিবারে এ রকম আরও বাহনদের নিয়ে ছোটদের জন্যে মজার গল্প লিখেছেন দীপান্বিতা রায়। পুরাণ অনুসারে দেবতাদের বাহন হিসেবে পশুপাখি নির্বাচনের ব্যাপারটা বজায় রাখলেও জীবজগতে পশুপাখির গুরুত্ব কতখানি তা ছোটদের কাছে তুলে ধরার জন্যেই কলম ধরেছেন তিনি। তাঁর এই গল্পগুলি থেকে তৈরি হয়েছে একটি অডিয়ো-অ্যালবাম: ‘বাহনের বায়না’, যেখানে পাঠ বা অভিনয় করেছেন শাঁওলী মিত্র মহুয়া সরকার অর্পিতা ঘোষ ব্রাত্য বসু সব্যসাচী চক্রবর্তী দেবশঙ্কর হালদার। গল্প শুনিয়ে ছোটদের মনে কল্পজগতের স্বাদ এনে দেওয়ার জন্যেই এই অডিয়ো-বুক। প্রযোজক সারেগামা’র পক্ষ থেকে এটি প্রকাশ করা হবে ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে তিনটেয় নন্দন-এ, লেখক-শিল্পীদের উপস্থিতিতে।
|
স্মৃতির সরণি |
মণিপুর অসম ওড়িশা হয়ে শেষে পশ্চিমবঙ্গে এসে পৌঁছেছেন পরিচালক জোশি জোসেফ। সিনেমাকে সঙ্গী করে পথ হেঁটেছেন তিনি এ-দেশের উত্তর-পূর্ব থেকে পূর্বাঞ্চল পর্যন্ত। বিভিন্ন প্রদেশে ফিল্ম বা ইন্ডাস্ট্রির হালচাল কী, কিংবা কী ছিল একদা, তা নিয়েই তাঁর ছবি ‘রাইটস অব প্যাসেজ’। স্মৃতির সরণি বেয়ে কলকাতার দুই দিকপাল সত্যজিত্ আর ঋত্বিককে ছুঁয়েছেন জোশি। সঙ্গে রেলপথ-রেলগাড়ি কী ভাবে ভারতীয় সিনেমার ইমেজ হয়ে উঠেছে তা নিয়ে রীতা হেমরানজানি’র ছবি ‘ট্রেন উইদিন টোয়েন্টি ফোর ফ্রেমস’। এ ছাড়াও প্রথম ভারতীয় সবাক ছবি আলম আরা-কে (১৯৩২) নিয়ে চেতন মাথুর-এর তথ্যচিত্র। ভারতীয় সিনেমার একশো বছর উপলক্ষে নন্দন-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সেখানে ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৬টায় ছবিগুলি দেখাবে ফিল্মস ডিভিশন।
|
শচীন সেন |
আদতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বিজ্ঞানী সত্যেন বসুর স্নেহভাজন। ঘটনাচক্রে নকশাল-রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন শচীন্দ্রকুমার সেন। জন্ম বিহারে, থাকতেন কলকাতার তালতলায়। সত্তরের দশকে সমাজ বদলের কুশীলবদের অন্যতম আশ্রয়স্থল ছিল শচীনবাবুর বাড়ি। এক নকশাল নেতাকে আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে তিনি গ্রেফতার হন। পুলিশি হেফাজতে চলে নির্মম নির্যাতন। তাতেই মারা যান তিনি, ১৯৭২-এর ৪ অক্টোবর। এ বছর তাঁর জন্মশতবর্ষ। ২০ সেপ্টেম্বর বিকেল চারটেয় মহাবোধি সোসাইটি হলে প্রথম শচীন সেন স্মারক বক্তৃতা: ‘শাসকের অধিকার, শাসিতের অধিকার একটি বিরোধের সন্ধান’, বক্তা শুভেন্দু দাশগুপ্ত। প্রকাশিত হবে একটি স্মারক-পুস্তিকাও।
|
প্রাচীন কীর্তি |
|
‘স্থপতি মোদের স্থাপনা করেছে বরভূধরের ভিত্তি/ শ্যাম কম্বোজে ওঙ্কারধাম মোদেরি প্রাচীন কীর্তি’-- কবে লিখেছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত। সত্যিই, একদা শ্যামদেশ (তাইল্যান্ড) ও কম্বোজে (কম্বোডিয়া) ভারতীয় উপনিবেশ ছিল। কালের স্রোতে সে সব অবলুপ্ত হলেও রয়ে গিয়েছে কিছু স্মৃতি। যেমন কম্বোডিয়ার আঙ্কোরভাটের জঙ্গলে আছে বহু শিব ও বিষ্ণুমন্দির, ইন্দোনেশিয়ার বোরোবুদুরে রয়েছে অজস্র বুদ্ধমূর্তি সংবলিত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মঠ। তার দেওয়ালে খোদাই করা জাতকের গল্প। এ সবের ছবিই তুলে এনেছিলেন গৌতম বসু। পেশায় অর্থোপেডিক সার্জন। নেশা ছবি তোলা। বিড়লা অ্যাকাডেমিতে ২১-৩০ সেপ্টেম্বর দেখা যাবে তাঁর তোলা এমনই ৬০টি ছবির প্রদর্শনী (৩-৮টা)। সঙ্গে তারই একটি, আঙ্কোরভাট থেকে।
|
নাগমণ্ডল |
|
মেয়েদের মধ্যে কৃতী পরিচালক হিসেবে হালে যাঁরা বঙ্গরঙ্গমঞ্চের দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন, তাঁদেরই একজন অবন্তী চক্রবর্তী। ‘ইচ্ছের অলিগলি’, ‘চৈতালি রাতের স্বপ্ন’, বা ‘তিন কন্যা’র সাম্প্রতিক সাফল্যের পর তাঁর নতুন নির্দেশনা গিরিশ কারনাড রচিত ‘নাগমণ্ডল’ (প্রযোজনা: বিজয় মুখোপাধ্যায়)। গিরিশ কিছুকাল আগে কলকাতায় এসে এ-নাটকের মহড়া দেখে উচ্ছ্বসিত, বললেন ‘আমার প্রত্যাশা আরও বেড়ে গেল।’ নাটকটি আমন্ত্রণ পেয়েছে অক্টোবরে বেঙ্গালুরুর গিরিশ-রচিত নাটকের উত্সব ‘রঙ্গশঙ্কর’-এ, সারা দেশ থেকে আটজন পরিচালকের নির্দেশিত নাটক অভিনীত হবে সেখানে, অবন্তী প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গের। মুখ্য দু’টি চরিত্রে অভিনয় করছেন তূর্ণা দাস ও অনির্বাণ ভট্টাচার্য। কলকাতায় অভিনয় ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩টেয় অ্যাকাডেমিতে। সঙ্গের ছবিতে গিরিশের সঙ্গে তূর্ণা ও অনির্বাণ।
|
সীমানা ছাড়িয়ে |
ওপার বাংলা বইয়ের ক্ষেত্রে অন্তত এ পারে অপার নয়। আশার কথা, এনবিটি এ বার উদ্যোগী হয়েছে। এনবিটি-র বাংলাদেশের গল্প এবং রশিদ হায়দর ও সেলিনা হোসেনের দুটি গল্প সংকলনের প্রকাশ ২০ সেপ্টেম্বর, রাজ্য কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে, প্রধান গ্রন্থাগারিক অভিজিত্ ভৌমিকের হাতে। “দুই বাংলার আদানপ্রদানে ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট বিশেষ ভূমিকা নিতে চায়। এটা তারই প্রথম ধাপ।” কথা হচ্ছিল ট্রাস্টের সহকারী বাংলা সম্পাদক ব্রতীন দে-র সঙ্গে। বলছিলেন, “বাংলাদেশের সাহিত্যপ্রকাশ এ বারই প্রথম। ভারতীয় ভাষার বই প্রকাশ এবং অনুবাদই এনবিটি-র প্রাথমিক কাজ। তবে সম্প্রতি আফ্রিকার গল্পও প্রকাশিত হয়েছে। দিল্লিতে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি প্রকাশনাশিল্পে সেখানে তারুণ্যের একটা খোলা হাওয়া আছে । কিন্তু বাংলায় প্রকাশনা শিল্পে তরুণ প্রজন্ম বিশেষ আসছে না। বিষয়টা ভাবা উচিত।” প্রবীণের অচলায়তনের সঙ্গে বিরোধ ঘটে না? “যুক্তি দিয়ে আধুনিক চিন্তাভাবনাকে তাঁদের মধ্যেও চারিয়ে দিতে হয়”, বললেন ব্রতীন।
|
|
|
|
|
উত্তরণ |
এ যেন নতুন উত্তরণের গল্প। ছোটবেলায় বাড়ির সিঁড়ির খাড়া অংশে ছবি এঁকে লিখতাম বড় হয়ে কী হব! বলছিলেন শিল্পী শুক্তিশুভ্রা প্রধান। জীবনের পড়ন্ত বেলায়ও লিখে চলেছেন এক মৃত্যুঞ্জয়ী কাহিনি। শিল্পীর জন্ম হাওড়া শিবপুরে। সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ ব্রহ্ম, ইন্দু রক্ষিত বা অজিত গুপ্তকে। পিতৃসম চিন্তামণি কর’কে এক বার বলেছিলেন ‘আমি কোনও ঘরানা মানব না, নিজের মতো কাজ করব।’ ১৯৭১-এ পাশ করার পর প্রথমে স্কুলে চাকরি, তার পর নিজের কলেজে অধ্যাপনা টানা চৌত্রিশ বছর। দেশ-বিদেশে ক্রমেই ছড়িয়েছে শিল্পী শুক্তিশুভ্রার নাম। একটি পূর্ণাবয়ব কালীমূর্তি এঁকে দিয়েছিলেন মা’কে। মায়ের সে দিনের আনন্দ আজও মনে পড়ে। ১৯৭৪-এ বিয়ে করেন ভাস্কর নিরঞ্জন প্রধানকে। ২০০৯-এ ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেও বর্তমানে রোগমুক্ত। শিল্পীর সৃজনীশক্তিকে কেড়ে নিতে পারেনি ক্যান্সার। বরং তাঁর অন্তরের কথা ভাষা পেয়েছে এ সময়ের অজস্র ছবিতে। ‘মিস্টার ক্যান্সার এসে দাঁড়িয়েছেন সামনে...’, কলমও ধরলেন তিনি। তাঁর এই সময়ের কথা প্রকাশ পেয়েছে ডাক্তারি পত্রিকা ‘অসুখ বিসুখ’-এ। লিখেছেন কিছু গল্প-কবিতাও। ‘ক্যান্সার মানে মৃত্যু নয়, প্রমাণ করতে চাই আমি।’ এই উত্তরণকে সম্মান জানিয়ে আইসিসিআর-এ আয়োজিত হয়েছে শিল্পীর একক প্রদর্শনী। উদ্বোধন হল ১৪ সেপ্টেম্বর, চলবে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (১১-৭টা)। সঙ্গে থাকছে ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা। শিল্পী এখন বলতেই পারেন ‘জীবনে প্রচুর আনন্দ পেয়েছি, সেই আনন্দই আমাকে এগিয়ে নিয়ে যায়।’ |
|
|
|
|
|
|