নতুন ছবির শুটিংয়ে সন্দীপ রায়
শহর থেকে দূরে
প্রায় যেন পিকনিক। চার পাশে গাছগাছালি, ফিল্ম-ইউনিটের লোকজনের গমগমে আওয়াজ, আর তা ছাপিয়ে জেগে উঠেছে বাড়িটা, সে-বাড়িকে ঘিরেই পিকনিক থুড়ি শুটিং। সন্দীপ রায়ের ছবি, ১৯৫৬-য় প্রকাশিত পরশুরামের গল্প— ‘বটেশ্বরের অবদান’। বাড়িটা শুভ গুহঠাকুরতার, শান্তিনিকেতন পূর্বপল্লিতে, একদা সত্যজিতের ‘আগন্তুক’-এর শুটিং হয়েছিল এখানে। ‘ভয় ছিল, আগে যখন বাবার শুটিংয়ে এসেছি ঠিক তেমন ভাবে পাব কি না বাড়িটাকে, কুড়ি বছর কেটে গিয়েছে তো... লোকেশন দেখতে এসে সে ভয় কাটল।’ সন্দীপের কথার পিঠে এসে পড়ে এ-ছবিতে বাড়িটা কত জরুরি, ‘পরশুরামের গল্পটা ড্রইংরুম-স্টোরি, প্রথমত সেটাকে এ কালের করে তোলা, তার পর তাকে ঘরের বাইরে টেনে আনা, সে জন্যেই এ-বাড়িটা বাছা, এর চার পাশটা এত সুন্দর সবুজ। বটেশ্বর সিকদার বিখ্যাত লেখক তো, তার সঙ্গে কত রকমের লোকজন দেখা করতে আসছেন, কথাবার্তা বলছেন। ফলে ভিস্যুয়াল-এর মজাটা এখানে জোরদার করতে চাইছি, যাতে সংলাপ শোনার একঘেয়েমি না পেয়ে বসে দর্শককে।’
ছবি: হীরক সেন
সহমত সিনেমাটোগ্রাফার শীর্ষ রায়ও: ‘এমন ভাবে আলো করার চেষ্টা করছি যাতে ইমেজগুলো বাস্তবতার নুয়্যান্স তৈরি করতে পারে।’ শিল্প-নির্দেশক মানিক ভট্টাচার্য এমন সাজিয়েছেন বাড়িটাকে (ডান দিকে) যাতে সেটা একটা চরিত্র হয়ে ওঠে ছবিতে। পরান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বটেশ্বরের চরিত্রটি নিয়ে বলছিলেন, ‘জনপ্রিয় সাহিত্যিক। ছাপার অক্ষরে যখন নাম বেরোয় আর পাঠকেরা পড়ে আপ্লুত হয়, তখন তার মধ্যে খোয়া খোয়া দম্ভ যেন বাসা বাঁধে, অন্য ভাবে কথা বলার একটা মেজাজও তৈরি হয়। এটাকে তুলে আনার চেষ্টা করছি অভিনয়ে।’ পরান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয় করলেই আলাদা একটা ‘কেমিস্ট্রি’ টের পান শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়: ‘যেখানে ভূতের ভয়-এর পর বাবুদার (সন্দীপ রায়) এ-ছবিতেও আবার আমাদের একসঙ্গে অভিনয়ের দৃশ্যগুলো যে জমছে তা টের পাচ্ছি শট চলার সময়ে ইউনিটের লোকজনের রিঅ্যাকশন-এ।’ সঙ্গের ছবিতে সহাস্য কৌতুকে পরান সন্দীপ শাশ্বত-র সঙ্গে পিছনে উঁকি দিচ্ছেন শুভ্রজিৎ দত্ত: ‘আমার চরিত্রটা এমন একটা অদ্ভুত সমস্যায় পড়ে যা সাধারণত বাস্তব জীবনে চোখে পড়ে না, তাই ছোট হলেও চরিত্রটা চ্যালেঞ্জিং।’

সৌমিত্রর ছবি
আগে কথা, না আগে ছবি, এটাই মনে আসে প্রথমে সৌমিত্রর ছবিগুলো দেখলে। কথা নিয়ে ও কাটাকুটি করে, আঁকিবুকি কাটে, সেখান থেকেই ওর ছবি তৈরি হয়ে যায়। আরও নানা রকম আঁকে, ভালই লাগে বেশ দেখতে। এত ছবি ও আঁকল কখন!— মৃণাল সেনের স্বরে বিস্ময়। আইসিসিআর, দ্য বেঙ্গল ও স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া-র যৌথ উদ্যোগে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিত্রকলা-প্রদর্শনী ‘ফর্মস উইদিন’-এর উদ্বোধন করবেন মৃণাল সেন, আইসিসিআর-এর অবনীন্দ্রনাথ গ্যালারিতে। প্রদর্শনী ১৩-১৮, ১১-৭টা। কিউরেটর জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য জানালেন, সৌমিত্রর ছবি সম্পর্কে তাঁকে ওয়াকিবহাল করেন যোগেন চৌধুরী। ‘জীবনের কত মুখ ও মুহূর্ত ছবি হয়ে ফোটে সৌমিত্রদার স্কেচ কিংবা আঁকায়’, মনে হয়েছে যোগেনের। আর রবীন মণ্ডলের মতে, ‘দস্তুরমতো মৌলিক সৌমিত্রর সৃষ্টি।’ এঁরা দু’জনে সৌমিত্রর ছবির বই ও ওয়েবসাইট উন্মোচন করবেন। শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সৌমিত্রর ছবি ‘সম্পর্কের এক চমৎকার পাঠ তৈরি করে যেন।’ আর যাঁর ছবি নিয়ে এত কাণ্ড তাঁর বড় কুণ্ঠা, ‘যখন আর কিছুই করার থাকে না, তখন খেয়ালের ঠেলায় কত কিছু এঁকে ফেলি। তিন দশক বা তারও আগে থেকে এ অভ্যেস। যত ছবি পাওয়া গেছে তার তিনগুণ হারিয়ে গেছে।’ সঙ্গে তাঁর আত্মপ্রতিকৃতি, সেখানে লেখা ‘যার প্রতিকৃতি সে তো আমি নয় আমার বয়স’।

প্রাণবন্ত
ছবিতে ইতিহাসচর্চা। স্থাপত্য-ঐতিহাসিক অ্যান্ড্রিয়াস ফোলওয়াসেনের জন্ম ১৯৪১-এ জার্মানিতে। ওঁর ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ভারতীয় স্থাপত্যের নানা ঐতিহ্য: লালকেল্লা, তাজ, যন্তরমন্তর, হুমায়ুনের সমাধি, মাদুরাই মন্দির, মাউন্ট আবু, বা গুলবর্গা মসজিদ (সঙ্গের ছবি)। অনেকগুলি ছবির বই ওঁর ঝুলিতে। কলকাতায় ওঁর ছবির প্রথম প্রদর্শনী ‘লিভিং আর্কিটেকচার’-এর উদ্বোধন হল শনিবার সিগাল প্রদর্শনশালায়। আয়োজনে তসবির। চলবে রবি ও ছুটির দিন বাদে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, (২-৮টা)।

স্মরণ
উৎপল দত্তের ‘কল্লোল’-এর ‘শার্দুল সিং’ খ্যাত শেখর চট্টোপাধ্যায় (১৯২৪-১৯৯০) ছিলেন থিয়েটার কমিউনের কর্ণধার, যাদের বিখ্যাত প্রযোজনা ‘পন্তু লাহা’। পেশাদার মঞ্চে এবং চলচ্চিত্রে (বিশেষ করে ‘ভুবন সোম’) দীর্ঘকাল অভিনয় করেছেন। পরিচালনাও করেছেন ‘বসুন্ধরা’ চলচ্চিত্র। ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৬টায় জীবনানন্দ সভাঘরে ‘শৈলিক’ নাট্যসংস্থার আয়োজন ‘শেখর চট্টোপাধ্যায় স্মারক আলোচনা’, বিষয়: গ্রুপ থিয়েটার ও অর্থনীতি, আছে স্মৃতিচারণ, নাটক-পাঠ ও গান। এ দিকে ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায় জীবনানন্দ সভাঘরেই ‘আলোর তাপস’ তাপস সেনের ৯০তম জন্মদিনে তাপস সেন স্মারক বক্তৃতা দেবেন বিভাস চক্রবর্তী, আয়োজনে বেলঘরিয়া আনন্দ সভা। ১৩ সেপ্টেম্বর ৩৭ বছরে পড়বে সন্দর্ভ নাট্যগোষ্ঠী। নিজেদের নাটক নিয়ে সন্দর্ভের নাট্যোৎসব ১৩-১৪ সেপ্টেম্বর, অ্যাকাডেমিতে। ১৩ তারিখে ছোটদের ‘মুড়কির হাঁড়ি’, আর ১৪ তারিখ দুপুর ৩টে / সন্ধে ৬-৪৫-এ নতুন নাটক ‘সিংহাসন’, ক্ষমতায় থাকা আর ক্ষমতা হারানোর অন্ধকার কিছু মুহূর্ত নিয়ে ইতিহাসের প্রচ্ছদে আদ্যোপান্ত একটি সমকালীন রাজনৈতিক নাটক। রচনা-নির্দেশনা সৌমিত্র বসু।

ওড়িশি
ওড়িশি নাচকে জনপ্রিয় করতে সত্তর দশকে কলকাতায় এসেছিলেন মুরলীধর মাঝি। পরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। উদয়শঙ্কর ইন্ডিয়ান কালচার সেন্টার, বিড়লা আকাদেমি-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জন্ম ১৯৪৫-এ ওড়িশায়। গ্রামেই প্রথম প্রশিক্ষণ। পরে ‘নৃত্যাচার্য’ উপাধি-সহ নানা সম্মান পান। সম্প্রতি প্রয়াত এই শিল্পীকে জ্ঞান মঞ্চে কেলুচরণ মহাপাত্র, সংযুক্তা পাণিগ্রাহী-র সঙ্গে শ্রদ্ধা জানাল ‘ওড়িশি ডান্সার্স ফোরাম’। অন্য দিকে ওড়িশি নৃত্যশিল্পী সুতপা তালুকদার গুরু কেলুচরণের কাছে শেখা বিশেষ কিছু নৃত্যভঙ্গি প্রকাশ করেছেন ডিভিডিতে, তাঁর ‘গুরুকুল’ থেকে। দু’দশকেরও বেশি তিনি কেলুচরণের কাছে ওড়িশির প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। আগে ভি বালসারার সঙ্গীতে সেই শিক্ষাকেই ভিত্তি করে তৈরি করেন নতুন নৃত্যশৈলী ‘বেদনৃত্য’।

প্রস্তর যুগ
১৮৬৩ সালে ভারতের মাটিতে প্রস্তর যুগের প্রথম নিদর্শনটি আবিষ্কার করেছিলেন স্যর রবার্ট ব্রুস ফুট। সেই হিসেবে এ বছর ভারতে প্রাগিতিহাস চর্চার ১৫০ বছর পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষে ১১-১৩ সেপ্টেম্বর একটি সেমিনার ও কর্মশালা আয়োজন করছে কলকাতার জাতীয় সংগ্রহালয়। বুধবার আশুতোষ শতবার্ষিকী প্রেক্ষাগৃহে ব্রুস ফুটের অবদান সম্পর্কে উদ্বোধনী বক্তৃতা দেবেন পুণের ডেকান কলেজের এমেরিটাস অধ্যাপক কে পাধাইয়া। ইউনিভার্সিটি অব অক্সটার থেকে আসছেন প্রস্তরযুগ বিশেষজ্ঞ ব্রুস ব্র্যাডলি। সভাপতিত্ব করবেন গৌতম সেনগুপ্ত। কর্মশালায় প্রস্তর যুগের উপকরণ হাতে-কলমে তৈরি করতে শিখবেন আগ্রহীরা। সমগ্র অনুষ্ঠান সহযোগিতায় ব্রিটিশ কাউন্সিল।

বাইরে ফেরা
বছর কুড়ি আগের কলকাতা। সেই কলকাতায় একটি দক্ষিণী কন্যার লড়াই, ঘরে-বাইরে। সংবাদপত্রের অফিসে জটিল কর্মজীবনের নানা ওঠাপড়া, আকস্মিক বড় মাপের রদবদলে বাধ্য হয়ে বাইরের বড় পৃথিবীটার দিকে চোখ ফেরানো। বাড়িতে রক্ষণশীল পুরুষতন্ত্রের নিরন্তর চাপ বিয়ে করার জন্য, না হলে জীবন বৃথা। বার বার মায়াকে সেজেগুজে বসতে হয় পাত্রপক্ষের সামনে। মায়া বেরোতে চায় এই খাঁচা থেকে। মায়া নিজের জীবনটাকে নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। শেষে সত্যিই বেরিয়ে আসে মায়া, কিন্তু পরিপার্শ্বের সঙ্গে সে-ও বদলায় বইকী। নয়াদিল্লির প্যালিম্পসেস্ট থেকে সদ্য প্রকাশিত এই উপন্যাস মাই আয়রন উইংস লিখেছেন সুভাষিণী দিনেশ, কলকাতায় পড়াশোনা করার পর তিনি নিজেও অনেক দিন সাংবাদিকতা করেছেন, এখন চেন্নাইয়ে এশিয়ান কলেজ অব জার্নালিজম-এর শিক্ষক।

ছাপাই ছবি
পর্তুগিজদের হাত ধরেই মুদ্রণ-পদ্ধতি এসেছিল এ দেশে। উনিশ শতকের মাঝামাঝি ঔপনিবেশিক শাসনে তার বিস্তার ঘটে। সেই সঙ্গে স্বদেশি ছাপচিত্র পদ্ধতি তৈরি করতে থাকে নিজস্ব আঙ্গিক। তবু এ দেশের নিজস্ব ছাপচিত্র ঘরানা পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হতে অপেক্ষা করতে হয়েছিল গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, নন্দলাল বসু পর্যন্ত। ভারতে ছাপাই ছবির এই বিচিত্র বিবর্তনের ইতিহাস এ বার কলকাতায়। দ্য হ্যারিংটন স্ট্রিট আর্ট সেন্টারে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলছে দিল্লি আর্ট গ্যালারি-র সেই প্রদর্শনী। কিউরেটর পলা সেনগুপ্ত। ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের বাজার প্রিন্ট থেকে শুরু করে গগনেন্দ্রনাথ, রমেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, হরেন দাস এবং আরও পরে বিংশ শতকে সোমনাথ হোর, জ্যোতি ভট্ট, কৃষ্ণ রেড্ডি প্রমুখর কাজ নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনীটি। প্রায় দেড়শো ছবির সঙ্গে আছে এ শহরের প্রদীপ বথরা সংগ্রহের ছবিও। এই সঙ্গেই প্রকাশিত হল দু’খণ্ডে দ্য প্রিন্টেড পিকচার্স: ফোর সেঞ্চুরিজ অব ইন্ডিয়ান প্রিন্টমেকিং (সম্পা: কিশোর সিংহ, দিল্লি আর্ট গ্যালারি)। সঙ্গের ছবি প্রদর্শনী থেকে।

সমকালীন
নব্বইয়ের দশকে বাংলা ছবির বাঁকবদল ঋতুপর্ণ ঘোষকে ঘিরে। ছবির বিষয়ের সঙ্গে কোথাও নিজেকে মেলাতে পারায় বাংলা ছবির দর্শক আবার হলমুখী হলেন। তাঁর দেখানো পথেই উঠে এসেছেন আরও অনেক নবীন পরিচালক। সদ্য প্রয়াত ঋতুপর্ণের স্মরণে এ বার দিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার-এর মাসব্যাপী আয়োজন ‘ঋতুপর্ণ-পরবর্তী বাংলা সিনেমা’। দেখানো হবে ‘অটোগ্রাফ’, ‘আমি আদু’, ‘অলীক সুখ’, ‘আবর্ত, ‘অবশেষে’, ‘অংশুমানের ছবি’, ‘নোবেল চোর’, এবং ‘শব্দ’। আলোচনায় থাকবেন রত্নোত্তমা সেনগুপ্ত, সঙ্গে পরিচালকরা। এ দিকে কলকাতায় অন্য রকম আয়োজন গোর্কিসদনে ১০-১৪ সেপ্টেম্বর। টলস্টয়ের সাহিত্য থেকে তৈরি একগুচ্ছ ছবির উৎসব, তাঁর ১৮৫তম জন্মবর্ষ উপলক্ষে। আয়োজক আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাব।

নীললোহিত
গত বছর সন্ধিপুজোর মাঝেই চলে গিয়েছেন তিনি, মর্ত্যের ‘পারিজাত’ ছেড়ে। কিন্তু বাঙালির হৃদয়ে গমগম করে বেঁচে আছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার ছিল তাঁর ৮০-তম জন্মদিন। সকাল থেকেই কলকাতার ‘পারিজাত’-এ তাই কবি, লেখক, শিল্পীদের ভিড়। এই প্রথম ছিলেন না তিনি। ঘরের কোণে তাঁর সেই বিশেষ চেয়ারটা ছিল শূন্য। তবু না থেকেও জন্মদিনের সকালে পুরো ঘর জুড়েই ছিলেন ‘নীরা’র স্রষ্টা। স্মৃতিচারণ, কবিতাপাঠ, প্রিয় রবীন্দ্রগানে সেই সকাল জুড়ে শুধুই সুনীল। সে দিন সন্ধেতে রবীন্দ্রসদনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ‘বুধসন্ধ্যা’। কথায়-কবিতায় সুনীলকে স্মরণ করলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়, নবনীতা দেবসেন, গৌতম ঘোষ, শংকরলাল ভট্টাচার্য, শ্রীজাত প্রমুখ। সুনীল না থাকলেও ‘কৃত্তিবাস’ আছে। গতকালই ছিল বাংলা কবিতার বহু বাঁক বদলের কারিগর ও সাক্ষী এই পত্রিকাটির ষাটতম জন্মদিন। এ দিন সকালে ওই পত্রিকার নবতম সংখ্যাটি প্রকাশ পেল সুনীল-জায়া স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় ভারতীয় সংগ্রহালয়ের সভাগৃহে। উদ্বোধন করেন সাহিত্য অকাদেমির সভাপতি হিন্দি কবি বিশ্বনাথ প্রসাদ তিওয়ারি। উপস্থিত ছিলেন সাহিত্য অকাদেমির সচিব কে শ্রীনিবাস রাও। সন্ধেবেলা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা দেন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। উপস্থিত ছিলেন শঙ্খ ঘোষ। দিনভর কবিতা পড়লেন নবনীতা দেবসেন, দিব্যেন্দু পালিত, প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায়, শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতো বহু প্রবীণ ও নবীন কৃত্তিবাসী।

ছায়াসঙ্গী
পার্ক সার্কাস ময়দানে যুব উৎসবের মহড়া চলছে। নেতাজিনগর স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক, ভারতীয় গণনাট্য সংঘের ভূপতি নন্দী হাত ধরে নিয়ে গিয়ে বললেন, ‘ভূপেন, এই ছেলেটাকে তোমায় দিলাম’। বিশ্বাসই হচ্ছিল না সামনে স্বয়ং ভূপেন হাজরিকা বসে। ১৯৫৭-এর কথা, বলছিলেন লেখক গায়ক সুরকার মিন্টু মুখোপাধ্যায়। গাইবার পর জড়িয়ে ধরলেন ভূপেনদা, এই ছিল শুরু। তিন বছর পর শিল্পীর তালিমে ওঁর সহকারী হয়ে কাজ করলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অসমিয়া ছবি ‘শকুন্তলা’য়। শুরু হল গান লেখা ও সুর করা। মিন্টুবাবু হলেন ভূপেনদার ছায়াসঙ্গী, পরিবারের এক জন। ‘কলকাতা খুব প্রিয় ছিল ভূপেনদার। ল-পড়ার সময় থাকতেন হার্ডিঞ্জ হস্টেলে। কলকাতা আকাশবাণীতে অসমিয়া খবরও পড়েছেন।’ স্মৃতির ঝাঁপি উজাড় করেন শিল্পী। শেষ সময়ে বলেছিলেন ‘আমার অস্থি তুমিই বিসর্জন দিও’।
‘এখন আমার জীবন জুড়ে শুধু ভূপেনদার স্মৃতি’, বলছিলেন মিন্টু। ওঁর লেখা ও সুরে দেড় শতাধিক গান। ভূপেনবাবুর গবেষণার বিষয় ছিল ‘অনুন্নত দেশে শিক্ষা প্রসারের মাধ্যম’। পরে তা থেকেই অনুবাদ করে ১১টি বই লিখেছেন মিন্টুবাবু। বহু অসমিয়া বইয়ের অনুবাদক তিনি। লিখেছেন উপন্যাসও। এখন নিজের সংস্থা ‘এসথেটিক’ থেকে নতুন প্রজন্মের জন্য গান লিখে অ্যালবাম প্রকাশ করছেন। ‘পথের পাঁচালি’র ওপর নৃত্যনাট্যের স্ক্রিপ্ট করেছিলেন। সত্যজিৎ রায় দেখে দেওয়ার পর বহু দিন ধরে তা মঞ্চস্থ হয়। তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন ডি লিট, সম্মান জানিয়েছে অসম সাহিত্য সভা। আজ ভূপেন হাজরিকার ৮৭তম জন্মদিনে মিন্টুবাবুকে সংবর্ধনা দেবে মালিগাঁও রেলওয়ে কেন্দ্র।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.