আইআইটির অধ্যাপকদের উদ্ভাবন কাজে লাগিয়ে লাভের আশা দেখছেন উত্তরবঙ্গ ও অসমের ক্ষুদ্র চা চাষিরা। খড়্গপুরে কৃষি ও খাদ্যপ্রযুক্তি বিভাগের একটি প্রকল্প তৈরি করেছে এমন এক যন্ত্র, যাতে অল্প খরচে, কম জায়গায় কাঁচা চা পাতা থেকে তৈরি করা যায় ভাল মানের সিটিসি চা। বৃহস্পতিবার এই যন্ত্র সেই উৎপাদন ইউনিট ঘুরে দেখল ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠনের (কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, সংক্ষেপে ‘সিস্টা’) এক প্রতিনিধি দল।
চা পর্ষদের আর্থিক সহায়তায় এই প্রকল্পের কাজ, জানালেন এই প্রজেক্টের মুখ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক বিজয়চন্দ্র ঘোষ। তিনি বলেন, “প্রথাগত চা প্রসেসিং-এর যন্ত্রের তুলনায় কম খরচে, কম জায়গা নিয়ে, কম শক্তি খরচ করেই এই ইউনিটে উৎকৃষ্ট মানের চা প্রস্তুত করা যাবে।”
কাঁচা চা পাতা গাছ থেকে তোলার পরে পৃথক তিনটি ধাপের মধ্য দিয়ে তাকে গুঁড়ো করে তৈরি হয় সিটিসি চা। নতুন যন্ত্রে একটিই ধাপে, এবং কম সময়ে সিটিসি পদ্ধতিতে চা তৈরি করা যাচ্ছে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ মাইতি বলেন, “ছোট জায়গাতেও কাঁচা পাতা থেকে চা তৈরি করা যাচ্ছে বলে ক্ষুদ্র চা চাষিদের সুবিধা হবে।” |
আইআইটিতে ইউনিটটি ঘুরে দেখে ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠনের প্রেসিডেন্ট বিজয় চক্রবর্তী বলেন, “আমরা খুশি। এই ইউনিট করতে পারলে অনেকগুলো সমস্যার সমাধান হবে।” তিনি জানান, কাঁচা পাতা থেকে চা প্রস্তুত করার পরিকাঠামো না থাকায় ছোট চা চাষিদের কম দামে বড় কারখানাগুলিকে চা পাতা বিক্রি করে দিতে হয়। কাঁচা পাতার দাম ওঠানামা করায় প্রায়ই ক্ষতি হয়। এই যন্ত্রের ফলে ছোট চা চাষিরা নিজেরাই চা তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতে পারবে, তাই লাভ থাকবে বেশি। “তবে প্রাথমিক খরচ ২০-২৫ লক্ষ টাকা। চা পর্ষদের তরফে চাষিদের যাতে কিছুটা আর্থিক সাহায্য করা হয়, তার আবেদন জানাব,” বলেন তিনি।
সিস্টা-র তথ্য অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গের চার জেলায় ক্ষুদ্র চা চাষির সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এই ইউনিট চালু হলে তাঁরা সকলেই উপকৃত হবেন। অসমের ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠনের সম্পাদক করণা মোহান্ত বললেন, “এই ইউনিটটি দেখে আমরা আশাবাদী। দ্রুত এটির ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে সকলেই উপকৃত হবেন।” |